Logo
Logo
×

অন্যান্য

পোশাক খাত বিশেষ তহবিলের সার্কুলার দ্রুত চান ব্যবসায়ীরা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২৪, ০৩:১৬ এএম

পোশাক খাত বিশেষ তহবিলের সার্কুলার দ্রুত চান ব্যবসায়ীরা

বাংলাদেশ ব্যাংককে বিশেষ তহবিলের সার্কুলার শিগ্গিরই জারির তাগিদ দিয়েছেন গার্মেন্ট মালিকরা। তারা বলছেন, তা না হলে আগস্টে শ্রমিকদের বেতন দেওয়া সম্ভব হবে না। এতে শ্রম অসন্তোষ দেখা দিতে পারে। একই সঙ্গে শিল্পকারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। 

এ বিষয়ে বিজিএমইএ-এর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আব্দুল্লাহ হিল রাকিব যুগান্তরকে বলেন, ছাত্র-জনতা আন্দোলনের পর নিরাপত্তাহীনতার কারণে আগস্টে ১২-১৫ দিন পোশাক কারখানা বন্ধ রাখতে হয়েছে। দেশজুড়ে বন্যার কারণে পণ্যবোঝাই ট্রাক রাস্তায় আটকা পড়েছে। সাধারণত পণ্য উৎপাদনের কাগজ ব্যাংকে জমা দিয়ে মালিকরা টাকা এনে থাকেন। আগস্টে উৎপাদন বন্ধ থাকায় এ পন্থায় টাকা পাওয়া সম্ভব নয়। তাই শ্রমিকদের বেতন পরিশোধে এক মাসের বেতন বাবদ তিন হাজার কোটি টাকা বিশেষ তহবিল হিসাবে বরাদ্দ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ জানানো হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। 

রাকিব আরও বলেন, এ তহবিলের অর্থ সফট ঋণ হিসাবে চাইলেও বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রাহক-ব্যাংক সম্পর্কের ভিত্তিতে নরমাল রেটে দেওয়ার কথা জানিয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশ ব্যাংককে বিশেষ তহবিলের সার্কুলার জারি করা উচিত। এক্ষেত্রে বিলম্ব হলে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিতে পারে। 

বিকেএমইএ-এর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গার্মেন্ট মালিকরা নানামুখী চাপে আছেন। প্রথমত, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় নিরাপত্তাহীনতা ও বিভিন্ন সংগঠনে ব্যানারে নীরব চাঁদাবাজি শুরু হয়েছে। দ্বিতীয়ত, অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে অর্ডার কমে গেছে। ফলে ভবিষ্যতে সক্ষমতা অনুযায়ী কারখানা পূর্ণোদ্যমে চালানো যাবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। তৃতীয়ত, আগস্টে দীর্ঘ সময় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় অনেক কারখানা শ্রমিকদের বেতন দিতে পারবে না। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ১২ মাসের সহজ কিস্তিতে তহবিল চাওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত বিশেষ তহবিলের সার্কুলার দ্রুত জারি করা। কারণ, সার্কুলার জারির পরও ঋণ পেতে ৮-১০ দিন সময় লেগে যাবে। তাতেও আগস্টের বেতন ১৫ সেপ্টেম্বরের পর দেওয়া লাগতে পারে। 

মঙ্গলবার পোশাকশিল্পের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ নেতারা বৈঠক করেন। বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল্লাহ হিল রাকিব, সহসভাপতি রকিবুল আলম চৌধুরী, বিকেএমইএ-এর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান প্রমুখ। 

বিজিএমইএ নেতারা বৈঠকে সংকটাপন্ন শিল্পের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধি অর্জনে কিছু নীতি সহায়তা দেওয়ার অনুরোধ জানান। এগুলো হচ্ছে-ঋণের ৩টি কিস্তি পরপর পরিশোধ না করলে ঋণখেলাপি না দেখানো। ঋণ পরিশোধের কিস্তি সংখ্যা ৩ থেকে বাড়িয়ে আগের মতো ৬ করা। শিল্পকে স্বস্তি দেওয়ার জন্য ৩ মাসের জন্য ইউটিলিটি সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করা। ব্যাংক খাতের সংস্কার সামনে রেখে কারখানাগুলোকে বিশেষ সুরক্ষা প্রদান। স্বতন্ত্র ব্যক্তির বিরুদ্ধে নেওয়া কর্মকাণ্ড থেকে ব্যবসাকে রক্ষা করা। শিল্পকে ব্যবসাবান্ধব করতে নীতি সহায়তা প্রণয়নে এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংক সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠনের সুপারিশ জানানো হয়।
বৈঠকে গার্মেন্ট মালিকরা বলেন, দুমাস ধরে চলমান অস্থিরতা পোশাক খাতকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ক্ষতি কাটিয়ে রপ্তানি সচল রাখতে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে নীতি সহায়তার বিকল্প নেই। পোশাক খাত ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য শ্রমিকদের এক মাসের মজুরির সমপরিমাণ অর্থঋণ সহজ শর্তে প্রয়োজন। এ ঋণ সুদসহ ১ বছরের মধ্যে পরিশোধ করা হবে। 

তারা আরও বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের সীমা (ইডিএফ) আরও কমানোর ঘোষণা দেওয়ায় পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তাদের মধ্যে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, এই সংকটকালে ইডিএফ-এর সীমা আরও কমিয়ে আনা হলে ব্যবসায়ীরা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। রপ্তানি পারফরম্যান্স ধরে রাখতে ইডিএফ-এর সীমা আরও না কমানোর অনুরোধ জানানো হয়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম