বিদ্যুতের ট্যারিফ মূল্যসহ ১৭ প্রস্তাব অনুমোদন
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:৫৩ পিএম
দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ট্যারিফ মূল্য কেনাসহ ১৭টি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত্র মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ৩০ লাখ টন জ্বালানি তেল, ৫৫ হাজার টন সার এবং ৯০ লাখ লিটার ভোজ্যতেল। এতে মোট ব্যয় হবে ৩৩ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা।
অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পৃথক বৈঠকে চারটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। উভয় বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৈঠক শেষে বিস্তারিত তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান।
ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে সাতক্ষীরা জেলায় ১০০ মেগাওয়াট বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের ট্যারিফ অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০ বছর মেয়াদে সাসটেইনবেল এনার্জি ইন্টারন্যাশনাল লি. এটি বাস্তবায়ন করবে। প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ১৩.৫২ টাকা হিসাবে কোম্পানিকে পরিশোধ করতে হবে ৫ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা।
এছাড়া নোয়াখালীর সদর উপজেলায় ১০ মেগাওয়াট (এসি) সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের ট্যারিফ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।এটিও ২০ বছর মেয়াদে বাস্তবায়ন হবে। কোম্পানিকে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ১১.০১ টাকা পরিশোধ করতে হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৩৫৭ কোটি টাকা।
এছাড়া বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সাউদি আরামকো সৌদি আরব থেকে ২০২৪ সালের জন্য ৮ লাখ টন এরাবিয়ান লাইট ক্রুড (এএলসি) অপরিশোধিত জ্বালানি তেল (ক্রুড অয়েল) আমদানি করবে। এতে ব্যয় হবে ৬ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা। বিপিসি পৃথকভাবে ৭ লাখ টন মারবান গ্রেডের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল (ক্রুড অয়েল) আমদানি করবে। এতে ব্যয় হবে ৫ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা।
এছাড়া ২০২৪ সালের জানুয়ারি টু জুন সময়ে আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ায় আরও ১৫ লাখ ৬৫ হাজার টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করবে বিপিসি। এতে ব্যয় হবে ১৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) মরক্কোর ওপিসি এসএ থেকে ৩০ হাজার টন টিএসপি সার আমদানি করবে। এতে ব্যয় হবে প্রায় ১৩৩ কোটি টাকা। প্রতি টন সারের মূল্য পড়বে ৪০১ মার্কিন ডলার। বিএডিসি তিউনিশিয়া থেকে ২৫ হাজার টন টিএসপি সার আমদানি করবে। এতে ব্যয় হবে ১০৯ কোটি টাকা। প্রতি টন সারের মূল্য পড়বে ৩৯৬ ডলার।
টিসিবি স্থানীয় পর্যায়ে ৪০ লাখ লিটার রাইস ব্র্যান্ড তেল এবং ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল এবং সাড়ে ১২ হাজার টন মসুর ডাল কিনবে। রাইস ব্র্যান্ড তেল কেনা হবে প্রতি লিটার ১৫৮ টাকা দরে। মজুমদার এন্টারপ্রাইজ থেকে কেনা হবে। ব্যয় হবে ৬৩ কোটি টাকা। সয়াবিন কেনা হবে প্রতি লিটার ১৫৭ টাকা দরে। বসুন্ধরা কোম্পানি থেকে কেনা হবে। ব্যয় হবে ৭৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা। নাভিল নাভার কাছ থেকে কেনা হবে মসুর ডাল। প্রতি কেজি ১০৪ টাকা মূল্যে ব্যয় হবে ১০৪ কোটি টাকা।
বৈঠকে ঢাকা ওয়াসার ‘ঢাকা স্যানিটেশন ইমপ্রুভমেন্ট’ প্রকল্পের আওতায় পাগলা ক্যাচমেন্টের পশ্চিমভাগের অর্ধেক এলাকা পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এর পূর্ত কাজ অনুমোদন দেওয়া হয়। যৌথভাবে কাজ করবে জিপসাম, তাইএন ও হীফিল। এতে ব্যয় হবে প্রায় ৩৮৪ কোটি টাকা। একই প্রকল্পে পৃথক পূর্ত কাজের অনুমোদন দেওয়া হয়। এছাড়া ‘ঢাকার উত্তরায় স্বল্প ও মধ্যম আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ’ প্রকল্পের পূর্ত কাজের ভেরিয়েশন বাবদ ২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয় হ্রাস করার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ৫ কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়।
বৈঠকে নৌপরিবহণ অধিদপ্তরের একটি প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ২৯ কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধিও ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
অর্থনৈতিক ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা পিপিপি ভিত্তিতে বাস্তবায়নের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে এ বৈঠকে। এছাড়া দেশের ১৪২৫০টি কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য চলতি অর্থবছরের জন্য ৬৯৩৭৫ কার্টন ওষুধ এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লি. থেকে সরাসরি কেনার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু শিরোনামে গোপনীয় ডকুমেন্ট অবলম্বনে ধারাবাহিক তথ্যচিত্র নির্মাণ কাজ এবং আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ওপর ভিত্তি করে ড্রামা ও ওয়েব সিরিজ ‘স্বাধীনতা বীর সন্তান’ শিরোনামে বিশেষ ডকুমেন্টারির মেয়াদ ২৬ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।