
প্রিন্ট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:০১ পিএম
জুলাই আন্দোলনে গ্রেফতার: সৌদি থেকে ফিরলেন ১০ প্রবাসী

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪৭ পিএম

আরও পড়ুন
জুলাই আন্দোলনের সময় সৌদি আরবে গ্রেফতার ১০ প্রবাসী বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে সৌদি এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
গত বছরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হলে সৌদি আরবে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা আনন্দ ও প্রীতিভোজের আয়োজন করেন। সেখান থেকে ১২ জনকে গ্রেফতার করে সৌদি কর্তৃপক্ষ। এরপর আট মাস জেলখানায় বন্দিজীবন শেষে ১০ জনকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে সৌদি সরকার। পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়াসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে জটিলতা থাকায় দুজন পরে ফিরবেন বলে জানা গেছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবাসী ব্যবসায়ী ইয়াকুব বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় আমরা প্রায় আট মাস পর বন্দিদশা থেকে মুক্ত হতে পেরেছি। বাংলাদেশে শহিদদের আত্মার শান্তি কামনা করে গত বছরের ৯ আগস্ট আমরা ঘরোয়া আয়োজন করেছিলাম। সৌদি সরকার জানায়, কোনো বাংলাদেশি মিছিল, পোস্টারিং করলে তাদের ধরে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু আমরা জানতাম না- ঘরোয়াভাবে আয়োজন করাও অন্যায়।
কুমিল্লার জামিল হোসেন জানান, আমরা যা করেছি ঘরোয়াভাবে করেছি। সৌদি আরবের আইন লঙ্ঘন করিনি। আওয়ামী লীগের লোকজনের ইন্ধনে সৌদি সরকার আমাদের গ্রেফতার করে। আমরা যারা ফিরে এসেছি- সবাই ঠিকাদারি ব্যবসায়ী। আমরা বিএনপির সমর্থক। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আবেদনÑআমাদের সৌদি নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে যেন সে দেশে আবার যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়। আমাদের লাখ লাখ টাকার জিনিসপত্র সেখানে রয়ে গেছে।
দেশে ফেরা ১০ প্রবাসী কর্মীকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাগত জানানো হয়। বিমানে অবতরণের পর তাদের হাতে ফুল দিয়ে ও মিষ্টিমুখ করিয়ে পরিবার ও সরকারের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, প্রবাসীদের নিরাপত্তা এবং তাদের অধিকার সুরক্ষিত রাখার জন্য বাংলাদেশ সরকার সবসময় প্রাধান্য দিয়ে কাজ করে। তাদের ফেরানোর বিষয়টি দীর্ঘদিনের আলোচনার ফলস্বরূপ সম্ভব হয়েছে। সৌদি সরকারের পক্ষ থেকেও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ আইন ও মানবাধিকারবিষয়ক আশ্বাস পাওয়া গেছে।
এক প্রবাসী শ্রমিকের বাবা বলেন, আমরা খুবই কষ্ট পেয়েছিলাম যখন আমাদের সন্তানদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু এখন তারা দেশে ফিরতে পারায় আমরা অনেক শান্তি অনুভব করছি। সৌদি সরকারের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ যে, তারা মানবিকতার দৃষ্টিতে আমাদের সন্তানদের ফিরিয়ে দিয়েছে।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সরকার তাদের পুনর্বাসন এবং সহায়তার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। তারা কর্মসংস্থান খুঁজে পায় এবং তাদের পরিবারের সঙ্গে সুন্দর জীবনযাপন করতে পারে।