গামছা কাতান আনারস জিআই জার্নালে, প্রক্রিয়ায় আরও ৩০ পণ্য
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৪, ০৯:৪৪ পিএম
বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসাবে অনুমোদন দেওয়ার অংশ হিসাবে জিআই জার্নালের জন্য অনুমোদিত হয়েছে আরও ৭টি পণ্য। এগুলো হলো সিরাজগঞ্জের গামছা, সিলেটের মণিপুরী শাড়ি, ভোলার মহিষের দুধের কাঁচা দই, ঢাকার মিরপুরের কাতান, ঢাকাই ফুটি কার্পাস তুলা, টাংগাইলের মধুপুরের আনারস ও মাগুরার হাজরাপুরী লিচু। জানা গেছে, এই জার্নাল প্রকাশের অপেক্ষায় আছে।
নিয়ম অনুযায়ী, জিআই জার্নালে প্রকাশের পর দুই মাস কোনো পণ্যের বিষয়ে কারও আপত্তি, মতামত বা চ্যালেঞ্জ আছে কিনা সেটি দেখা হয়। কোনো আপত্তি না এলে পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক মেধাস্বত্ব কর্তৃপক্ষ থেকে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে জিআই স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।
ওয়ার্ল্ড প্রপার্টি রাইটস অরগানাইজেশনের (ডব্লিউআইপিও) নির্দেশনা অনুযায়ী শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) জিআই সনদ প্রদান করে।
ডিপিডিটির মহাপরিচালক মো. মুনিম হাসান যুগান্তরকে বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন-২০১৩ পাশ হওয়ার পর ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য বিধিমালা-২০১৫ প্রণয়ন করা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে জিআই পণ্যের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। তারই অংশ হিসাবে প্রথম ২০১৬ সালে জামদানি শাড়িকে বাংলাদেশে প্রথম জিআই পণ্য হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। সে ধারাবাহিকতায় আমরা এগিয়ে গেছি।
তিনি বলেন, মহাপরিচালক হিসাবে এই প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব নিয়ে আসি সেপ্টেম্বরে। আমরা নবোদ্যমে আমরা কাজ শুরু করেছি এবং এখন পর্যন্ত দেশে অনুমোদিত জিআই পণ্যের সংখ্যা ৩১। জিআই পণ্যের স্বীকৃতি প্রদানের এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
এদিকে জিআই পণ্যের স্বীকৃতির জন্য আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আরও ঐতিহ্যবাহী ৩০টি পণ্য প্রক্রিয়াধীন আছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে নোয়াখালীর মহিষের দই, জয়পুরহাটের লতিরাজের কচু, সিরাজগঞ্জের তরল দুধ এবং একই জেলার লুঙ্গি, নওগাঁর নাক ফজলী আম, সুন্দরবনের মধু, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী মিষ্টি, ফুটি কার্পাস তুলার বীজ ও গাছ। আরও আছে পটুয়াখালীর মৃৎশিল্প, ঝালকাঠির পেয়ারা, শেরপুরের ছানার পায়েস, দিনাজপুরের বেদানা লিছু, কুমিল্লা খাদি, মানিকগঞ্জের হাজারী গুড়, বরিশালের আমড়া, মুন্সীগঞ্জের পাতক্ষীর, গোপালগঞ্জের ব্রোঞ্জের গহনা, ঝিনাইদহের ল্যাংচা মিষ্টি, খালিশপুরের সাদা চমচম, হরিনাকুন্ডুর পান। এ ছাড়াও গাজীপুরের কাঁঠাল, মেহেরপুরের সাবিত্রী মিষ্টি, পিরোজপুরের মাল্টা, টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের জামুর্কির সন্দেশ, বরগুনার সোনামুগ ডাল, বান্দরবানের থামি ও মুরুংবাশি, মৌলভীবাজারের দুছনির দই, গফরগাঁওয়ের লাফা বেগুন।
জিআই এমন একটি ভৌগোলিক নির্দেশক যা কোনো একটি নির্দিষ্ট পণ্যের উৎপত্তি বা উৎপাদনের খ্যাতিকে নির্দেশ করে। অর্থাৎ পণ্যটি ওই এলাকা ছাড়া অন্য কোথাও উৎপাদন করা সম্ভব নয়। একটি দেশের মাটি, পানি, আবহাওয়া এবং সেই জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি মিলিয়ে জিআই পণ্য তৈরি হয়।