হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য
শরীয়তপুরের বিচারক ও দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে তলব
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৩, ০৮:৩১ পিএম
একটি ছিনতাই মামলার আসামিদের শারীরিক নির্যাতন করে আহত করার অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে শরীয়তপুরের দুই পুলিশ কর্মকর্র্তাকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। এরা হচ্ছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) রাসেল মনির ও সদ্য প্রত্যাহার হওয়া পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান।
একই সঙ্গে উচ্চ আদালতের জামিনাদেশ থাকার পরও আসামিদের জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে তলব করা হয়েছে। ১৬ জুলাই তাদের সশীররে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে।
ওই আসামিদের আইনজীবী বিষয়টি আদালতে উপস্থাপনের পর বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
পাশাপাশি পুলিশের মহাপরিদর্শক ও শরীয়তপুরের পুলিশ সুপারকে এ বিষয়ে অবস্থান ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুজিবুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
২৩ মে দ্রুত বিচার আইনে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় একটি ছিনতাই মামলা হয়। মামলায় শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা আহম্মেদ চোকদারকান্দি এলাকার সাদ্দাম চোকদার, বকুল চোকদারসহ নয়জনকে আসামি করা হয়। সেই মামলায় ২৯ মে সাদ্দাম, বকুল, সাইদুল উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিনে নেন। জামিনে আসার পর ৩০ মে রাতে তারা এ মামলার আরেক আসামি আনোয়ারকে নিয়ে ঢাকা কেরানীগঞ্জ সাদ্দামের বন্ধু আলমগীর চোকদারের বাসায় যান।
ওই দিন রাতে তথ্য পেয়ে সেই বাসায় হাজির হন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও ওসি মোস্তাফিজুর রহমান, জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল ব্যাপারীসহ ১০-১২ পুলিশ সদস্য।
আইনজীবী মুজিবুর রহমান জানান, ২৯ মে তিন আসামিকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন দেন হাইকোর্ট। ৩০ মে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়, মারধর করা হয়। এ সময় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল ব্যাপারী উপস্থিত ছিলেন। পরদিন থানায় নিয়ে এসে আসামিদের বাবার কাছ থেকে ৭২ লাখ টাকার চেক লিখে নেয় এবং নওডোবা বাজারে দুটি দোকান লিখে দিতে বলে।
এরপরও পুলিশ ক্ষান্ত হয়নি। আসামিরা যখন পানি চায় তখন এক আসামির প্রস্রাব আরেকজনকে খাওয়ায়। পরে ১ জুন তাদের চিফ জুডিশিয়াল কোর্টে উপস্থাপন করা হয়। উচ্চ আদালতের আদেশ থাকায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উচিত ছিল সঙ্গে সঙ্গে জামিন দেওয়া। এটা না করে তিনি কারাগারে পাঠিয়েছেন। এ ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনসহ বিষয়টি নজরে আনার পর দুই পুলিশ অফিসার এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে তলব করেন হাইকোর্ট।
ভুক্তভোগীরা ও তাদের বড় ভাই আবু জাফর ঠান্ডু জেলা এসপির কাছে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মোহাম্মদ বদিউজ্জামানকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।