নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানিসহ ১৭ প্রস্তাব অনুমোদন
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:২২ পিএম
নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানির নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে। আর দুটি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনসহ ১৭ প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে। এতে মোট ব্যয় হবে ৯ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা।
বুধবার অনুষ্ঠিত দুটি কমিটির বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৈঠক শেষে এসব বিষয় তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান।
জানা গেছে, ভারতের জাতীয় গ্রিড ব্যবহার করে নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানি করা হবে। এটি সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) আমদানি করা হবে। এতে বছরে সরকারের ব্যয় হবে ১৩০ কোটি টাকা। এটি আনতে ভেড়ামারার এইচভিডিসি সাব-স্টেশন ব্যবহার করা হবে।
এ ছাড়া সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ২টি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন এবং একটি ভেরিয়েশন বাবদ ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে টাঙ্গাইলে বিদ্যুৎকেন্দ্র যৌথভাবে রিনিউবল ইলেক্টিসিটি লিমিটেড ইউকে, বাদল কন্সট্রাকশন লিমিটেড এবং জি-টেক সলিউশন লিমিটেড স্থাপন করবে। ২০ বছর মেয়াদে ‘নো ইলেক্ট্রিসিটি, নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে চুক্তি সম্পাদনের অনুমোদন দেওয়া হয়। কোম্পানিকে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ১০.৯৯ টাকা হিসাবে প্রায় ৩ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে সরকারের।
কক্সবাজারের বিদ্যুৎকেন্দ্র কনসোর্টিয়াম কেএআই বাংলাদেশ অ্যালুমুনিয়াম লিমিটেড এবং আলটেক অ্যালুমুনিয়াম ইন্ডাস্ট্রিজ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। ‘নো ইলেক্ট্রিসিটি নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে এটি পরিচালিত হবে। ২০ বছর মেয়াদে এই কোম্পানিকে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ১০.৯৮ টাকা দিতে হবে। এতে ৩ হাজার ৫৫৬ কোটি পরিশোধ করতে হবে।
এ ছাড়া ‘সৈয়দপুর ১৫০ মেগাওয়াট সিম্পল সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ’ প্রকল্পের ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ২৮ কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।
এছাড়াও রোমানিয়া থেকে দুই কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল আমদানি করা হবে। প্রতি লিটারের দাম পড়বে প্রায় ১৫৫ টাকা। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে বিক্রির লক্ষ্যে এ তেল আনা হবে। মোট খরচ হবে ২৮৩ কোটি টাকা। মেসার্স অ্যালুলাইড মেরিটাইম প্রা. লি. ও মার্ক এক্সাম লি. এই সয়াবিন তেল সরবরাহ করবে।
এ ছাড়া বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার জন্য ৬৭ হাজার ৬৯১টি এসপিসি পোল কেনা হবে। এতে ব্যয় হবে ২০৭ কোটি টাকা। একই প্রকল্পের আওতায় ঢাকা-ময়মনসিংহ বিভাগের জন্য কেনা হবে ৩৩ হাজার ৮৪৫টি এসপিসি পোল। এতে ব্যয় হবে ১০৩ কোটি টাকা।
এদিকে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় কুশিয়ারা নদীর উপর ৮৩৮ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ হচ্ছে। এতে ব্যয় হবে ১৪৪ কোটি টাকা। পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্পের প্যাকেজ নং-ডব্লিউ-১১১ এর পূর্ত কাজ ক্রয়ের জন্য এমবিইএল ও এসইএলকে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলা হেডকোয়ার্টার-আমুরা-মাথিউরা-বিয়ানীবাজার সড়কে কুশিয়ারা নদীর উপর সেতুটি নির্মাণ করা হবে।
এদিকে ২০২৪ সালের জন্য প্রথম এক কার্গো এলএনজি আমদানি এবং কক্সবাজারে সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিং কোম্পানি লিমিটেডের কর অব্যাহতির পৃথক ২টি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের এই দুটি প্রস্তাবে অর্থের পরিমাণ ৬৯৫ কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার ২০৮ টাকা।
এছাড়াও রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় মরক্কো, সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ২ লাখ মেট্রিক টন সার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে কাফকো থেকে ৪০ হাজার টন সার কেনা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে এক হাজার ১৮৩ কোটি ৬২ লাখ ৪০ হাজার ৬৫০ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) কর্তৃক এক লাখ ২০ হাজার টন ডিএপি সার এবং বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) কর্তৃক এক লাখ ২০ হাজার টন ইউরিয়া সার রয়েছে। এ ছাড়া ৬৪ কোটি ৬০ লাখ টাকার ১০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক এসিড কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।