Logo
Logo
×

অন্যান্য

এইচপিভি টিকা নিয়ে গুজব না ছড়ানোর আহ্বান

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩৯ পিএম

এইচপিভি টিকা নিয়ে গুজব না ছড়ানোর আহ্বান

জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধী ‘হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস’ (এইচপিভি) টিকা নেওয়ার পর সাত জেলায় ২৭১ জন নারী শিক্ষার্থীর মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়া বা অসুস্থ হওয়ার খবর ছড়িয়েছে। তবে এ অসুস্থতা বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সঙ্গে এইচপিভি টিকার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছে সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বিষয়ে গুজব না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবু জাফর। 

রাজধানীর মহাখালীতে বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মিলনায়তনে এইচপিভি টিকা নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যের মহাপরিচালক এ দাবি করেন। স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

ঢাকা : সম্প্রতি সারা দেশে জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধে এইচপিভি টিকা প্রদান কর্মসূচি শুরু করেছে সরকার। গ্যাভি, ইউনিসেফ এবং ডব্লিউএইচও-এর সহায়তায় পরিচালিত এ টিকা কার্যক্রমে সহায়তা করছে। পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির ছাত্রী এবং বিদ্যালয়ের বাইরে থাকা ১০ থেকে ১৪ বছরের কিশোরীরা বিনামূল্যে এইচপিভি টিকা বিনামূল্যে পাচ্ছে। এ কর্মসূচি ঘিরে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় টিকা দেওয়ার সময় আতঙ্কে কিছু শিক্ষার্থী জ্ঞান হারান। এ ধারাবাহিকতায় গত কয়েকদিনে এ টিকা নিয়ে কুমিল্লায় ৩৪, শেরপুরে ৩০, ঝিনাইদহে ২০, দিনাজপুরে ১৭, সিরাজগঞ্জে ১৭, পাবনায় ১৫ এবং বাগেরহাটে ১১ জনসহ সারা দেশে ২৭১ জনের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও অসুস্থবোধ করার মতো উপসর্গ দেখা দেয় বলে গুজব ছড়ায়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর বলেন, বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর অসংখ্য মায়ের মৃত্যু হয় ক্যানসারে। এসব ক্যানসারের মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যানসারের প্রকোপ অনেক। পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বে প্রতিবছর ৬ লাখ ৬০ হাজার নারী ক্যানসার আক্রান্ত হন, তাদের মধ্যে ৫০ ভাগই মারা যান।

ভোলার ঘটনা ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, সেখানে দুজন শিক্ষার্থীকে প্রথমে টিকা দেওয়া হয়। টিকা নেওয়ার পর কিছুটা অসুস্থ অনুভব করলে তাদের একটি কক্ষে নিয়ে শুইয়ে দেওয়া হয়। এ অবস্থা দেখে সেখানকার অন্য শিক্ষার্থীরাও জ্ঞান হারান। তাদের মধ্যে পাঁচজনকে টিকা দেওয়া হয়নি। তাই প্রাথমিকভাবে এটিকে মানসিক সমস্যা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে টিকাসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) সহকারী পরিচালক ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ। এ সময় তিনি জানান, ২৪ অক্টোবর শুরু হওয়া এক ডোজের এ টিকার ক্যাম্পেইন চলবে ১৮ দিন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশে এ টিকাদান কর্মসূচিতে এইচপিভি টিকা-সার্ভারিক্স বেলজিয়ামে উৎপাদিত হয়। বিশ্বের ১৪০টি দেশে এ টিকা ব্যবহƒত হচ্ছে, যার মধ্যে ১৪টি মুসলিম দেশ।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ডা. মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. মো. রিজওয়ানুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসন ডা. এবিএম আবু হানিফসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

ভোলা : বোরহানউদ্দিন উপজেলার বোরহানগঞ্জ জ্ঞানদা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে এইচপিভি টিকা দেওয়ার পর আতঙ্কগ্রস্ত ও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৬২ ছাত্রীর মধ্যে বুধবার সকাল পর্যন্ত ৬০ জন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। সিভিল সার্জন ডা. মো. মনিরুল ইসলাম জানান, ছাত্রীরা একজনকে দেখে অপরজন আতঙ্কগ্রস্ত হয়। দুই বোন ছাড়া সবাই বাড়ি ফিরে গেছে। 

লক্ষ্মীপুর : সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসায় দুপুরে টিকা নিয়ে ১৭ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগে সকাল থেকে ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হয়। অসুস্থদের সবাই ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে। তবে এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক কমলাশীষ রায়।

পুঠিয়া (রাজশাহী) : পুঠিয়ার দৈপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ শিক্ষার্থী সকালে জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধক টিকা নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া ভাড়রা উচ্চ বিদ্যালয়ের আরও এক শিক্ষার্থী এই টিকা নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম