লাইসেন্সবিহীন পরিদর্শককে সিঙ্গাপুরে পাঠাতে চায় বেবিচক, মন্ত্রণালয়ের না
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৩, ০৯:৪৮ পিএম
ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফরিদুজ্জামান। ফাইল ছবি
সিঙ্গাপুরের এয়ারবাসের প্রশিক্ষণ সেন্টারের সক্ষমতা পরিদর্শনে যাচ্ছেন বেবিচকের এক লাইসেন্সবিহীন পরিদর্শক। তার নাম ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফরিদুজ্জামান। কিন্তু বাদ সেধেছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। বেবিচকের প্রস্তাব সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে তারা। উলটো তার বিরুদ্ধে বিমানের একটি ফ্লাইটে লাইসেন্স ছাড়া ক্যাপ্টেনের আসনে বসার তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রণালয় বলেছে, ৭৩ বছর বয়সি ফরিদুজ্জামানের পাইলট লাইসেন্স নেই। কিছুদিন আগে নিয়ন্ত্রণ সংস্থার প্রতিনিধি হয়ে নিয়ম ভাঙলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উলটো সিঙ্গাপুরে এয়ারবাসের প্রশিক্ষণ সেন্টারের সক্ষমতা পরিদর্শনের জন্য তাকে সেখানে পাঠাতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বেবিচকের এই সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি। এই অবস্থায় মন্ত্রণালয় বেবিচকের প্রস্তাব ফেরত পাঠিয়ে দেয়।
জানা গেছে, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এয়ারবাসের উড়োজাহাজ কিনছে। এই দুই এয়ারলাইনের কর্মীদের সিঙ্গাপুরে প্রশিক্ষণ দেবে এয়ারবাস। সিঙ্গাপুরে এয়ারবাসের প্রশিক্ষণ সেন্টারের সক্ষমতা পরিদর্শনের জন্য ফ্লাইট অপারেশনাল ইন্সপেক্টর ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফরিদুজ্জামানকে মনোনীত করেছে বেবিচক। তার নাম প্রস্তাব করে বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি।
বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব রোকসিন্দা ফারহানার সই করা চিঠিতে বলা হয়েছে, ১৫ জানুয়ারি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট জেদ্দা থেকে ঢাকা আসার পথে ভারতের সীমানা অতিক্রম করার সময় উড়োজাহাজের অভ্যন্তরে একজন যাত্রী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। ওই মুহূর্তে ফ্লাইট পরিদর্শনের দায়িত্বে থাকা বেবিচকের অপারেশন্স ইন্সপেক্টর ফরিদুজ্জামানের বৈধ লাইসেন্স না থাকার পরও পাইলটের আসনে বসেন। উড়োজাহাজের সুরক্ষার ক্ষেত্রে এটি বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করেছে। এ ধরনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা তা উল্লেখ ছাড়াই সরকারি কাজে বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তাব যথাযথ হয়নি বলে প্রতীয়মান হয়। বেবিচকের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো তদন্ত হয়েছে কিনা সেটিও জানতে চাওয়া হয়েছে ওই চিঠিতে।
জানা গেছে, চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি স্থানীয় সময়ে জেদ্দা থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি ৩৩৬ ফ্লাইটে পাইলট হিসাবে ক্যাপ্টেন ইরফানুল হকের ইনিশিয়াল রুট চেক (আইআরসি) ছিল। বিমানের একটি ৭৭৭-৩০০ ইআর উড়োজাহাজে ফ্লাইটটি পরিচালিত হয়। ফ্লাইটে পাইলট ইন কমান্ড (পিআইসি) এবং ট্রেইনি এক্সামিনার ছিলেন ক্যাপ্টেন দিলদার আহমেদ (জি-৫২৪৫৯)। সেই ফ্লাইটে পর্যবেক্ষণের জন্য ছিলেন বেবিচকের মোহাম্মদ ফরিদুজ্জামান। তবে ৭৩ বছর বয়সি ক্যাপ্টেন ফরিদুজ্জামানের পাইলট লাইসেন্স নেই। ক্যাপ্টেন ইরফানুল হককে ককপিটে রেখে ক্রু রেস্ট বাংকে চলে যান দিলদার আহমেদ। সে সময়ে ককপিটে পাইলটের আসনে বসেন ক্যাপ্টেন ফরিদুজ্জামান। সেই ফ্লাইটে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এক যাত্রী। পরে ঢাকায় আসার পর তার মৃত্যু হয়।