পাহাড় দখলদারদের তালিকা প্রকাশ করুন: আনু মুহাম্মদ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০:১৪ পিএম
পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড় দখলদারদের তালিকা প্রকাশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক শাসন কায়েম এবং জনগণের অধিকার, মর্যাদা ও ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান। বৈঠকের আয়োজন করে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, চট্টগ্রামের সমস্যার পরিপূর্ণ সমাধান করার ক্ষমতা আপনাদের কাছে নেই, সেটা আমরা বুঝি। কিন্তু অনেক কিছুই করতে পারেন। তার মধ্যে চট্টগ্রামের পাহাড়গুলো কাদের দখলে আছে, সেটা প্রকাশ করা; লুটেরা ও বিশাল ব্যবসায়ী গোষ্ঠী কিংবা সামরিক, বেসামরিক, অবসরপ্রাপ্ত বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক ব্যক্তি, এমপি-মন্ত্রী- কাদের নামে পাহাড় আছে, তাদের তালিকা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলের পাহাড় নষ্ট করে পাঁচ তারকা হোটেল বানানোর কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। সেখানে একটা পুঁজিবাদের রূপান্তর হয়েছে। যার মধ্যদিয়ে বড় ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে সেনা শাসনের মাধ্যমে। কারণ, সেনা শাসন থাকলে খবরা-খবর বাইরে যাচ্ছে না। কে কোনটা দখল করল তার কোনো জবাবদিহি নেই, স্বচ্ছতা নেই। পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন বরাদ্দ, উন্নয়ন কর্মসূচি এটার সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ জবাবদিহি চাই। অর্থনৈতিক অবস্থা দুর্নীতির তথ্যের জন্য সরকার একটা শ্বেতপত্র কমিটি করেছেন। সেই শ্বেতপত্র কমিটির মতো পার্বত চট্টগ্রামের উন্নয়নের ক্ষেত্রে কী কী বরাদ্দ গেল, কী কী কর্মসূচি গেল, সেগুলো কীভাবে আছে, কীভাবে ব্যয় হয়েছে- সেটা জানার জন্য শ্বেতপত্র কমিটি চাই। এগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, পার্বত্য এলাকায় গণহত্যার বিচার হয়নি, সেনা শাসন প্রত্যাহার করা, ভূমি সমস্যার সমাধান করা, সাংবিধানিক স্বীকৃতি হয়নি। স্যাটেলার শব্দ নিয়ে অনেকের মধ্যে মানসিক আপত্তি আছে। এটা ’৭৯ সালে জিয়ার আমলে স্যাটেলার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। তার আগে যে বাঙালিরা সেখানে যায়নি তা নয়। আগে যেসব বাঙালি গেছে তাদের স্যাটেলার বলা হয় না। তাদের নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। তারা শান্তিপূর্ণভাবে সহ-অবস্থান করে। সমস্যাটা হলো যখন রাষ্ট্রীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, অন্য জাতিসত্তাকে সংখ্যালঘু করতে হবে এবং বাঙালিকে সংখ্যাগুরু করতে হবে।
বৈঠকে আরও অংশ নেন মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম লালা, ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ূয়া, ডা. হারুনুর রশিদ, মাসুদ রানা, ইউপিডিএফ নেতা মাইকেল চাকমা প্রমুখ।