Logo
Logo
×

অন্যান্য

ধর্ষণ আইন সংস্কার জোট

নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা রোধে আইনের প্রয়োগ ও সংস্কারের আহ্বান

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৫, ১০:১৬ পিএম

নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা রোধে আইনের প্রয়োগ ও সংস্কারের আহ্বান

নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে বিদ্যমান আইনি কাঠামোর কার্যকর প্রয়োগ ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শের মাধ্যমে আইনের বাস্তবসম্মত সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছে ধর্ষণ আইন সংস্কার জোট। 

এক বিবৃতিতে জোটটি বলেছে, সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা, যৌন হয়রানি, অপহরণ, শারীরিক নির্যাতন এবং অনলাইন সহিংসতার ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে। এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত বিচার নিশ্চিতের দাবিতে আয়োজিত প্রতিবাদে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি এবং প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনায় ধর্ষণ আইন সংস্কার জোট গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। জোটের মতে, বর্তমানে নারী ও শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং যৌন সহিংসতায় ভুক্তভোগী ব্যক্তির কার্যকর আইনি প্রতিকার নিশ্চিতে বিদ্যমান আইনি ব্যবস্থার যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

জোটটি বলছে, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ধর্ষণ মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া প্রণয়ন করেছে। এ প্রসঙ্গে ধর্ষণ আইন সংস্কার জোট মনে করে, ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতা প্রতিরোধের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ও টেকসই সমাধান প্রয়োজন, সেই লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধুমাত্র আইন সংশোধন বা প্রণয়নই নয়; বরং ভুক্তভোগীদের প্রতি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন যেমন, ভুক্তভোগী নারীর চরিত্রহনন ও তার ওপর দোষারোপ বন্ধ করা, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দ্রুত ও ন্যায়সঙ্গত বিচার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।

ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার দৃষ্টান্তমূলক প্রতিরোধ নিশ্চিত করতে দোষীদের আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি ধর্ষণের সংজ্ঞা, ভুক্তভোগীদের জন্য মানসিক ও আইনি সহায়তা, পুনর্বাসন এবং ক্ষতিপূরণ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিদ্যমান আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা প্রয়োজন বলে মনে করে জোটটি। 

ধর্ষণ আইন সংস্কার জোট আরও বলছে, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিতে বিদ্যমান আইনি কাঠামোর পর্যালোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, পাশাপাশি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩), শিশু আইন ২০১৩, দণ্ডবিধি ১৮৬০, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ এবং নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য দূরীকরণ সংক্রান্ত জাতিসংঘ কনভেনশন (সিডও)-এর আলোকে বিদ্যমান আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

ধর্ষণ আইন সংস্কার জোট মনে করে, যৌন সহিংসতা প্রতিরোধ ও ভুক্তভোগীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নীতিনির্ধারকদের আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। তাই জোট সংশ্লিষ্ট অংশীজন, মানবাধিকার কর্মী এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শের মাধ্যমে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) আইন, ২০০০ যথাযথভাবে সংস্কারের আহ্বান জানায় জোটটি। একইসঙ্গে, অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা এবং ভুক্তভোগীদের মানসিক ও আইনি সহায়তা প্রদান, ক্ষতিপূরণ এবং পুনর্বাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করার দাবি জানায়।

প্রসঙ্গত, ধর্ষণ আইন সংস্কার জোট ১৭টি সংগঠন এর সমন্বয়ে গঠিত এ জোটের মধ্যে রয়েছে। সেগুলো হলো- আইন ও সালিশ কেন্দ্র, আইসিডিডিআর, বি, উইক্যান, উইমেন ফর উইমেন, একশন এইড বাংলাদেশ, এসিড সার্ভাইভারস ফাউন্ডেশন, ইয়াং উইমেন্স খ্রিষ্টিয়ান এসোসিয়েশন-ওয়াইডাব্লিউসিএ, কেয়ার বাংলাদেশ, জাস্টিস ফর অল নাও, উইমেন উইথ ডিজ্যাবিলিটিজ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ডাব্লিউডিডিএফ, নারীপক্ষ, বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, ব্র্যাক, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (সচিবালয়), মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম