ফাইল ছবি
এবার বিমানের এমডিসহ মন্ত্রণালয় থেকে আসা সব কর্মকর্তার পদত্যাগ দাবি করেছেন বাংলাদেশ বিমানের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
রোববার এ নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কুর্মিটোলা কার্যালয়ে কর্মরতদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা গেছে। একই সঙ্গে আরও কয়েকটি দাবিতে আন্দোলন ও বিক্ষোভ হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে তাদের এই আন্দোলন শুরু হয়। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও তারা হুমকি দিয়েছেন।
আন্দোলনকারীরা বলেছেন, তাদের দাবি বিমানের এমডিসহ মিনিস্ট্রিয়াল সব কর্মকর্তাকে বিমান থেকে বের করে দিতে হবে। আন্দোলনকারীরা দুই কর্মকর্তা বিমানের জিএম (অ্যাডমিন) রওশান ও লিগ্যাল বিভাগের রাশেদ মেহের চৌধুরীর রুমে তালাও ঝুলিয়ে দেন।
এছাড়া বিমানের ৩ হাজার অস্থায়ী কর্মচারীর চাকরি স্থায়ী করা, ৬ হাজার জনবলকে পেনশনের আওতাভুক্ত করাসহ বেশ কিছু দাবি নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা। এতে বিমানে আসতে পারছেন না এমডিসহ অন্য পরিচালক ও মহাব্যবস্থাপকরা।
রোববারও কোনো পরিচালককে বিমানে দেখা যায়নি। সকাল থেকে বৃষ্টিতে ভিজে বিমানের শত শত কর্মকর্তা-কর্মচারী বলাকা ভবনের সামনে মেইন রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। এ সময় তারা সড়কে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ এবং তাদের মাঝে ছাতা ও মাস্ক বিতরণ করেন। শিক্ষার্থীরাও বিমানের এসব দাবিকে যৌক্তিক ও ন্যায্য বলে স্বীকার করেন।
বিমান সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে এয়ারলাইন্সটিতে বেতন-ভাতাদি, পদোন্নতি, বদলি, পদায়ন ও বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে নানা ধরনের বৈষম্য, স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতি চলে আসছে। সর্বোপরি বিমানের দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের কোণঠাসা করে মন্ত্রণালয় থেকে অপেশাদার অনভিজ্ঞ কর্মকর্তা দিয়ে চালানো হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটিকে। ফলে প্রতিষ্ঠানটি বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ে। এতদিন মুখ খোলার কোনো সুযোগ ছিল না। বিমানকর্মীরা এখন আশাবাদী বর্তমান সরকারের সময় তারা ন্যায়বিচার পাবেন।
বিমানকর্মীরা জানান, তাদের মূল দাবি হচ্ছে, বিদ্যমান বৈষম্য দূর করা, অস্থায়ীদের অবিলম্বে স্থায়ী করা, বিমানের দুই-তৃতীয়াংশ কর্মচারী হচ্ছে গ্রাচুইটি হোল্ডার তাদের পেনশন দেওয়া, করোনকালীন যে টাকা কর্তন করা হয়েছে তা ফেরত দেওয়া, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের অপসারণ, ডেপুটেশনে আসা কর্মকর্তাদের সরানো। বিক্ষোভরত কর্মচারীরা বিমানের এমডিসহ মিনিস্ট্রিয়াল সব কর্মকর্তাকে বিমান থেকে বের করে দেওয়ার দাবি জানায়। তারা বিমানের চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার (সিএফও) মো. নওশাদ হোসেন ও লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স বিভাগের ডিজিএম মো. রাশেদ মেহের চৌধুরীকে অবরুদ্ধ করেন। তোপের মুখে একপর্যায়ে তারা পালিয়ে অফিস ছাড়তে বাধ্য হন।