ফেনীতে ডায়ালাইসিস বন্ধে চরম ঝুঁকিতে রোগী
দ্রুত ব্যবস্থা নিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নির্দেশ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪২ পিএম
ভয়াবহ বন্যাকবলিত ফেনীতে সরকারি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করে সংস্থাটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, একটি জাতীয় দৈনিকে ‘ডায়ালাইসিস বন্ধে ঝুঁকিতে ২১০ রোগী’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। ভয়াবহ বন্যাকবলিত ফেনীতে সরকারি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ থাকা, বেসরকারি হাসপাতালের সুযোগ গ্রহণ ও অনিয়ন্ত্রিত খরচ, কিডনি জটিলতার রোগীদের ব্যাপক ভোগান্তির বিষয়টি সংবাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। বিষয়টি উদ্বেগজনক এবং কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার চালুকরণে অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় ও বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। বেসরকারি ডায়ালাইসিস সেবা প্রদানকারী হাসপাতালগুলোতে রোগীদের জীবন রক্ষার্থে ডায়ালাইসিস ফি সাধারণ মানুষের সক্ষমতার মধ্যে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। সরকারি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ থাকায় অর্থাভাবে চিকিৎসা না পেয়ে রোগীদের মৃত্যু ঘটার আশঙ্কা রয়েছে, যা অত্যন্ত অমানবিক ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন মর্মেও কমিশন মনে করে। উল্লেখিত বিষয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে।
কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত সুয়োমটোর বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার ক্ষত ফেনীর প্রায় সর্বত্র। কৃষি, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ কোনো খাতই স্বাভাবিক হয়নি জেলাটিতে। ২৫০ শয্যার ফেনী জেনারেল হাসপাতালের কার্যক্রমও পুরোপুরি শুরু হয়নি। বিশেষ করে হাসপাতালটির নিচতলা ডুবে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাসপাতালের হেমোডায়ালাইসিস সেবা কার্যক্রম। সেখানে ২১ দিন ধরে বন্ধ আছে কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার। ফলে বন্যার আগে সেখানে নিয়মিত সেবা নেওয়া ২১০ জন কিডনি রোগী পড়েছেন চরম ঝুঁকিতে। শহরের মাত্র চারটি বেসরকারি ক্লিনিকে সেবাটি চালু থাকলেও সেখানে খরচ বেশি হওয়ায় সবাই যেতেও পারছেন না। হাসপাতালের সেবা বন্ধ থাকায় বেসরকারি ক্লিনিকগুলো এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে মানুষের প্রচুর টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
আরও এতে বলা হয়, সুয়োমটোতে সরকারি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস সেবা সচল রাখার জন্য অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বেসরকারি ডায়ালাইসিস সেবা প্রদানকারী হাসপাতালগুলোতে রোগীদের জীবন রক্ষার্থে ডায়ালাইসিস ফি সাধারণ মানুষের সক্ষমতার মধ্যে নির্ধারণ করে কমিশনে প্রতিবেদন প্রেরণ করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ডায়ালাইসিস সেবা না পেয়ে যাতে কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে অতি দ্রুততার সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য ফেনীর জেলা প্রশাসককে বলা হয়েছে।