দায়িত্ব নিয়েই কঠোর বার্তা দিলেন নতুন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০৮:৩২ পিএম
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পরে আওয়ামী লীগের নতুন মন্ত্রিসভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম দিন দপ্তরে গিয়ে আহসানুল ইসলাম টিটু দেশের সিন্ডিকেট ও মজুতদারদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, দেশে নিত্যপণ্যের বাজারে সিন্ডিকেট থাকতে পারবে না। আর পণ্যের মজুতদারীদের দমন করা হবে শক্ত হাতে।
নতুন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী রোববার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে প্রথম দিন এমন কঠোর হুঁশিয়ারি বার্তা দেন।
তিনি বলেন, উৎপাদনকারী থেকে ভোক্তা পর্যন্ত পণ্য সরবরাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও কারসাজি করলে তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটি প্রধানমন্ত্রী আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন। আগে কথার কথা বলা হতো। এখন বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, ব্যবসা করতে হবে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে। প্রকৃত ব্যবসায়ীদের সহায়তা করা হবে।
নতুন সরকারের মন্ত্রিসভা গঠনের পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন আহসানুল ইসলাম টিটু। বেলা ১১টায় সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে যান তিনি। শুরুতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপনকান্তি ঘোষ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ফুলের শুভেচ্ছার মাধ্যমে তাকে বরণ করে নেন। এরপর প্রায় টানা আড়াই ঘণ্টা বৈঠক করেন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন উইং প্রধানদের সঙ্গে। এরপর তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
প্রতিমন্ত্রীর কাছে সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল- সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নজির অতীতে দেখা যায়নি, আপনি ব্যবস্থা নিতে পারেব কিনা?
জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের এখতিয়ারে যা আছে তার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে পণ্য সরবরাহে যারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও কারসাজি করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি পুঁজিবাজারের উদাহরণ টেনে বলেন, সেখানে দায়িত্ব পালনকালে কোনো গ্রুপ, সিন্ডিকেট বা কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করতে দেওয়া হয়নি। এখানেও দেওয়া হবে না। প্রতিমন্ত্রী বলেন, অস্বচ্ছতা শনাক্ত করার যথেষ্ট সিস্টেম বা টুলস আছে। ভয় দেখানোর জন্য বলছি না। ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করব- স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে ব্যবসা হলে সহযোগিতা পাবেন। কিন্তু কোনো কারসাজির মাধ্যমে সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে চাইলে তার বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, ব্যবসায়ী হয়ে মন্ত্রী হওয়ার পর ব্যবসায়ীদের পক্ষে চলে যায়?
জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি ব্যবসায়ী এজন্য কোনো সমস্যা নেই। আমি সহায়তা করব, কিন্তু আমি ব্যবসা করব না। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আমার কোনো যোগসাজশ হওয়ার সুযোগ নেই। কোনো ব্যবসায়ী মহলের স্বার্থ রক্ষা করতে আমি এ সিটে বসিনি।
পণ্য বাজারে নিয়ন্ত্রণে তার পরিকল্পনা জানতে চাইলে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি পণ্যের বাজার স্বাভাবিক রাখতে অর্থমন্ত্রীর সহায়তা চেয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছি। অর্থমন্ত্রী আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন। অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে শিল্প, খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় মিলে আমরা একটি টিম হিসেবে কাজ করব। পণ্যের মূল্য কমানোর ক্ষেত্রে কোনো ম্যাজিক নেই। এটি হবে আমাদের স্বচ্ছতা ও কর্মতৎপরতা। আগে কোনো ইস্যু নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দেওয়া হতো অর্থ মন্ত্রণালয়কে। এখন চিঠির সঙ্গে বাণিজ্য সচিবও যাবেন, প্রয়োজনে আমিও। যাতে একটি চিঠি বাস্তবায়নে মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে না হয়।
মনিটরিং প্রসঙ্গে তিনি কলেন, আমরা কাজ করছি ভোক্তার স্বার্থে। উৎপাদনকারী বা কৃষকের কাছ থেকে দ্রততার সঙ্গে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করব। আমদানি করার পণ্যের পরিমাণ, কোন কোম্পানির কাছে কতটুকু আছে, কোন গুদামে কী পরিমাণ পণ্য আছে, ঘাটতি কতটুকু আসে এসব বিষয় এখন ডিজিটালভাবে মনিটরিং করা হবে। এখনো মনিটরিং করা হয়। কিন্তু ডিজিটালভাবে হয়নি। আমরা সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক করার মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে চাই। বড় বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলা হবে। প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করা হবে। বাজার কমিটির সঙ্গে কথা বলা হবে।