কওমি মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদ
পাঠ্যপুস্তক থেকে বিতর্কিত সব অধ্যায় বাতিলের দাবি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৩:০৩ এএম
ট্রান্সজেন্ডারসহ বিতর্কিত সব অধ্যায় পাঠ্যপুস্তক থেকে বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন কওমি মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী।
তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশ। এদেশের মানুষ ধর্মভীরু। বাংলাদেশি কৃষ্টি-কালচার ও সাংস্কৃতিকে প্রাধান্য দিয়েই পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করতে হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য আমাদের পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের ক্ষেত্রে ভিনদেশি সংস্কৃতিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
শনিবার গাজীপুরের কাপাসিয়ার মাদ্রাসা দাওয়াতুল হক দেওনা প্রাঙ্গনে কওমি মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, পাঠ্যপুস্তকে কুরআন-হাদিসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বেশ কিছু অধ্যায় সুপরিকল্পিতভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিজ্ঞ আলেমদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে ট্রান্সজেন্ডারসহ বিতর্কিত সব অধ্যায় বাতিল করে নতুন পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ করতে হবে।
পরিষদের মহাসচিব মাওলানা মুস্তাকীম বিল্লাহ হামিদী ও মাওলানা আব্দুল মজিদের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন- মাওলানা আশেকে মোস্তফা, মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা হাবিবুর রহমান খান, মাওলানা আব্দুল বাতেন কাসেমী, মাওলানা মেরাজুল হক মাজহারী,মুফতি দ্বীন মুহাম্মদ আশরাফ, মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজী প্রমূখ।
সভায় বক্তারা বলেন, কুরআন-হাদিসকে বাদ দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা কখনো সম্ভব হবে না। দুর্নীতি ও শোষণমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে ও সুনাগরিক গঠনে ধর্মীয় শিক্ষার বিকল্প নেই। এই দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে ৭টি শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষা কমিশনের রিপোর্টে ধর্মীয় শিক্ষাকে উপেক্ষা করা হয়েছে।
সভা থেকে কয়েকটি দাবি জানানো হয়:-
১: ট্রান্সজেন্ডার সহ বিতর্কিত সব অধ্যায় পাঠ্যপুস্তক থেকে বাতিল করতে হবে।
২: যাদের ভুলে বারবার পাঠ্যপুস্তক নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছে এবং পাঠ্যপুস্তকের ভুলের কারণে দেশের অর্থ সম্পদ নষ্ট হচ্ছে তাদেরকে অপসারণ করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৩: সংবিধানের ১৭ নং অনুচ্ছেদে রাষ্ট্র কর্তৃক একই পদ্ধতির গণমুখী ও সার্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি বর্ণিত হয়েছে, সেহেতু দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলমান হওয়ায় সংবিধান সংশোধন করে হলেও ইসলামী ধারার শিক্ষাকে জাতীয় শিক্ষা হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।
৪: জাতীয় শিক্ষা কমিশন, জাতীয় পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন কমিটি ও এনসিটিবিতে আলেম-উলামাদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৫: জাতীয় পাঠ্যপুস্তক থেকে নাচ, গানসহ সব অপসংস্কৃতির অধ্যায় বাতিল করে কুরআনিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং কুরআনিক শিক্ষার জন্য সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।