Logo
Logo
×

জাতীয়

উপাত্ত সুরক্ষা আইনের অপপ্রয়োগের আশঙ্কা রয়েছে: টিআইবি

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৩, ১০:১০ পিএম

উপাত্ত সুরক্ষা আইনের অপপ্রয়োগের আশঙ্কা রয়েছে: টিআইবি

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো প্রস্তাবিত উপাত্ত সুরক্ষা আইনেরও অপব্যবহারের শঙ্কা রয়েছে। আইনটি নিশ্চিতভাবে জনগণের বাকস্বাধীনতা ও গোপনীয়তা অধিকার ক্ষুণ করবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজের হয়রানির যে অভিজ্ঞতা হয়েছে নতুন আইনেও সেটি হবে না এমন নিশ্চয়তা নেই। 

ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে সোমবার উপাত্ত সুরক্ষা আইন (খসড়া) নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ কথা বলেন। 

সংবাদ সম্মেলনে, আইনটির খসড়ার কার্যকর সংশোধন জরুরি। না হলে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে আমরা একটি নজরদারির সমাজে রূপান্তরিত হব। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. মো. ইফতেখারুজ্জামান ও সংস্থাটির পরিচালক শেখ মঞ্জুর-ই-আলম।
 
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকারের মত বা অবস্থানের বিরুদ্ধে গেলে যে কোনো সংস্থার সার্ভারে প্রবেশ, উপাত্ত মুছে ফেলা এবং উপাত্ত প্রক্রিয়া করার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটবে। ফলে ব্যক্তির ওপর সরকারের নজরদারির ক্ষমতা, এর অপপ্রয়োগ এবং মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ আরও জোরদার হবে। 

তিনি বলেন, আমাদের মূল উদ্বেগের কয়েকটি জায়গা রয়েছে। আইনটির মূল ভাবনা ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। কিন্তু বর্তমানে সে অবস্থান থেকে সরে গিয়ে ব্যক্তিগত তথ্যের নিয়ন্ত্রণমূলক আইন হতে যাচ্ছে। আইনটির খসড়া যেভাবে করা হয়েছে তা উদ্বেগজনক।
 
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আইনে একটি বিশেষ সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ব্যতিক্রম’। সেখানে বেশ কিছু সরকারি কর্তৃপক্ষকে মোটা দাগে পছন্দ অনুযায়ী ব্যতিক্রম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ কোনো প্রতিষ্ঠান চাইলে বলতে পারে, এ আইন তার জন্য প্রযোজ্য নয়। কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি থাকলে কেবল ব্যতিক্রম ব্যাপারটা থাকতে পারে। 

তিনি বলেন, আইনটির কাজ হবে ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা দেওয়া। আর এ ইস্যুতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা থাকতে হবে সম্পূর্ণ সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সরকারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হবে, কিন্তু সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকতে পারবে না। 

তিনি আরও বলেন, আইনটিও সরকার নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার হবে। ইতোমধ্যে এমন আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এটি সংশোধন না হলে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে আমরা একটি নজরদারির সমাজে রূপান্তরিত হব।

শেখ মঞ্জুর-ই-আলম বলেন, ১৪ মার্চ উপাত্ত সুরক্ষা আইন-২০২৩ এর খসড়া অংশীজনের মতামতের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এরপর ২৮ মার্চ ৪১টি সুনির্দিষ্ট সুপারিশ পাঠায় টিআইবি। পরে টিআইবির কয়েকটি সুপারিশ মেনে নেয় সরকার। কিন্তু মূল উদ্বেগের জায়গাগুলো রয়েই গেছে। 

তিনি বলেন, খসড়ায় তিন ধরনের উপাত্তের কথা বলা হয়েছে। সংবেদনশীল উপাত্ত, ব্যবহারকারী সৃষ্ট উপাত্ত ও শ্রেণিবদ্ধ উপাত্ত, যা দেশের সীমানার ভেতরে মজুতের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি উপাত্ত স্থানান্তরের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আরোপের কথা বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে দেশের সীমানার ভেতরে উপাত্ত মজুত করার বিধান রেখে কার্যত উপাত্তের ওপর নজরদারির এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা সরকারের হাতে রাখা হয়েছে। 

আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, কোনো কোম্পানি এ আইনের অধীন কোনো অপরাধ করলে, কোম্পানির মালিক, প্রধান নির্বাহী, পরিচালক, ম্যানেজার, সচিব, অংশীদার বা অন্য কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী বা প্রতিনিধি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে। তবে সেই অপরাধ অজ্ঞাতসারে হয়েছে অথবা অপরাধ রোধের যথাসাধ্য চেষ্টা করা হয়েছে তা প্রমাণ করতে কেউ সক্ষম হলে তাকে দণ্ড দেওয়া হবে না। 


 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম