
প্রিন্ট: ০১ মার্চ ২০২৫, ১২:২০ এএম
দরজা বন্ধ রাখতে পারি না: ট্রানজিট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী

সংসদ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১১:০৬ পিএম

আরও পড়ুন
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদনেতা শেখ হাসিনা ভারতের সঙ্গে ট্রানজিটের সুবিধার কথা তুলে ধরে বলেছেন, বিশ্বায়নের যুগে আমরা নিজেদের দরজা বন্ধ রাখতে পারি না। আজ পৃথিবীটা গ্লোবাল ভিলেজ, একে অপরের ওপর নির্ভরশীল ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগে। দরজা বন্ধ করে থাকা যায় না। সারা বিশ্বের সঙ্গে একটা যোগাযোগ হচ্ছে। আমরা নেপাল-ভুটানের সঙ্গে ট্রানজিট করেছি ভারতে। এটি তো কোনো একটি দেশের জন্য নয়, আঞ্চলিক ট্রানজিট সুবিধা এবং যোগাযোগ সুবিধার জন্য করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের ট্রান্স-এশিয়া হাইওয়ে, ট্রান্স-এশিয়া রেলের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। আজ ভারতকে আমরা ট্রানজিট দিলাম কেন, এ নিয়ে নানা প্রতিক্রিয়া। আমাদের ট্রানজিট তো আছেই। ত্রিপুরা থেকে বাস চলে আসে ঢাকায়, ঢাকা হয়ে কলকাতা পর্যন্ত তো যাচ্ছে। এতে ক্ষতিটা কী হচ্ছে। বরং আমরা রাস্তার ভাড়া পাচ্ছি। সুবিধা পাচ্ছে আমাদের দেশের মানুষ। অনেকে অর্থ উপার্জনও করছে।
বুধবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, আজ আমরা নেপাল, ভুটান, ভারত, বাংলাদেশ- এ চার দেশ প্রতিটি দেশের সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা, ট্রানজিটের ব্যবস্থা করছি। আজ নেপাল থেকে আমরা জলবিদ্যুৎ কেনা শুরু করতে যাচ্ছি, সেখানে গ্রিড লাইন করা, আমরা সেই চুক্তি করেছি, তা আমরা কার্যকরও করছি। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর থেকে যেসব রেলপথ, নৌপথে যোগাযোগ বন্ধ ছিল, সেগুলো আমরা উন্মুক্ত করে দিচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ভুটান থেকে একটি রাস্তা যাচ্ছে মিয়ানমার হয়ে থাইল্যান্ড পর্যন্ত, অথচ সেই রাস্তাটা যাচ্ছে বাংলাদেশকে বাইপাস করে। বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে যে রোড হচ্ছে, তা থেকে বিচ্ছিন্ন, কেন আমরা বিচ্ছিন্ন থাকব। ভারত চাচ্ছিল ভুটান থেকে রাস্তাটা বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার হয়ে থাইল্যান্ড যাবে। আন্তর্জাতিকভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ সবকিছু কত সুবিধা হতো, সেটিও খালেদা জিয়া নাকচ করে দিয়েছিলেন। এই হলো অবস্থা। প্রথমবার সরকারে এসে অনেক চেষ্টা করেছিলাম; কিন্তু আমরা যুক্ত হতে পারিনি।
ভারত থেকে পাইপলাইনে তেল নিয়ে আসার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আসামের রুমালিগড় থেকে পাইপলাইনে তেল নিয়ে এসেছি। পার্বতীপুর ডিপোতে সেই তেল আসছে। ক্ষতিটা কী হয়েছে? বরং আমরা সস্তায় কিনতে পাচ্ছি, আমাদের দেশের জন্য। ওই অঞ্চলের মানুষের চাহিদা আমরা পূরণ করতে পারি। উত্তরাঞ্চলে কোনো শিল্পায়ন হয়নি, এখন শিল্পায়নে আমরা যেতে পারি এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রও আমরা নির্মাণ করেছি। আমরা নিজেদের দরজা তো বন্ধ করে রাখতে পারি না। এটিই তো কথা।
খালেদা জিয়া মিয়ানমার থেকে গ্যাস আনার সুযোগ নষ্ট করেছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কী সমস্যা দেশের জন্য করেছে দেখেন- মিয়ানমারে সেখানে গ্যাস ফিল্ডের গ্যাস, ভারত, চীন, জাপান সবাই চাচ্ছে। এ গ্যাসকে বাংলাদেশের ভেতর থেকে ভারতে নিয়ে যাবে, এই নিয়ে যাওয়ার সময় এ গ্যাস থেকে আমরা একটা ভাগ নেব। তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রাম, চট্টগ্রামসহ ওই এলাকায় আমাদের গ্যাসের কোনো অভাবই হতো না। খালেদা জিয়া সেটা নিতে দেয়নি। কেন দেয়নি।
তিনি বলেন, আজকে সেই গ্যাস নিচ্ছে চীন। আর কোনো দেশ তো নিতে পারছে না। আমরা সরকারে আসার পর কথা বলেছিলাম মিয়ানমারের সঙ্গে, আনতে পারি কি না। কিন্তু তা সম্ভব নয়। তারা ইতোমধ্যে দিয়ে দিয়েছে।