ভবনটি ছিল ঝুঁকিপূর্ণ, ১০বার নোটিস দিয়েছি: ফায়ার সার্ভিস ডিজি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৩, ০৬:৪২ পিএম
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে রাজধানীর বঙ্গবাজার পুড়ে ছাই। বঙ্গবাজারের ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। বারবার সতর্ক করলেও গায়ে মাখেননি ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার দুপুরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর এক ব্রিফিংয়ে এই দাবি করেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন।
তিনি জানান, চার বছর আগেই ঝুঁকির কথা ব্যবসায়ীদের জানানো হয়েছিল। একাধিকবার নোটিশ দিলেও তারা সতর্ক হননি।
‘আজকে যে ভবনে আগুন লেগেছে, সেটি আমরা ২০১৯ সালে ১০ এপ্রিল ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেছি। শুধু ঝুঁকি নয় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বারবার সতর্কও করেছি। ১০বার নোটিশ দিয়েছি। ফায়ার সার্ভিসের যা দায়িত্ব তা পালন করেছে। ’
দেশের সর্ববৃহৎ কাপড়ের আড়ত হিসেবে পরিচিত বঙ্গবাজারে মঙ্গলবার ভোর ৬টা ১০ মিনিটে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিটের পাশাপাশি সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর কয়েকটি দল প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় বেলা ১২টা ৩৬ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
তবে এরই মধ্যে বঙ্গবাজার মার্কেট, মহানগর মার্কেট, আদর্শ মার্কেট ও গুলিস্তান মার্কেট পুরোপুরি ভষ্মীভূত হয়। পাশের এনেক্সকো টাওয়ার এবং আরও কিছু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয় আগুনে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন ভোর থেকেই সেখানে অবস্থান করে বাহিনীর কর্মীদের কাজ তদারকি করছিলেন।
দুপুরের দিকে ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ২০১৯ সালে বঙ্গমার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ বলে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে নোটিস টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপরেও তারা ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। তারা ছাড়াও অন্য কোনো সংস্থা বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি।
আগুন কীভাবে লাগল জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি এখন বলা সম্ভব নয়। এই ঘটনায় পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। প্রতিবেদন পাওয়ার পরে আগুন লাগার কারণ জানা যাবে।
ফায়ার সার্ভিস যখন বঙ্গবাজারে প্রাণপাত করে চেষ্টা করছিল, সে সয় বঙ্গবাজারের উল্টো পাশে বাহিনীটির সদরদপ্তরে হামলা করে কিছু মানুষ। এ নিয়েও দুঃখ প্রকাশ করেন মাইন উদ্দিন।
বলেন, আমরা তো আপনাদের জীবন রক্ষায় শুরু থেকেই সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি, এরপরও আমাদের ওপর হামলা কেন?
তিনি বলেন, আমরা এই ঘটনায় অত্যন্ত দুঃখিত ও মর্মাহত যে এত বড় একটা আগুন এখানে লেগে গেল। আমি মর্মাহত আরেকটি কারণে।
মাইন উদ্দিন বলেন, ফায়ার সার্ভিস সব সময় জনগণের সেবায় জীবন দেয়। শুধু আমরা আগুন নির্বাপন করি না, জনগণের সেবায় আমরা জীবন দিই। কিন্তু আজকে আমাদের সদরদপ্তরে জনগণ ঢুকে আমার গাড়ি ভাঙচুর করেছে, আমার হেডকোয়ার্টারে নতুন যে ভবন হয়েছে, সেটি ভাঙচুর করেছে। আমি খুবই মর্মাহত, আপনাদের জন্য আমরা জীবন দিই, সেই আপনারা আমাদের ওপর হামলা করলেন।
এসময় মোবাইল ফোনে একটি ভিডিও দেখিয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, 'আপনার ভিডিওটা দেখতে হবে। আপনি এই ভিডিওটি দেখুন, আমি নিজে করেছি। কোন জায়গা দিয়ে আমরা ফায়ার সার্ভিস কাজ করব? কোথায়, কীভাবে?'। এছাড়াও প্রবল বাতাসের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।