Logo
Logo
×

অন্যান্য

এবার ঢাকায় মহাসমাবেশের ডাক সাদপন্থিদের

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন ও রমনা (ঢাকা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৪ পিএম

এবার ঢাকায় মহাসমাবেশের ডাক সাদপন্থিদের

জুবায়েরপন্থিদের পর এবার রাজধানী ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছেন তাবলিগ জামাতের একাংশ দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা। আগামী ৭ ডিসেম্বর মহাসমাবেশ করবেন তারা।

এর আগে লাখো মুসল্লি­র জমায়েত নিয়ে কাকরাইল মসজিদে শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় শেষে এ ঘোষণা দেন সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা। নামাজ শেষে মোনাজাতের পর অবস্থান ছেড়ে নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যান মুসল্লি­রা।

এদিকে সাদপন্থিদের জমায়েতকে ঘিরে কাকরাইল মসজিদ ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

শুক্রবার ওয়াক্ত শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে নামাজ শুরু হয়ে সাড়ে ১২টায় শেষ হয়। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই সাদপন্থিরা কাকরাইল মসজিদ এলাকায় আসতে শুরু করেন। আস্তে আস্তে তাদের জমায়েত বড় হতে থাকে। দুপুর ১২টার আগে লাখো মুসল্লি­তে পরিপূর্ণ হয়ে যায় কাকরাইল, বিজয়নগর, হাইকোর্ট, মৎস্য ভবন, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটসহ আশপাশের এলাকা। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে কাকরাইল মসজিদের পাশে রমনা ও প্রধান উপদেষ্টার বাস ভবনে যাওয়ার পথটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

আগে থেকেই তাবলিগ জামাতের মাওলানা সাদ ও জুবায়েরপন্থিদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সাদপন্থিরা শুক্রবার সকালে কাকরাইলের মারকাজ মসজিদে প্রবেশ করে সেখানে অবস্থান নেবেন বলে আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছিলেন। সেই অনুযায়ী সকাল ৮টার দিকে তারা মসজিদে প্রবেশ করেন। এদিন ভোর থেকে কাকরাইল মসজিদ এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। মোতায়েন করা হয়েছিল বাড়তি পুলিশ। তাবলিগ জামাতের দুপক্ষের বিরোধের পর থেকে মারকাজ মসজিদের নিয়ম ছিল দুই সপ্তাহ থাকবেন মাওলানা সাদপন্থিরা আর চার সপ্তাহ থাকবেন মাওলানা জুবায়েরপন্থিরা। সে নিয়ম অনুযায়ী শুক্রবার সাদপন্থিরা কাকরাইল মসজিদে অবস্থান নেন। রমনা জোনের ডিসি মো. মাসুদ আলম যুগান্তরকে বলেন, এখন দুই সপ্তাহ অবস্থান করবেন সাদপন্থিরা।

সম্প্রতি কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা ময়দান কেন্দ্র করে তাবলিগের দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব তীব্রতর হচ্ছে। দুই গ্রুপই পালটাপালটি বক্তব্য দিচ্ছেন। সাদপন্থিরা বলেছিলেন- শুক্রবার তাদের অবস্থানে যদি কেউ বাধা দেয় ও কোনো ঝামেলা হয় এর দায়ভার জুবায়েরপন্থিদের নিতে হবে। নিয়ম অনুযায়ী শুক্রবার সাদপন্থিদের কাকরাইল মসজিদে অবস্থানের কথা থাকলেও কয়েক দিন আগে জুবায়েরপন্থিরা সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, কাকরাইল মসজিদ শুধুমাত্র জুবায়েরপন্থিদের জন্য। এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে মাওলানা সাদপন্থিরা বৃহৎ পরিসরে জুমার নামাজ আদায় ও দোয়ার আয়োজন করেন। সেই সঙ্গে আগামী দুই সপ্তাহ কাকরাইল মসজিদে অবস্থানের জন্য বড় ধরনের জমায়েত করেন। এদিকে কাকরাইল মসজিদে নির্ধারিত অবস্থানের সময় শেষ হওয়ায় মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা সকালে মসজিদের অবস্থান থেকে সরে যান। 

‘সাদ অনুসারীদের এটিই হবে সব থেকে বড় জামাত’- খুতবার বক্তব্যে এমনটাই জানিয়েছিলেন নামাজের ইমাম। পরে নামাজ শেষে মসজিদের মাইকে মুসল্লি­দের অবস্থান ছেড়ে গন্তব্যে চলে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। এ সময় আগামী ৭ ডিসেম্বর বড় মজমার ঘোষণা দিয়ে ইমাম জানান, দেশ-বিদেশের হজরতরা আসবেন সে মজমায়। আলোচনা হবে তাবলিগ জামাতের মেহনত ও সমসাময়িক বিষয়ে। এর আগে এদিন সকালে মাওলানা সাদ ও জুবায়েরপন্থিদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে।

জানা যায়, ২০১৭ সালের নভেম্বরে দু’পক্ষের দ্বন্দ্ব প্রথম প্রকাশ্য রূপ নেয়। সেদিন কাকরাইলে দু’দল কর্মীর মধ্যে হাতাহাতি হয়। চরম বিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় গত ৭ বছর ধরে প্রশাসনের সিদ্ধান্তে কাকরাইল মসজিদের এক অংশে জুবায়েরপন্থিরা চার সপ্তাহ ও সাদপন্থিরা দুই সপ্তাহ করে পর্যায়ক্রমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। তবে মসজিদের অপর অংশ জুবায়েরপন্থিরা ১২ মাসই নিজেদের দখলে রাখেন। সাদপন্থিদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে জুবায়েরপন্থিরা বেশি সুবিধা ভোগ করে আসছেন। টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার মাঠ নিয়েও দুপক্ষের বিরোধ দিনে দিনে তীব্র হচ্ছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম