অগ্নিনিরাপত্তা বা ফায়ার সেফটি আইন না মানা ভবনগুলোর বিরুদ্ধে শুরু হচ্ছে যৌথ অভিযান। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের সঙ্গে মিলে আগামী সপ্তাহ থেকেই রাজধানীতে এ অভিযান চালাবে ফায়ার সার্ভিস। 

বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন। রাজধানীর ফুলবাড়িয়ায় সংস্থাটির সদর দপ্তরে তুরস্কে ভ‚মিকম্পে উদ্ধার কাজ শেষে ফায়ার সার্ভিস প্রতিনিধি দলের দেশে ফেরা উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ডিজি বলেন, যে কোনো কিছু বাস্তবায়ন করতে কিছুটা সময় লাগে। আগামী সপ্তাহে আপনারা এর বাস্তবায়ন দেখতে পারবেন। প্রথমে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যৌথভাবে আমরা অভিযানে যাব। 

যেসব ভবনে ফায়ার সেফটি আইন মানা হয়নি সে বিষয় আমরা দেখবো। আর অন্য বিষয়গুলো দেখবে নির্ধারিত ডিপার্টমেন্ট।

বাংলাদেশের ভ‚মিকম্প ঝুঁকির বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের ডিজি বলেন, দেশে ভ‚মিকম্প হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করেছেন। আমাদের ১৪ হাজার কর্মীর সবাই প্রশিক্ষিত। তাদের প্রতিনিয়ত প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছি, এটা চলমান প্রক্রিয়া। 

ডিজি বলেন, আমাদের উন্নত যন্ত্রপাতিও আছে। তবে বড় দুর্যোগের ক্ষেত্রে এটি অবশ্যই যথেষ্ট না। তাই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে যারা আমাদের সহযোগী সংস্থা রয়েছে, তাদের সঙ্গে কাজ করছি। এমন কোনো ঘটনা যদি ঘটে আমাদের প্রস্তুতির জন্য প্রশিক্ষণ ও মহড়াগুলো অব্যাহত রাখছি। 

প্রশিক্ষিত কর্মীর পাশাপাশি আমাদের ৬২ হাজার ভলান্টিয়ার তৈরির টার্গেট ছিল। এরমধ্যে ৫০ হাজার ভলান্টিয়ার তৈরি করেছি। তারা আবার অন্যদের প্রশিক্ষিত করছেন।

দুর্যোগ হলে সরু রাস্তায় উদ্ধার কর্মীদের প্রবেশে সমস্যা নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ডিজি বলেন, ঢাকায় ভ‚মিকম্পের মতো বড় দুর্যোগ হলে আমরা ঢুকতে পারবো কি-না সেটা বিষয় না। আমাদের ঢুকতেই হবে। এজন্যই প্রশিক্ষণ। তাই এমন কিছু হলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

ডিজি বলেন, আমরা চাই না এমন কোনো ঘটনা ঘটুক, কিন্তু প্রস্তুতি নিতে হবে। যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের সম্মিলিত চেষ্টা করতে হবে। আমাদের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি আছে, যেটা নাই তার জন্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলছি। 

বিল্ডিং কোড অনুযায়ী যেসব ভবন হয়নি, আমরা সেগুলো শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কাজ করছি। এ বিষয়ে সিটি করপোরেশন ও রাজউকের সঙ্গে কাজ করছি। আমার যে এখতিয়ার আছে সিটি করপোরেশন ও রাজউকের সঙ্গে যৌথভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি।

পুরান ঢাকায় অবৈধ কেমিক্যালের দোকানের বিষয়ে তিনি বলেন, আমার কাজ অগ্নিনির্বাপণ করা, কারখানা সরানোর কাজ আমার নয়। নিমতলী ও চুড়িহাট্টা অগ্নিকাণ্ডের পর ওই এলাকায় এমন কোনো দোকানের লাইসেন্স দিচ্ছি না; যা আছে সেগুলো অবৈধভাবে হচ্ছে।

তুরস্কে উদ্ধার অভিযান শেষে ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি দলের দেশে ফেরা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের প্রতিনিধি দল উদ্ধার অভিযান শেষ করে দেশে ফিরেছে। তুরস্কে তাদের কাজ করার সুযোগের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। 

আজকের দিনে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশের পতাকা সুনামের সঙ্গে উড়ছে। প্রথমবারের মতো ফায়ার সার্ভিস দেশের বাইরে উদ্ধার অভিযানে গেছে।