ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকদের সংবাদ সম্মেলন
দ্রুত ড্যাপের বিধিমালা সংশোধনের দাবি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১৭ পিএম
বিগত সরকারের তৈরি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) মাস্টারপ্ল্যান ড্যাপের বিধিমালা দ্রুততম সময়ে সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন ঢাকা শহরের ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকরা।
রোববার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ড্যাপের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ঢাকা শহরের ভূমি মালিকরা সংবাদ সম্মেলনে সরকারের কাছে এটাসহ ৭ দফা দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন ড্যাপের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ঢাকা শহরের ভূমি মালিকদের সমন্বয়ক প্রফেসর ড. দেওয়ান এমএ সাজ্জাদ। তিনি জানান, বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ও নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির লক্ষ্যে স্বৈরাচারী দলের দোসর ও রাজউকের কতিপয় দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তার ছত্রছায়ায় ঢাকা শহরের বহুবিধ সমস্যাকে পাশ কাটিয়ে একমাত্র ভবন নির্মাণের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে ড্যাপ ২০২২-২০৩৫ প্রণয়ন করা হয়। যা ঢাকা শহরের নাগরিকদের মধ্যে বিশাল বৈষম্য সৃষ্টি করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ড্যাপে ঢাকা শহরের মাত্র ২০ শতাংশ পরিকল্পিত এরিয়ায় সুউচ্চ ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা রেখে অবশিষ্ট ৮০ শতাংশ এলাকাকে অপরিকল্পিত এরিয়ার ট্যাগ দিয়ে ভবনের উচ্চতা ও আয়তন হ্রাস করে দেওয়া হয়েছে; যাতে ঢাকা শহরের প্রকৃত ভূমি মালিকরা কোনোভাবেই ভবন নির্মাণ করতে না পারে। যার ফলে আমরা নগরবাসী নতুন করে কোনো ভবন নির্মাণ করতে গেলে দেখতে পাচ্ছি যে, একই পরিমাণ জমিতে আগে যেখানে ১০ তলা ভবন হতো এবং যে আয়তন পাওয়া যেত এখন সেখানে ৫ তলা ভবন ও অর্ধেক আয়তন পাওয়া যাচ্ছে। এতে ভূমি মালিকরা ব্যাপক ক্ষতি ও চরম বৈষম্যের সম্মুখীন হচ্ছে। ঢাকা শহরের প্রকৃত ভূমি মালিকদের ঢাকা শহরের বাইরে বের করে দেওয়ারও সূক্ষ্ম পরিকল্পনা করা হয়েছে এখানে।
এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, একই পরিমাণ জমিতে আগে ১০ তলা হলে এখন ৫ তলা হবে, এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। যদি এটা করতেই হয় তাহলে আগের নির্মিত ১০ তলা বা ততোধিক ভবন ভেঙে সব ৫ তলায় রূপান্তরিত করতে হবে, অতঃপর ড্যাপ বাস্তবায়নে অগ্রসর হতে হবে।
সাত দফা দাবি : সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করা সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে ঢাকা শহরের সব এলাকায় ২০০৮ সালের ইমারত নির্মাণ বিধিমালা মোতাবেক ভবন নির্মাণের অনুমতি দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করতে হবে। ২০০৮-এর বিধি অনুসারে রাস্তা অনুযায়ী যেখানে যত তলা পাওয়া যেত, সেখানে তত তলা অনুমোদন প্রদান। ঢাকা শহরের সব রাস্তাকে কমপক্ষে ২০ ফিটে উন্নীত করতে হবে। জলাশয়, খাল-বিল, নদী-নালা ভরাট বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ। ধানী জমিতে ভবন নির্মাণের অনুমতি প্রদান বন্ধ করা এবং নির্মাণ অনুমোদন সহজীকরণ করাসহ রাজউকের গ্রাহক হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকদের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বীর শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয়। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশের সব বৈষম্যের অবসান করে আগামী দিনে বাংলাদেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ ও বৈষম্যমুক্ত দেশে রূপান্তরিত করবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিক সংগঠনের কো-সমন্বয়ক মো. হুমায়ন কবির শিমুল, কেএম এজাজ মাহমুদ, সৈয়দা আফসারুন নাহার, মো. তানভিরুল ইসলাম ও মো. আবুল হোসেন প্রমুখ।