নিরাপত্তা জোরদার, টহল শুরু
নির্বাচনের দায়িত্বে ১ লাখ ৮৯ হাজার পুলিশ, ৮৫০০ আনসার
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৩১ পিএম
ফাইল ছবি
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সারা দেশে ১ লাখ ৮৯ হাজার পুলিশ সদস্য কর্মরত রয়েছেন। নির্বাচনের সময় টহল দেওয়া থেকে শুরু করে মোবাইল টিম, স্ট্রাইকিং টিম এবং ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গেও ডিউটিতে থাকবেন তারা। ৪২ হাজার ২৪৯টি ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তাব্যবস্থায় পুলিশ সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে।
এছাড়া নির্বাচন উপলক্ষ্যে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে শুক্রবার থেকে আনসার ব্যাটালিয়নের সাড়ে ৮ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে, থাকবে আগামী ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত। মাঠে থাকবে বিজিবির ডগ স্কোয়াডও। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি বিজিবি মাঠে থাকবে। পুলিশ, আনসার ও বিজিবি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উপপরিচালক ও গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্যদের শুক্রবার থেকে সারা দেশে মোতায়েন করা হয়েছে।
১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচনকালীন স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে মোতায়েন থেকে ২৫০ প্লাটুন ও ৭৫০টি সেকশনে তারা দায়িত্ব পালন করবেন। রিটার্নিং অফিসারের পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে দায়িত্ব পালন করবেন তারা।
এদিকে শনিবার দুপুরে পুলিশ সদর দপ্তরে নির্বাচনি আইনশৃঙ্খলা নিয়ে পূর্বনির্ধারিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি-অপারেশন) আনোয়ার হোসেন বলেছেন, নির্বাচনি এলাকা থেকে পুলিশ যে কোনো অভিযোগ পেলে তা গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়ে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করছে। পুলিশের কাছে সব প্রার্থী সমান। প্রচার-প্রচারণার ক্ষেত্রে সব প্রার্থী যেন সমান সুযোগ পান, এর নির্দেশনা দেওয়া আছে। জামিন পাওয়া আসামিরাও পুলিশের বিশেষ নজরদারিতে আছেন।
পুলিশের উপমহাপরিদর্শক বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে বাড়তি ফোর্স মোতায়েন থাকবে। কোনো কোনো দুর্গম এলাকার কেন্দ্রও ঝুঁকিপূর্ণ। সেগুলোর বিষয়েও বাড়তি ফোর্স নিয়ে কাজ করছে পুলিশ। রেলের নিরাপত্তায় আইপি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। তিনি বলেন, যারা গ্রেফতার হয়েছেন, তারা রাজনৈতিক কারণে নয়, রাজনীতি করা অপরাধ নয়। তবে কেউ যদি রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে যানবাহনে আগুন দেয়, ভাঙচুর করে, চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে, তাহলে নির্দিষ্ট মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।
ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, নির্বাচনকে প্রতিরোধ করা, নির্বাচনি কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করা অপরাধ। এক্ষেত্রে তো পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে আরও বড় রকমের সংঘাত হবে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে আমাদের বিশেষ অভিযান চলমান। বৈধ অস্ত্র প্রদর্শন ও বহন নিষিদ্ধ করে একটি পরিপত্র জারি হয়েছে। নির্বাচনকালে কেউ বৈধ অস্ত্র প্রদর্শন বা বহন করতে পারবেন না।
থাকবে বিজিবির ডগ স্কোয়াডও : নির্বাচনে যে কোনো নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঠেকাতে সাধারণ ফোর্সের পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত ডগ স্কোয়াডও মাঠে থাকবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল একেএম নাজমুল হাসান। শনিবার দুপুরে জিইসি কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম-১০ আসনে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত বিজিবি সদস্যদের ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, নির্বাচনে বিজিবি মোতায়েনের পর চট্টগ্রাম থেকে সফর শুরু করেছি। চট্টগ্রামে ১৭৭ প্লাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করছে। মূলত আমরা মোবাইল এবং স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে থাকব। তারপরও কোথাও যদি আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়, ভোটগ্রহণ ও গণনার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হয়, সেক্ষেত্রে রিটার্নিং অফিসার ও প্রিসাইডিং অফিসারের চাহিদা মোতাবেক আমরা কাজ করব। কোনো জায়গায় নাশকতা বা কোনো সমস্যা হলে সেখানে আমাদের বিশেষ প্রশিক্ষিত ডগ স্কোয়াড কাজ করবে।
এদিকে আমাদের ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর অনুযায়ী, কুমিল্লায় ৩২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। ভোলা, বরিশাল ও নোয়াখালীর ৭টি আসনে কোস্ট গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি শনিবার থেকে বিজিবির টহল শুরু হয়েছে।