Logo
Logo
×

জাতীয়

জাতীয় রবীন্দ্র সঙ্গীত উৎসব ১২-১৩ মে, সম্মাননা পাচ্ছেন এনামুল কবীর-লিলি ইসলাম

Icon

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ মে ২০২৩, ১১:২৫ পিএম

জাতীয় রবীন্দ্র সঙ্গীত উৎসব ১২-১৩ মে, সম্মাননা পাচ্ছেন এনামুল কবীর-লিলি ইসলাম

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান পুরুষ। রবীন্দ্রনাথের গান আবহমানকালের বাঙালি সংস্কৃতির মূলধারাকে বিকশিত ও সমৃদ্ধ করে চলেছে। এ দেশের সংস্কৃতিমনা মানুষের কাছে রবীন্দ্রসঙ্গীত হয়ে উঠেছে জাতীয় সংস্কৃতি বিকাশের প্রধানতম অবলম্বন ও প্রাতঃস্মরণীয়। সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূর করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশবাসী; বিশেষ করে নতুন প্রজন্মকে ঋদ্ধ করতে হাজার বছরের সংস্কৃতির ধারাকে আরও বেগবান ও বিকশিত করে তুলতে এবং অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছে বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা।

বিশ্বকবির ১৬২তম রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে ৩৩ বছরের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আগামী ১২-১৩ মে দুই দিনের জাতীয় রবীন্দ্র সঙ্গীত উৎসবের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা। এবারকার জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত উৎসবের প্রতিপাদ্য ‘করিস নে লাজ, করিস নে ভয়,/আপনাকে তুই করে নে জয়...।’

বরাবরের মতো এবারো থাকছে গুণীজন সম্মাননা। এবারের উৎসবে দুই গুণীজনকে বিশেষ সম্মাননা দেয়া হবে বাংলাদেশ রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী সংস্থার পক্ষ থেকে। সম্মাননা পাচ্ছেন কিংবদন্তি গিটার শিল্পী এনামুল কবীর ও প্রখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী লিলি ইসলাম।

এ আয়োজনকে ঘিরে সংস্থার নির্বাহী সভাপতি আমিনা আহমেদের বাসায় প্রতিদিন সন্ধ্যায় চলছে মহড়া। সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শিল্পী পীযূষ বড়ুয়ার নেতৃত্বে এতে অংশ নিচ্ছেন শতাধিক শিল্পী। সংস্থার সভাপতি শিল্পী তপন মাহমুদ দেশের বাইরে অবস্থান করায় ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে শিল্পীদের ভার্চুয়ালি প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দিচ্ছেন।

উদ্বোধনী দিনে এই দুই গুণীর হাতে সম্মাননা তুলে দেবেন উৎসবের উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এমপি। সভাপতিত্ব করবেন সংস্থার নির্বাহী সভাপতি আমিনা আহমেদ।

বর্ণাঢ্য এই উৎসব সামনে রেখে শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে উৎসব ও সংস্থার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন সংস্থার নির্বাহী সভাপতি আমিনা আহমেদ। অস্ট্রেলিয়া থেকে ভার্চুয়ালি অংশ নেন সংস্থার সভাপতি ও কণ্ঠশিল্পী তপন মাহমুদ। সংস্থার বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সবিস্তারে তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন  সাধারণ সম্পাদক ও কণ্ঠশিল্পী পীযূষ বড়ুয়া।

সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী ও সংস্থার আজীবন সদস্য রফিকুল আলম। অন্যান্যের মধ্যে তানজিমা তমা, অনিকেত আচার্য, কনক খান, আবদুর রশিদ, রিফাত জামাল, শর্মিলা চক্রবর্তী, আহমাদ মায়া আখতারী, জাফর আহমেদ, নির্ঝর চৌধুরীসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য রাখেন নির্বাহী সভাপতি আমিনা আহমেদ। তিনি বলেন, শুদ্ধ সংস্কৃতি বিকাশের পথে নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা যেন আমাদের বারবার রবীন্দ্রনাথের কাছেই ফিরিয়ে নিয়ে যায়। রবিঠাকুর প্রতিক্ষণ আমাদের জাতীয় এবং বাঙালি প্রাত্যহিক জীবনের জন্য প্রাসঙ্গিক।

তিনি আরও বলেন, আমরা সুস্থ সঙ্গীত বিকাশে ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য পঙ্কিলতা মুক্ত একটি সুন্দর সংস্কৃতিবান্ধব আগামী গড়ার সংগ্রামে লড়াই করে যেতে চাই। বাংলাদেশ  রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে সেই লক্ষ্যেই কাজ করেই যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

সভাপতি তপন মাহমুদ ভার্চুয়াল বক্তৃতাতে বলেন, সংস্কৃতিমনা মানুষকে প্রতিনিয়ত উদ্দীপ্ত রাখতে এই সংস্থা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতে করে যাবে।

তিনি বলেন, রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে দুই দিনে উৎসবে শুদ্ধ, সুস্থ ও অশ্লীলতামুক্ত সুরলোক সৈকত ভাসিয়ে দেবে আমাদের নিবেদিতপ্রাণ শিল্পীরা।

কণ্ঠশিল্পী রফিকুল আলম বলেন, রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থার সঙ্গে আমার আত্মিক সম্পর্ক সেই সূচনা লগ্ন থেকেই। এই সংগঠন যে উদ্দেশে গঠিত হয়েছে তার সঙ্গে আমার আদর্শের মিল রয়েছে। রবীন্দ্রসঙ্গীত আমাদের সদা জাগ্রত রাখে ও প্রেরণা দায়ী। বছর বছর সঙ্গীত উৎসবের মাধ্যমে এই সংস্থা যেভাবে সংস্কৃতিমনা মানুষকে জাগিয়ে রেখেছে আশা করি তা অব্যাহত থাকবে। মনে রাখতে হবে যে গোষ্ঠী বা গোষ্ঠীসমূহ দেশের সংস্কৃতিমনা মানুষকে নানাভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে সঙ্গীত চর্চার মধ্য দিয়ে ওই অপশক্তিকে প্রতিহত করতে হবে।

সংস্থার সভাপতি ও কণ্ঠশিল্পী তপন মাহমুদ বলেন, সূচনা লগ্ন থেকেই রবীন্দ্রসঙ্গীত সংস্থা যে মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে তা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। যতই বাধা বিপত্তি আসুক না কেন এই সংস্থা তার মহৎ উদ্দেশ্য থেকে বিন্দুমাত্র সরে আসবে না।

সংস্থার সাধারণ সম্পাদক পীযুষ বড়ুয়া বলেন, বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা ফাউন্ডেশনের নামে সংগঠনটি বাংলাদেশ সরকারের জয়েন্ট স্টক কোম্পানির অ্যান্ড ফার্মস অধীনে নিবন্ধিত সংগঠন।  সরকারি ও আর্থিক যোগাযোগ ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে সংগঠনটি ১৯৮৮ সালের ২৭ মে প্রতিষ্ঠিত ঐতিহাসিক ও জনপ্রিয় নাম ‘বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা’ হিসেবেই পরিচালিত হবে।

তিনি জানান, ‘বাংলাদেশব্যাপী ফাউন্ডেশনের মূল কার্যক্রম বিস্তৃত থাকবে। এই ফাউন্ডেশন-রবীন্দ্রসঙ্গীত  শিল্পীদের সক্রিয় অংশগ্রহণে বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থার ব্যানারে রাজধানী ঢাকায় (মূল সংগঠন/শাখা) এবং বাংলাদেশের প্রতি বিভাগ ও জেলায় একটি করে বিভাগীয়/ জেলা শাখা গঠন, ঢাকা মহানগরের জন্য একটি আলাদা মহানগর শাখা গঠন এবং দেশের বাইরে কোনো দেশ বা সে দেশের রাজধানী বা যে কোনো শহর ভিত্তিক শাখা গঠন করতে পারবে যা ফাউন্ডেশনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পরিচালিত। এর বাইরে কোনো ব্যক্তি বা তথাকথিত সংগঠন এই সংস্থার সুনাম ব্যবহার করে অনুমতি ব্যতিরেকে একই নামে কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করে সেটি হবে অবৈধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম