Logo
Logo
×

অন্যান্য

অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়

Icon

মেহেরপুর প্রতিনিধি ও বাসস

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১৯ পিএম

অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়

নানা আয়োজনে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালন করা হয়েছে। মেহেরপুরের মুজিবনগরে বুধবার সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। আর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আম্রকাননে শেখ হাসিনা মঞ্চের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। ১০টার দিকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা হয়। এর আগে অতিথিদের গার্ড অব অনার প্রদান ও কুচকাওয়াজ হয়।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপির সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন এমপি। সম্মানিত অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী মোজাম্মেল হক এমপি। 

বিশেষ বক্তা ছিলেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, পারভীন জামান কল্পনা এমপি, অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া সরকার ঝর্ণা, নির্মল কুমার চ্যাটার্জি, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক ও মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য আবু সালেহ মোহাম্মদ নাজমুল হক সাগর। সভা সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে শপথ অনুষ্ঠানের পর থেকেই বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি কাড়ে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, মুজিবনগরকে আন্তর্জাতিক মানের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। যাতে মানুষ মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের আগের ২৩ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস জানতে পারে। 

এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, এ জায়গায় এলে সিমিন হোসেন রিমি ও আমার অন্যরকম অনুভূতি কাজ করে। কারণ আমাদের বাবারা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে প্রথম সরকারের শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন ও পরিচালনা করেছিলেন। 

সিমিন হোসেন রিমি বলেন, বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ শুরু হয় ’৭১-এর ১৭ এপ্রিল। ওইদিন পাশের ভবেরপাড়া খ্রিষ্টান মিশনের সিস্টাররা গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখেন। 

মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, কোনো মেজরের হুইসেলে আমাদের স্বাধীনতা আসেনি। জিয়া ক্ষমতায় আসার পর কুখ্যাত রাজাকারদের রাজনীতি করার অধিকার নিশ্চিত করেন। দালালি আইন বাতিল করেন। পাকিস্তানি এজেন্টদের বিতাড়িত করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলব ইনশাআল্লাহ।

সভাপতির বক্তব্যে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ও সোনার বাংলা বিনির্মাণের প্রশ্নে যেখানেই বাধা আসবে সেখানেই প্রতিহত করা হবে। এই হোক মুজিবনগর দিবসের শপথ।’

অনুষ্ঠান শেষে কেন্দ্রীয় নেতারা মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। 

প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা : ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষ্যে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে রক্ষিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে অওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে দলীয় প্রধান হিসাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

পাশাপাশি বনানী কবরস্থানে সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ ও এম মনসুর আলীর কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

কর্মসূচির মধ্যে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণসহ সারা দেশের সব দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণহত্যা শুরু হলে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। যা ইপিআর (বর্তমান বিজিবি) ওয়্যারলেসযোগে এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে সারা দেশে প্রচার করা হয় এবং ১৭ এপ্রিল আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা স্বাধীন বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠনের জন্য মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলায় সমবেত হন। তৎকালীন মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলা ছিল মূলত একটি আমের বাগান, পরে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠনের পর এর নাম হয় মুজিবনগর।

সেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হয় এবং বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে সৈয়দ নজরুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসাবে নিযুক্ত করা হয়। তাজউদ্দীন আহমদ প্রথম প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন। ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এএইচএম কামারুজ্জামান মন্ত্রিসভার সদস্য হিসাবে নিয়োগ পান।
মুজিবনগরের অস্থায়ী সরকার সফল নেতৃত্বের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালিকে চ‚ড়ান্ত বিজয় এনে দেয়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম