Logo
Logo
×

অন্যান্য

‘এক লাখ ডিমে এক লাখ টাকা লাভ, গ্যাম্বলিংয়েও এত লাভ নেই’

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৮:৪২ পিএম

‘এক লাখ ডিমে এক লাখ টাকা লাভ, গ্যাম্বলিংয়েও এত লাভ নেই’

তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতিকে সরাসরি দায়ী করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেছেন, এসএমএসের মাধ্যমে সারা দেশের ডিমের দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে। কারা করে, কিভাবে করে, সব তথ্য আমার কাছে আছে। এই সমিতি ভেঙে দিলে বাংলাদেশে ডিমের বাজার ঠিক হয়ে যাবে। 

মঙ্গলবার অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে ডিমের উচ্চমূল্য নিয়ে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, খামার, এজেন্ট, ডিলার ও ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় সফিকুজ্জামান মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠিয়ে ডিমের বাজারদর ঠিক করা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছেন। ডিম ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত মুনাফা করার প্রবণতায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, প্রতিটি ডিমের সর্বোচ্চ উৎপাদন খরচ ১০ টাকা ৮৮ পয়সা। তাহলে ডিম ১৫ টাকা করে কেন বিক্রি হবে? এটা সম্পূর্ণ বিপণনের সমস্যা। আমাদের অভিযানে উঠে এসেছে, ডিমের দাম বেড়েছে বাজারে ট্রাকে বসে। 

মহাপরিচালক বলেন, দেখা যাচ্ছে কেউ যদি এক লাখ ডিম বাজারে বসে বিক্রি করে, তার এক রাতেই লাভ হচ্ছে এক লাখ টাকা। গ্যাম্বলিংয়েও (জুয়া) মনে হয় এত লাভ নেই।

এদিকে গত সপ্তাহের মাঝামাঝি থেকে ডিমের বাজার হঠাৎ অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। আমিষের সহজলভ্য উৎস ডিমের দাম হঠাৎ বেড়ে প্রতিটি ১৫ টাকায় দাঁড়ায়। ঢাকার বাজারে প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকায়। ডজন হিসাবে ডিমের দাম উঠেছে ১৬৫-১৭০ টাকায়। এমন প্রেক্ষাপটে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে ভোক্তা অধিদপ্তর। সভায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতিকে এসএমএসের মাধ্যমে ডিমের দাম বাড়ানোর হোতা হিসেবে উল্লেখ করে এর জবাব চান।

এ সময় তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমানউল্লাহ বলেন, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের নিয়ে একটি সভা করার কথা বলেছিল। এজন্য আমরা ওই সভা করেছি। আমাদের এনএসআই বলেছে, এজন্য আমরা এই সভা করেছি।

অন্যদিকে ডিমের দাম বাড়ানোর কারসাজিতে যে তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির হাত রয়েছে, সেই তথ্য এক সপ্তাহ আগেই দিয়েছিলেন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার। এই সমিতির হাতেই ‘ডিমের বাজারের নিয়ন্ত্রণ’ মন্তব্য করে সুমন বলেন, বিভিন্ন জায়গার ব্যবসায়ীদের তারা শুধু জানিয়ে দেয় আজ এত টাকা, কাল এত টাকা। এখানের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। তারা দিনে ও রাতে বাজার বসায়। দিনের বাজার ঠিক আছে। ঘোষণা অনুযায়ী ডিম বেচাকেনা হয়। কিন্তু রাতের বাজারে খামারির কাছ থেকে আনা ডিমের দাম তারা বসিয়ে দেয়।

তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির কাছ থেকে ডিমের দামের এসএমএস পাওয়ার কথা জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার একজন খামারিও। নুরুল ইসলাম নামের ওই খামারির ভাষ্য, তেজগাঁও ডিম সমিতি থেকে প্রতিদিন মোবাইলে মেসেজ আসে যে আজ এত টাকা করে ডিমের দাম। আজ বাড়ছে বা কমছে। সেই মেসেজ অনুযায়ী সরবরাহকারীরা আমদের ডিম কেনে। মানে তারাই মেসেজ দেয়, তারাই কেনে।

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে তেজগাঁও ডিম সমিতির সাধারণ সম্পাদক হানিফ মিয়া বলেছিলেন, আমরা কখনও ডিমের দাম নির্ধারণ করি না। এই দাম ক্রেতারা নির্ধারণ করে। কেনাবেচার মাধ্যমে নির্ধারিত হয়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম