আসাদুজ্জামান নূরকে জোরালো সমর্থন করে পোস্ট শেহরিনের
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৬ পিএম
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। এর পর শুরু হয় সংস্কারের ধরপাকড়। এর মধ্যে গত রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূরকে মিরপুরের একটি হত্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
তাকে গ্রেফতার করায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সংস্কৃতিকর্মীসহ সাধারণ মানুষের অনেকেই। এবার প্রতিবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়ে শ্বশুর আসাদুজ্জামান নূরের পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন পুত্রবধূ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক কাজলী শেহরিন ইসলাম।
তিনি পোস্টে লিখেছেন— আমি সাধারণত সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যক্তিগত বিষয়ে তেমন কিছু লিখি না। কিন্তু আমরা তো জানি, ব্যক্তিগত বিষয়টি রাজনৈতিক। আমরা ভালো করেই জানি— বাংলাদেশে সবকিছুই রাজনৈতিক। আমরা কি আসাদুজ্জামান নূরকে তার রাজনীতির জন্য, বিশেষ করে ২০১৪ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের অংশ হিসেবে, তার দল ও সরকারকে প্রকাশ্যে প্রশ্ন, সমালোচনা, নিন্দা না করার জন্য এবং তারা যা করেছে তা স্পষ্টভাবে সমর্থন করার জন্য সমালোচনা করতে পারি? হ্যাঁ।
তিনি বলেন, আমি আমার শ্বশুর আসাদুজ্জামান নূরের পাশে থাকব, যতক্ষণ না তিনি নিরপেক্ষ আদালতে দোষী প্রমাণিত হচ্ছেন। আমি জুলাই-আগস্টে সরব ছিলাম। আমি এখন এটি নিয়ে বলছি— সবসময়ই চাইব ন্যায়বিচার হোক।
কাজলী শেহরিন বলেন, আমাদের কি ভুল তথ্য, ভুল-বোঝাবুঝি, সন্দেহ অথবা তার বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থাকতে পারে, যার ফলে সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্য কোথাও ঘৃণামূলক প্রচারণার সৃষ্টি হয়? ঠিক নয়, তবে সম্ভবত হ্যাঁ। একটি ন্যায্যবিচার ব্যবস্থায় প্রমাণ এবং একটি ন্যায্য আইনি প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে তিনি যে অপরাধ করেছেন, তার জন্য কি তাকে অভিযুক্ত করা যেতে পারে? হ্যাঁ।
তিনি বলেন, একজন প্রতিভাবান এবং জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বলে কি তাকে ক্ষমা করা উচিত? না। তিনি এত লোকের জন্য এত ভালো কাজ করেছেন বলে কি তাকে ক্ষমা করা উচিত? দুঃখের বিষয় হলেও না। তাকে (বা অন্য কাউকে) কি এমন অপরাধের জন্য অভিযুক্ত করা যেতে পারে, যার সঙ্গে তার দূরবর্তী সংযোগ নেই, কোনো প্রমাণও নেই? না। এটা খুবই সহজ হিসাব।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ সহযোগী অধ্যাপক বলেন, আমি আমার ছাত্র, আমার জনগণ, আমার দেশের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। জুলাই আন্দোলন এবং পরবর্তীতে গণহত্যায়। কারণ আমি জানতাম যে এটি সঠিক ছিল (আমি আমার শ্বশুরবাড়ি থেকে, তার চোখের সামনেই এ সমর্থন করেছি। তিনি আমাকে বাধা দেননি। শুধু তাই নয়, আমার অধিকার রক্ষা করার জন্য নিজের চেয়ে শক্তিশালীদের বাধা ঠেকিয়েছেন)। সেই নৈতিক শক্তি থেকেই আমি আজ এই পোস্ট করতে পারলাম।
কাজলী শেহরিন বলেন, পরিবর্তনের প্রয়োজন ছিল। পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে। আমাদের সেই পরিবর্তনের জন্য আরও ভালোর জন্য, নিহত, আহত, আঘাতপ্রাপ্ত এবং আমরা যারা বেঁচে আছি, লড়াই করছি; তাদের জন্য কাজ চালিয়ে যেতে হবে। আমি কখনই দ্বিধায় পড়ব না আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে। যতই লোকে বলুক— দেখুন আপনি কী করেছেন, এসবের জন্য লড়াই করেছিলেন? কিছুই পরিবর্তন হয়নি, পরিবারের এসব তার জন্যই হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০১ সাল থেকে আওয়ামী লীগের হয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন তিনি।