‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মানুষের অন্তরে থাকায় নির্বাচনে শক্তিধর রাষ্ট্রের ষড়যন্ত্র সফল হয়নি’
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৪, ০৬:৫৮ পিএম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বলেছেন, বিগত নির্বাচনে একটি শক্তিধর রাষ্ট্র সব ষড়যন্ত্র করার পরেও তারা সফল হতে পারেনি। সফল হতে পারেনি এ কারণেই, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন ও আদর্শ এদেশের সব মানুষের অন্তরের অন্তস্থলে আছে।
ঢাবি ভিসি বলেন, এজন্য অন্যরা যত প্রলোভনই দেখাক তাদের মানুষ বিশ্বাস করে না। বিশ্বাস করে না বিধায় বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন টিকে আছে, বাংলাদেশ টিকে আছে, আওয়ামী লীগ টিকে আছে, অসাম্প্রদায়িকতা টিকে আছে।
শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে (এটিএম শামসুল হক হল) সম্প্রীতির বাংলাদেশ আয়োজিত বাঙালির অস্তিত্বের উৎস বঙ্গবন্ধু শীর্ষক আলোচনা সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন৷
মাকসুদ কামাল বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই বাংলাদেশের শিক্ষানীতি করার জন্য ড. কুদরত-ই-খুদাকে প্রধান করে কমিশন করেন৷ ড. কুদরত-ই-খুদা সেদিন যে শিক্ষানীতি দিয়েছিলেন যদি বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন এবং সেই শিক্ষানীতি যদি প্রয়োগ হতো তাহলে বাংলাদেশ আজকে যে অবস্থানে আছে তার বহু আগেই সিঙ্গাপুরের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক যে স্থিতিশীলতা সেটি বাংলাদেশ অর্জন করত। শিক্ষাক্ষেত্রেও সিঙ্গাপুরের যে অগ্রগতি সেটি বহু আগেই বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র অর্জন করত। কিন্তু ঘাতকরা সেটি হতে দেয়নি৷ ঘাতকরা চেয়েছে বাংলাদেশ হবে পাকিস্তানের মতো অনেকটা মৃত অকার্যকর রাষ্ট্রের মতো। সেই রাষ্ট্রের যে ধ্যান-ধারণা ছিল সেই ধ্যান-ধারণার মতো বাংলাদেশ চলবে। সেজন্যই ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে ও বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সহকর্মীদের হত্যা করে এবং আওয়ামী লীগ নামক রাজনৈতিক দলকে হত্যা করার পায়তারা করে৷
তিনি বলেন, যে দলের জন্ম বঙ্গবন্ধু, যে দলের অস্তিত্বের মধ্যে আছে বঙ্গবন্ধু, যেই দলের উৎস হলো বাঙালি জাতীয়তাবাদ, অসাম্প্রদায়িকতা- সেই দলকে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক অনুসারীদের হত্যা করলেও যে আদর্শ মানুষের অন্তরের অন্তস্থলে আছে সে আদর্শকে হত্যা করা যায় না৷ সেটির প্রমাণ হলো আজকে বারবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার মধ্যদিয়ে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন, অর্থনৈতিক দর্শন, সামাজিক দর্শন এবং বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতি সেটি বাস্তবায়ন হতে চলেছে৷
সভাপতির বক্তব্যে পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষার মধ্যেও বঙ্গবন্ধুর গবেষণা চলছে। তিনি এখনো আমাদের কাছে অতিপ্রয়োজনীয়। একটি জাতিকে তিনি মুক্ত করেছেন অপরিসীম দুঃখ কষ্ট ও ত্যাগ সহ্য করে। অবর্ণনীয় নির্যাতন সহ্য করে তিনি বাঙালির স্বাধীনতা এনেছেন। বাঙালির জীবনে অনেক বরেণ্য ব্যক্তি আসছে। কিন্তু সবাইকে চাপিয়ে বঙ্গবন্ধু শ্রেষ্ঠ বাঙালি হয়েছেন। তিনি চেয়েছিলেন বাঙালির অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তি। সাড়ে সাত কোটি নির্যাতিত, বৈষম্যের শিকার হওয়া মানুষদের তিনি সুসংগঠিত করেছেন। সংগঠিত করে তিনি একটি জাতির স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। স্বাধীনতা এনে দিয়ে তিনি বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছেন বাঙালি পিছিয়ে পড়া জাতি নয়। বিশ্বের মাঝে বাঙালি জাতিকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার সাহস দিয়েছেন। তিনি জীবনভর বৈষম্যহীন একটি জাতির কথা বলে গেছেন। ভাষার জন্য লড়াই করেছেন, জাতিসত্তার জন্য লড়াই করেছেন। ধর্মনিরপেক্ষতার কথা তিনি মুখেই বলেছেন এমনটা নয়, ধর্মনিরপেক্ষতার কথা তিনি সংবিধানেও সংযোজন করেছেন।
সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্যসচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি অ্যান্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. বিমান চন্দ্র বড়ুয়া, বঙ্গবন্ধু গবেষক মেজর (অব.) হাফিজুর রহমান প্রমুখ।