‘ডিমের বাজার অস্থির করপোরেট ও আড়তদার চক্রে’
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৪, ১০:৩৩ পিএম
করপোরেট কোম্পানি ও আড়তদারদের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দেশে ডিমের দাম বাড়ানো-কমানো হচ্ছে। এতে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে। ওই সিন্ডিকেটের কারণে প্রান্তিক খামারিরা ডিম উৎপাদনের খরচ তুলতে পারেন না। অথচ একচেটিয়া সিন্ডিকেটের কারণে ডিম কিনতে বাড়তি টাকা খরচ করছেন ভোক্তারা।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সারা দেশে হঠাৎ করেই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ডিমের বাজার অস্থির করা হয়। এর নেপথ্যে রয়েছে রাজধানীর তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির কারসাজি। কেননা তারাই সারা দেশে ডিমের বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার বলেন, ডিম ব্যবসায়ী সমিতি সারা দেশের একচেটিয়া ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। তাদের দৌরাত্ম্যে অসহায় ক্রেতা বিক্রেতারা। তারা নির্দিষ্ট ফার্ম থেকে ডিম কেনে এবং নির্দিষ্ট জায়গায় বিক্রি করে। তাই তাদের ক্রয়বিক্রয় রিসিট দেখলে সত্যতা বেরিয়ে আসবে। ফেসবুকের মাধ্যমে প্রতিদিন ডিমের দাম নির্ধারণ করছে তারা। ফলে সারা দেশে মুহূর্তে ওই দাম ছড়িয়ে পড়ছে।
তিনি বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ে প্রতিটি ডিম উৎপাদনে খামারিদের খরচ সাড়ে ৯ থেকে সাড়ে ১০ টাকা। বর্তমানে খুচরা বাজারে প্রতিটি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে সাড়ে ১২ টাকা। আমরা ডিমের এ দাম যৌক্তিক বলে মনে করছি। এখন ডিমের বাজার স্থির থাকায় উৎপাদক (খামারি) ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন এবং ভোক্তাও ন্যায্যমূল্যে ডিম কিনে খেতে পারছেন। কিন্তু ডিম ব্যবসায়ী সমিতি এবং করপোরেট কোম্পানিগুলোর কারসাজিতে মাঝে মধ্যে বাজার অস্থির হয়ে যায়। খামারিরা তখন ডিম উৎপাদন খরচও তুলতে পারেন না।
সুমন হাওলাদার বলেন, ডিমের বাজারের নিয়ন্ত্রণ আড়তদার এবং করপোরেট কোম্পানিগুলোর হাতে। তারা যখন ইচ্ছা দাম বাড়ান, আবার যখন ইচ্ছা দাম কমান। যেমন- হঠাৎ করেই খুচরা পর্যায়ে ডিমের দাম কমিয়ে ৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আবার হঠাৎ করেই একটা ডিমের দাম ১৩ টাকা হয়ে যায়। প্রতিদিন মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠিয়ে ও ফেসবুকে পোস্ট করে ডিমের বাড়তি বা কম দাম বাস্তবায়ন করে তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতি। সারা দেশেই এ দামে ডিম বেচাকেনা হয়।
সুমন হাওলাদার আরও বলেন, সিন্ডিকেট করে ডিমের দাম কমিয়ে সেগুলো কোল্ড স্টোরেজে জমা করে। পরবর্তী সময়ে সেই ডিম আবার বাড়তি দামে বিক্রি হয়। ফলে প্রান্তিক খামারিরা ন্যায্যমূল্য না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পোলট্রি ব্যবসা থেকে সরে যাচ্ছেন। নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত দামে মুরগির বাচ্চা বিক্রি করে বিভিন্ন করপোরেট কোম্পানি খামারিদের গলা কাটছে। এসব সমস্যা সমাধানে করপোরেট কোম্পানি, আড়তদার, পোলট্রি ফিড, মুরগির বাচ্চা ও ডিমের সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে ন্যায্যমূল্য নির্ধারণের দাবি জানান সুমন হাওলাদার।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিপিএর উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও বাংলাদেশ এসএমই ফোরামের সভাপতি চাষি মামুন, বিপিএ সহসভাপতি বাপ্পি কুমার দে, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খন্দকার প্রমুখ।