কর্মশালায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা
বাজেটে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকার দিতে হবে

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৯:৩৬ পিএম

বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর ৭১ শতাংশের জন্য দায়ী উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ। তবে এ খাতে অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ মোট স্বাস্থ্য বাজেটের মাত্র ৪.২ শতাংশ, যা খুবই অপ্রতুল। ক্রমবর্ধমান উচ্চ রক্তচাপ সংকট মোকাবিলায় আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি।
রাজধানীর বিএমএ ভবনে ১৮-১৯ মার্চ (মঙ্গলবার ও বুধবার) অনুষ্ঠিত ‘উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের অগ্রগতি এবং করণীয়’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী সাংবাদিক কর্মশালায় এই দাবি জানানো হয়।
গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) সহযোগিতায় প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এই কর্মশালার আয়োজন করে। কর্মশালায় প্রিন্ট, টেলিভিশন এবং অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত ২৬ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।
কর্মশালায় জানানো হয়, বর্তমানে দেশের জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে, যা বিভিন্ন ধরনের অসংক্রামক রোগের অন্যতম কারণ। উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ মোকাবিলায় ইতোমধ্যে তৃণমূল পর্যায়ে বিনামূল্যে এ রোগের ওষুধ প্রদানের কাজ শুরু হলেও উদ্বেগজনক এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশের সব কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ নিশ্চিত করা জরুরি এবং এজন্য টেকসই অর্থায়ন প্রয়োজন। উল্লেখ্য, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২৪ সালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার অংশ হিসেবে অসংক্রামক রোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ অঙ্গীকারবদ্ধ হলেও এ খাতে অর্থ বরাদ্দ এবং বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যবহারে সাফল্য দেখাতে পারেনি। প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগ মোকাবিলায় ওষুধের সরবরাহ নিয়মিত রাখার বিষয়টিকেও প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
কর্মশালায় স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মো. এনামুল হক বলেন, ‘অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধির পাশাপাশি বরাদ্দকৃত বাজেটের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা জরুরি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, ‘অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, স্ক্রিনিং কার্যক্রম জোরদার করা এবং সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় ওষুধের সরবরাহ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। এজন্য বাজেট বৃদ্ধি অনিবার্য।’
জিএইচএআই বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস বলেন, ‘সব কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ নিশ্চিত করার মাধ্যমে অসংক্রামক রোগের প্রকোপ অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব।’
কর্মশালায় আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের প্রোগ্রাম ম্যানেজার (উপসচিব) ডা. মোহাম্মদ শওকত হোসেন খান, কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ারের (সিবিএইচসি) প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. গীতা রানী দেবী, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. মারুফ হক খান, বাংলাদেশ ফার্স্ট পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোর্শেদ নোমান, ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্টস স্কুল অব পাবলিক হেলথের ডেপুটি রিসার্চ কোঅর্ডিনেটর ডা. তন্ময় সরকার এবং প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের।
কর্মশালায় বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপনা তুলে ধরেন প্রজ্ঞার পরিচালক মো. শাহেদুল আলম এবং কোঅর্ডিনেটর সাদিয়া গালিবা প্রভা।