সরকারের আলোচনার প্রস্তাব, যা বললেন সমন্বয়ক নাহিদ
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০২৪, ০১:১০ পিএম
চলমান আন্দোলনে সাধারণ ছাত্রদের প্রতি যত্নবান ও সহনশীল থাকার নিদের্শনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে কোটাবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে মতবিনিময় ও সমন্বয় করার জন্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের টিম গঠন করে দেওয়া হয়েছে। সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসার কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই বলে জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।
শনিবার তিনি গণমাধ্যমকে একথা বলেন।
নাহিদ বলেন, ‘যখন আমরা ডিবি হেফাজতে ছিলাম, তখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমরা এই প্রস্তাবের প্রতিবাদে ডিবি হেফাজতে অনশন করেছিলাম।’
গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে থাকা কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে বৃহস্পতিবার বিকালে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা গতকাল ঘোষণা দিয়েছেন, তারা সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এবং তাদের নয় দফা দাবি আদায়ে আগামীকাল রোববার থেকে দেশব্যাপী অসহযোগ আন্দোলন শুরু করবেন।
নয় দফা দাবি আদায়ে তারা শনিবার সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে একটি হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকার।
তাদের কর্মসূচি সফল করতে সর্বস্তরের মানুষকে এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যোগদানের আহ্বান জানানো হয়েছে।
তাদের নয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে— প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমা চাওয়া এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের পদত্যাগ।
এদিকে চলমান সহিংসতা ও আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসতে আওয়ামী লীগের তিনজন জ্যেষ্ঠ নেতাকেও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এক জরুরি বৈঠকে এসব নির্দেশনা দেন সরকারপ্রধান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি।
জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
চলমান পরিস্থিতি নিয়ে হওয়া ওই জরুরি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, দায়িত্ব দেওয়া তিন জ্যেষ্ঠ নেতাকে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের নেতাদের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করতে বলা হয়েছে। সেই টিম শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করবে। বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার দাবির সঙ্গে একমত বলেই আদালতে আপিল করেছিল সরকার।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত নেতাদের ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও মোকাবিলার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি অন্য কোনো পক্ষ যেন তাদের ব্যবহার করতে না পারে সেদিকেও সজাগ থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
গত ১৬ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনা ঘটতে থাকে। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৫০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সরকার। তবে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এই সংখ্যা ২৬৬ জন।