Logo
Logo
×

অন্যান্য

সাবেক এসিল্যান্ডের বড় অপরাধের ছোট শাস্তি

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৪, ০১:৩০ এএম

সাবেক এসিল্যান্ডের বড় অপরাধের ছোট শাস্তি

নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলার সাবেক সহকারী কমিশনার-ভূমি (এসিল্যান্ড) মো. সামিন সারোয়ারের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, এখতিয়ার বহির্ভূত কাজ করা এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বৈধ আদেশ আমান্য করার প্রমাণ পেয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। 

দায়িত্বপালনকালে এ কর্মকর্তা সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২৬৫টি ঘরের কবুলিয়াত সম্পাদন করেননি। নিয়মনীতি উপেক্ষা করে ট্রলারঘাট থেকে ইজারা আদায় এবং উপজেলা কমিটির অনুমোদন ছাড়াই জলমহাল ইজারা দিয়েছেন তিনি।

এছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই সরকারি গাড়ি ব্যবহার, কর্মস্থল ত্যাগ, ব্যক্তি মালিনাধীন সম্পত্তিতে বেআইনিভাবে মোবাইল  কোর্ট পরিচালনা করে জরিমানা আদায় এবং আদাকৃত অর্থের রিসিট প্রদান না করার অপরাধ করেছেন। শাস্তি হিসাবে তার দুই বছরের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিত করা হয়েছে। ১৪ জুলাই এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট অনেকেই বলছেন, এটা বড় অপরাধের ছোট শাস্তি।

জারি করা আদেশে বলা হয়, কোনো মামলা না থাকার পরও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে রিয়াজ উদ্দিন তালুকদার ও শুক্লদাস নামে দুই ব্যক্তির জমির তিনটি দোকান সিলগালা করেন সাবেক এসিল্যান্ড। তাদের কাছ থেকে যথাক্রমে ৪০ হাজার ও ২০ হাজার টাকা জরিমানাও করেন গুণধর এ সহকারী কমিশনার। কিন্তু ওই মোবাইল কোর্ট মামলার ডিসিআর কপি ও আদেশপত্রে অসামঞ্জস্যপূর্ণ তথ্য লেখেন তিনি। ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় দেখিয়ে অবশিষ্ট ১০ হাজার টাকা নিজের কাছে রাখেন সামিন সারোয়ার। জরিমানার অর্থ নিজ হেফাজতে রেখে ২৩ দিন পর চালানমূলে জমা দেওয়া ও চালানের কপিতে জরিমানার তারিখ প্রতারণামূলকভাবে পরিবর্তন করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সাবেক এসিল্যান্ডের নানা ধরনের অনিয়ম ও অপরাধে জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিভাগীয় তদন্তেও প্রমাণিত হয়। 

তিনি বর্তমানে সহকারী কমিশনার পদে পদায়নের জন্য খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে ন্যস্ত রয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৬ মে সামিনকে এসিল্যান্ডের পদ থেকে প্রত্যাহার করে পরবর্তী পদায়নের জন্য খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে ন্যস্ত করা হয়। ওই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে নেত্রকোনার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে অবমুক্ত হওয়ার আদেশ জারির পরও নতুন কর্মস্থলে যোগদান না করে তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে আট দিনের ছুটির জন্য বিধি বহির্ভূতভাবে সরাসরি আবেদন করেন। খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তার বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ন্যায়সঙ্গত আদেশ অমান্য করা ও অসহযোগিতা এবং অসদাচরণের অভিযোগ দেন।

সামিনকে দেওয়া শাস্তির প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে ‘অসদাচরণ’ ও ‘দুর্নীতি পরায়নতার’ অভিযোগে গত বছরের ১৩ আগস্ট বিভাগীয় মামলা হয়। এ বিষয়ে শুনানি হয়, নিয়োগ দেওয়া হয় তদন্ত কর্মকর্তা। তদন্ত কর্মকর্তা ২৯ এপ্রিল প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্তে তার বিরুদ্ধে সবগুলো অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে  প্রমাণিত হয়। দুই বছর পার হওয়ার পর তৃতীয় বছর থেকে তিনি বর্ধিত বেতন পাবেন বলে আদেশে উল্লে­খ রয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম