Logo
Logo
×

অন্যান্য

দেশের ৪৮ জেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার অভিযোগ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ০৮:০৬ পিএম

দেশের ৪৮ জেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার অভিযোগ

সরকার পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে দেশের ৪৮টি জেলায় ২৭৮টি জায়গায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হুমকি এবং হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় হিন্দু মহাজোট।

মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মুখপাত্র ও নির্বাহী মহাসচিব পলাশ কান্তি দে এ দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তৃতায় পলাশ কান্তি দে বলেন, দেশবাসীসহ বিশ্ববাসী জানতে পেরেছে- বিগত কয়েকদিন যাবত দেশে কী পরিস্থিতির শিকার হয়েছিল হিন্দু সম্প্রদায়। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর ভাঙচুর, ঘরবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান লুটপাট ও আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া, জোরপূর্বক জমি দখল ও দেশত্যাগের হুমকির যে ঘটনা ঘটানো হলো তা একাত্তরের পুনরাবৃত্তি। এটা কোনো মানুষের ওপর নয়, এটা হিন্দু ধর্মের ওপর সুস্পষ্ট আঘাত। গতকাল (সোমবার) পর্যন্ত ৪৮টি জেলায় ২৭৮টি জায়গায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও হুমকি এসেছে। 

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে আমরা আমাদের দাবি পেশ করি এবং উপদেষ্টা আমাদের সব কথা গুরুত্ব দিয়ে শুনেছেন এবং পরবর্তী ক্যাবিনেট মিটিংয়ে উনি আমাদের সমস্ত বিষয় তুলে ধরবেন বলে জানান।

পলাশ কান্তি দে বলেন, বিগত সময়ে যারা সরকারে ছিলেন সে সমস্ত রাজনৈতিক দলের কাছে আমরা বিগত ২৪ বছর বার বার বলার পরেও আমাদের কোনো দাবি তারা পূরণ করেনি।এখন আমরা আশাবাদী এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করবে। একই সঙ্গে আমাদের ছাত্ররা দেশব্যাপী যে আন্দোলন করছে আমরা তার সঙ্গে একমত। আমরা ছাত্রদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা লক্ষ করেছি ও দেখেছি হিন্দু মহাজোটের নাম ব্যবহার করে একজন ব্যক্তি যিনি বহিষ্কৃত উনি হিন্দু সম্প্রদায়কে নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার নিন্দা ও ক্ষোভ জানাই। আমরা অবগত করছি যে হিন্দু মহাজোট রাজনৈতিক নিরপেক্ষ হিন্দু অধিকার আদায়ের সংগঠন। কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তিকে খুশি করা বা কোনো রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা হিন্দু মহাজোটের কাজ নয়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষাকরণ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা হিন্দু মহাজোটের মূল আদর্শ।

পলাশ কান্তি দে বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট এদেশের হিন্দুদের সমস্যা ও অধিকার নিয়ে কাজ করে। আমাদের সংগঠনের একজন ব্যক্তি যার নাম গোবিন্দ চন্দ্র প্রমানিক। তিনি সংগঠনের সাবেক মহাসচিব যিনি সংগঠনবিরোধী কাজ-কর্মে জড়িত থাকায় বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের ২০১৬-২০১৮ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে তাকে বাদ দিয়ে কমিটি করা হয়। পরে তিনি তার দোসরদের নিয়ে আরও একটি পালটা কমিটি দেন। পরে আমরা একটি সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে বহিষ্কার ও স্বঘোষিত মহাসচিব হিসেবে ঘোষণা দিই।

সভাপতির বক্তৃতায় বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি ড. প্রভাস চন্দ্র রায় বলেন, দেশে সরকার পরিবর্তন হলেই সর্বপ্রথম হিন্দুদের ওপর হামলা করা হয়। অতীতে তেমন আক্রমণ না থাকলেও ইদানীং আক্রমণ বেশি হচ্ছে। আমরা নিরাপত্তা নিয়ে এদেশে বেঁচে থাকতে চাই।এদেশে আমরা জন্মগ্রহণ করেছি। এদেশে আমাদেরও অধিকার রয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা গতকাল (সোমবার) সরকারের কাছে সাতটি দাবি জানিয়েছেন। দাবি গুলো হলো- দেশজুড়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রতিক সময়ে ভয়াবহতম সাম্প্রদায়িক আক্রমণের বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে; সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন ও কমিশন করতে হবে; মন্দির ও বসতবাড়ি সরকারি খরচে পুনঃস্থাপন করতে হবে; দ্রুত বিচার টাইব্যুনালে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে ও তদন্ত রিপোর্ট জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে; ২০০০ সাল থেকে ২০২৪ আজকে পর্যন্ত সংখ্যালঘু নির্যাতনের রিপোর্ট জনসম্মুখে প্রকাশ করা; আসন্ন দুর্গাপূজায় ৩ দিনের ছুটি ঘোষণা করা; সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা।

বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি ড. প্রভাস চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের নির্বাহী সভাপতি সুধাংশু চন্দ্র বিশ্বাস, প্রধান সমন্বয়কারী ড. সোনালী দাস, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রনজিত কুমার মৃধা, প্রভাস চন্দ্র মন্ডল, তপন হাওলাদার, জগন্নাথ হালদার, সুনীল মালাকার, সঞ্জয় কুমার রায়, যুগ্ম মহাসচিব অখিল মন্ডল, শিপন কুমার বিশ্বাস, ফনিভুষন হালদার, শ্যামল রঞ্জন মন্ডল, সমীর সরকার, সুশীল কুমার মিত্র ডা. নিমাই চন্দ্র আর্য্য, কনজ দাস, হারাধন বিশ্বাস, কেনেডি ঘোষ, সাংগঠনিক সম্পাদক আশীষ বাড়ই, সঞ্জয় কুমার সাহা, খগেন সুত্রধর, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মৃদুলা বিশ্বাস, নন্দীতা ঘরামী, জাতীয় হিন্দু যুব মহাজোটের প্রধান সমন্বয়কারী পংকজ হালদার, সভাপতি প্রদীপ কান্তি দে, সাধারণ সম্পাদক রাজেস নাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক মাধব দাস, হিন্দু ছাত্র মাহাজোটের সভাপতি অনুপম দাস, নির্বাহী সভাপতি অভিজিৎ রায়, সাধারণ সম্পাদক রাজিব সাহা প্রমুখ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম