গম, জ্বালানি তেল ও সার আমদানির সিদ্ধান্ত
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:০২ পিএম
এক লাখ মেট্রিক টন গম, ৬০ হাজার মেট্রিক টন সার, সাড়ে ১৮ লাখ মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল ও ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিসহ ২০ প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত্র মন্ত্রিসভা কমিটি।
বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে মোট ব্যয় হবে ৩১ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। বৈঠক শেষে বিস্তারিত তথ্য সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান।
জানা গেছে, ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসের (জানুয়ারি থেকে জুন) জন্য ১৮ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে জিটুজি (সরকারের সঙ্গে সরকারের চুক্তি)-এর মাধ্যমে তা আনা হবে। এছাড়া ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ১৫ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে জ্বালানি তেল আমদানিতে ব্যয় হবে ৫৪২ কোটি টাকা।
এছাড়া রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় কাতার থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন এবং কাফকো থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার কেনা হবে।
আমদানিকৃত সারের পেছনে খরচ হবে ২০৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে কাতার থেকে আমদানিকৃত প্রতি মেট্রিক টন সারের মূল্য পড়বে ৩১৭ মার্কিন ডলার। এতে আমদানি ব্যয় হবে দেশিয় মুদ্রায় ১০৫ কোটি টাকা।
এছাড়া দেশের খাদ্য-নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এক লাখ মেট্রিক টন গম আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় হবে ৩৪৮ কোটি টাকা। আরব আমিরাতের মেসার্স সেরিয়েল ক্রপস ট্রেডিং এলএলসি’র কাছ থেকে এ গম আনা হবে। প্রতি কেজি গমের মূল্য হবে ৩৫ টাকা।
টিসিবির জন্য ১৪ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল ও ১ কোটি ১০ লাখ লিটার রাইস ব্র্যান তেল কেনার ৪টি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। ব্যয় হবে ৩১৩ কোটি টাকা। স্থানীয়ভাবে কেনা হবে ৬ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল। চট্টগ্রামের ইসলাম ট্রেডিং এ ডাল সরবরাহ করবে। প্রতি কেজি ১০৩ টাকা হিসাবে মোট ব্যয় হবে ৬২ কোটি টাকা। স্থানীয়ভাবে ৬০ লাখ লিটার রাইস ব্র্যান তেল কেনা হবে মজুমদার প্রডাক্টস লি. ও এমআরটি অ্যাগ্রো প্রডাক্টস বিডি লি. এর কাছ থেকে। মোট ব্যয় হবে ৯৪ কোটি টাকা। প্রতি লিটার রাইস ব্র্যান তেলের মূল্য ১৫৭.৫০ টাকা। এছাড়া ভারত থেকে ৮ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল আমদানি করা হবে। এতে ব্যয় হবে ৭৮ কোটি টাকা। প্রতি কেজির দাম পড়বে ১০২.৩৬ টাকা। অপর প্রস্তাবে বসুন্ধরা গ্র“পের কাছ থেকে ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় হবে ৭৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা। প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম পড়বে ১৫৭.২২ টাকা।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় একটি সেতু নির্মাণসহ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে মোট ব্যয় হবে ১৮৮ কোটি টাকা। ডুমুরিয়ার সেতুর দৈর্ঘ্য হবে ৭৫০ মিটার। বাস্তবায়ন করবে এম এম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লি.। ব্যয় হবে ১০২ কোটি টাকা। বৈঠকে ‘ইমপ্র“ভিং আরবান গভর্নেন্স অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রজেক্টের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যৌথভাবে রিসোর্স প্ল্যানিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্টস এবং ডেভেলপমেন্ট ডিজাইন কনসালট্যান্টসকে পরামর্শক হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৮৬ কোটি টাকা।
সভায় কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণের জন্য ২২৫ কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধি অনুমোদন পেয়েছে। বগুড়া-নাটোর মহাসড়ক উন্নয়ন ও পায়রা বন্দরের ড্রেজিং প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাজের জন্য প্রায় ১২৩ কোটি টাকা ব্যয়ের পৃথক দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে বগুড়া (জাহাঙ্গীরাবাদ)-নাটোর মহাসড়ক যথাযথ মানসম্পন্ন ও প্রস্তুত করতে পূর্ত কাজে ব্যয় হবে ১১৪ কোটি টাকা। যৌথভাবে মীর হাবিব আলম এবং মাহবুব ব্রাদার্স প্রাইভেট লি. কাজটি বাস্তবায়ন করবে। এছাড়া পায়রা বন্দরে রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ও মেইনটেনেন্স ড্রেজিং প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে অতিরিক্ত ৯ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে।