কপ-২৯ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন
শিল্পোন্নত দেশের চাপানো কৌশলে জলবায়ু ন্যায্যতা অর্জন ব্যাহত
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৯ পিএম
বৈশ্বিক জলবায়ু সমঝোতা সম্মেলনে (কপ-২৯) শিল্পোন্নত দেশগুলোর চাপিয়ে দেওয়া নীতি-কৌশল জলবায়ু ন্যায্যতা অর্জন ব্যাহত হয়েছে। এর কারণ গত সম্মেলনের ‘গ্লোবাল স্টকটেক’-এর বিষয়ে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোকে কিভাবে বাস্তবায়ন হবে সে বিষয়ে রাষ্ট্রগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি। এটিকে কপ-৩০-এর জন্য ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। অথচ এটি অবিলম্বে চূড়ান্ত হওয়া প্রয়োজন ছিল।
‘কপ-২৯ এর ফলাফল : শিল্পোন্নত বিশ্বের চাপিয়ে দেওয়া নব্য-উদারনৈতিক নীতি কৌশলে জলবায়ু ন্যায্যতা অর্জন ব্যাহত’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা এসব কথা বলেছেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে বুধবার ‘সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ (সিপিআরডি) নেতৃত্বাধীন ৪২টি নাগরিক সংগঠন এবং উন্নয়ন সহযোগী সংগঠনের জোট ‘ক্লাইমেট জাস্টিস অ্যালায়েন্স-বাংলাদেশ’ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনের প্রধান বক্তা ছিলেন সিপিআরডি’র নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা। তিনি বলেন, এবারের সম্মেলনে জলবায়ু অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রার বার্ষিক হার ২০৩৫ সালের মধ্যে ৩০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম এবং এর সময়সীমা দীর্ঘ। এছাড়া এটি অনুদান নাকি ঋণ হবে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়নি। অর্থ প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সব পক্ষকে অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হলেও উন্নত দেশগুলোর ওপর একক দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ফলে শিল্পোন্নত বিশ্বকে তাদের দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পথ তৈরি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অর্থায়নের এ সিদ্ধান্তে বেসরকারি খাতকে গুরুত্বপূর্ণ অবদানকারী হিসাবে সামনে আনার গোপন আকাঙ্ক্ষা লুকিয়ে রয়েছে। এটি একটি মুনাফা তৈরির নতুন উপকরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উদ্যোগগুলো ঋণ এবং অন্যান্য নব্যউদারনৈতিক আর্থিক উপকরণের উত্তরোত্তর বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত্ব করার ঝুঁকিতে ফেলেছে। ফলে এর মধ্য দিয়ে জলবায়ু ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার পথ নিশ্চিতভাবে রুদ্ধ হবে।
সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক জিয়াউল হক বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার জন্য প্রয়োজন বৈশ্বিক মোট কার্বন উদগিরণ দ্রুত নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা। কিন্ত সমঝোতা সম্মেলন-২৯ থেকে আমরা আশাব্যঞ্জক ফলাফল পাইনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিভাগের অধ্যাপক ড. সূর্বণ বড়ুয়া জলবায়ু অর্থায়নের বিষয়ে উন্নত বিশ্বের শুভঙ্করের ফাঁকি তৈরি করার প্রবণতার তীব্র সমালোচনা করেন। অন্য বক্তারা কপ-২৯-এর মূল অর্জনগুলো তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তৃতা করেন- কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মনীষ কুমার আগরওয়াল দ্য ক্লাইমেট ওয়াচের নির্বাহী পরিচালক শামসুদ্দিন ইলিয়াস। সিপিআরডির সহকারী রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি ম্যানেজার মো. শেখ নূর আতায়া রাব্বি ও গবেষষক সানজিয়া সামস একটি যৌথ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
চলতি নভেম্বর আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে বৈশ্বিক জলবায়ু সমঝোতা সম্মেলন (কপ-২৯) অনুষ্ঠিত হয়। এবারের সম্মেলনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি ধনী দেশ ২০৩৫ সালের মধ্যে জলবায়ু তহবিলে বছরে ৩০০ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিতে সম্মত হয়েছে।