গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদে কী মধু আছে, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১০:৫৬ পিএম
পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধের পেছনে ড. ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদ হারানোকে দায়ী করে এই এমডি পদে কী মধু আছে- সেই প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ড. ইউনূসের নাম উল্লেখ না করে তার দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বয়সসীমা পেরিয়ে গেলেও অবৈধভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদে থাকা নিয়ে ষড়যন্ত্র করে বিশ্বব্যাংকের টাকা আটকে দেওয়া হয়েছিল।
এজন্য হিলারি ক্লিনটন দুদফায় তাকে ফোন দিয়েছেন সে কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, হিলারি ক্লিনটন ফোন করলেন। ২০ মিনিট ফোন ছাড়লেন না। দুবার ফোন দিলেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের প্রতিনিধি এলো। আমি শুধু বললাম, এই এমডি পদে কী মধু আছে?
শুক্রবার বিকালে মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতু প্রকল্পের সমাপনী উপলক্ষ্যে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসলে এমডি পদে কী মধু সেটা এখন দেখা যাচ্ছে।বের হচ্ছে সবকিছু। গ্রামীণ ব্যাকের কর্মীরা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে আদালতে মামলা করেছে।অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা হয়েছে।কর ফাঁকির মামলা, আরও কত কিছু বের হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠন করার পর (পদ্মা সেতুর) ডিজাইন ফাইনাল করলাম, দোতলা সেতু করব। খুবই কঠিন কাজ, এই নদীতে এই কাজ করা। কারণ গাড়ি, মানুষ, রেল সব একসঙ্গে সেতুতে উঠলে ওজন রাখা একটা কঠিন কাজ। আমি এই ডিজাইনটা পছন্দ করলাম। বিশ্বব্যাংক, জাইকা, এডিবি সবাই এগিয়ে এলো।
তৎকালীন সময়ে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট যেদিন দায়িত্ব থেকে চলে যান, সেদিনই পদ্মা সেতুর টাকাটা বন্ধ করে দেয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এজন্য হিলারি ক্লিনটনের নির্দেশ ছিল। টাকা বন্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য দাতা সংস্থাও বন্ধ করে দিল। আমি অনেক দেশের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। সবাই মনে করেছিল, বিশ্বব্যাংকের টাকা ছাড়া এই সেতু করাই যাবে না। আমি বললাম কেন যাবে না? একমাত্র মালেশিয়ার প্রেসিডেন্ট বললেন, আপনার সেতুটা আমি করে দেব। তারা মোটামুটি একটা প্ল্যানও দিলেন। মুশকিল হয়ে গেল আমার দেশে। কেউ বলছে না যে, বিশ্বব্যাংক ছাড়া আমরা করতে পারব। হ্যাঁ, আছে আমার জনগণ আছে, বাংলাদেশের মানুষ আছে। দেশে যারা জ্ঞানীগুণী প্রত্যেকে বলে এটা করা সম্ভব নয়। আমি বলেছি, আমরা করব। ১৭ কোটি মানুষ, টাকা এসে যাবে। আমরা তো একদিনে সব টাকা খরচ করব না। আমরা আস্তে আস্তে করব।
বিশ্বব্যাংককে চ্যালেঞ্জ : পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির প্রমাণ দিতে বিশ্বব্যাংককে চ্যালেঞ্জ জানানোর কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির প্রমাণ দেখাতে পারে না। জানতে চেয়েছিলাম, দুর্নীতিটা কোথায়, আমি তো কাগজ চাই। কিসের ভিত্তিতে বলে দুর্নীতি হয়েছে। প্রমাণ চেয়ে চিঠি পাঠালাম। সেই চিঠির উত্তরে বিশ্বব্যাংকের চিঠি পাওয়া গেল। সেই চিঠিতে ছিল, বিএনপির আমলে একটি সড়কে ও একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের টাকা বন্ধ করে দিয়েছিল তা। আমি বললাম, তখন তো আমি ক্ষমতায় ছিলাম না। এখানে আমার করণীয় কী?