Logo
Logo
×

অন্যান্য

জ্বালানি কেনার সামর্থ্য হারাবে গ্রাহক: ক্যাব

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:৫৫ পিএম

জ্বালানি কেনার সামর্থ্য হারাবে গ্রাহক: ক্যাব

বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের বিশেষ বিধান প্রত্যাহার এবং বিদ্যুতের দাম ঘোষণার এখতিয়ার বিইআরসির হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। সংস্থাটি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছে, জ্বালানি খাতের বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে এক সময় সব ধরনের গ্রাহক জ্বালানি কেনার সক্ষমতা হারাবে। 

বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘জ্বালানি রূপান্তরে সুবিচার চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এমন আশঙ্কার কথা বলেন সংগঠনের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম। 

তিনি বলেন, এ খাতকে সীমাহীন বাণিজ্যিকীকরণ এবং আমদানিনির্ভর ও জবাবদিহি উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে এক সময় সব ধরনের গ্রাহক জ্বালানি কেনার সামর্থ্য হারাবে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ এবং জ্বলানি খাতকে শক্তিশালী করতে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে হবে। তাছাড়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০ প্রত্যাহার করতে হবে।

এম শামসুল আলম আরও বলেন, সরকার জ্বালানি খাতকে সেবা খাত থেকে বাণিজ্যিক খাতে পরিণত করেছে। ২০২৪ সালের মাঝামাঝি এ খাত যে ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে যাবে তা নিয়ে আমরা শঙ্কার মধ্যে আছি। প্রতিটি বাড়ির ছাদে প্রতিবছর ৫০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। কেন এ প্রকল্পের দিকে যাচ্ছি না আমরা- সেই প্রশ্নও রাখেন তিনি।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বদরুল ইমাম বলেন, প্রতিবছর যদি ৫-৬টা করে গ্যাস ক‚প অনুসন্ধান চালানো হয় তাহলে আমার মতে ৫ বছরের মধ্যে দেশে গ্যাস সম্পদ বা গ্যাস জ্বালানির অভাব থাকবে না। তিনি বলেন, দেশে জ্বালানি সংকটের যে বিকল্প, তাতে আমরা নজর দিই না। এর বিকল্প হলো, নিজের দেশের সম্পদের দিকে তাকানো। বাংলাদেশের মাটির নিচে প্রচুর ভূ-সম্পদ রয়েছে। বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোও নিশ্চিত করেছে যে দেশে কি পরিমাণ গ্যাসের সম্ভাবনা রয়েছে। 

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এমএম আকাশ বলেন, বিদ্যুৎ ছাড়া প্রবৃদ্ধি সম্ভব নয় এটা আমরা বিশ্বাস করি। কিন্তু এটা হতে হবে জনগণের কল্যাণে। সুন্দরবনে (রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র) যেটা করা হয়েছে তাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে কিন্তু দীর্ঘ সময়ের জন্য ক্ষতি। 

বিদ্যুৎ সস্তা হতে হবে উল্লে­খ করে তিনি আরও বলেন, একটা জিনিস তৈরি করে সেটা যদি মানুষ ব্যবহার না করতে পারে তা হলে তো কোনো লাভ হলো না। এর জন্য এটা ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকতে হবে। নো প্রফিট নো লস বেসিসে বিদ্যুৎ তৈরি করতে হবে।

উন্নয়ন অর্থনীতিবিষয়ক গবেষক মাহা মির্জা বলেন, বর্তমানে আমাদের জ্বালানি খাতকে একটা আমদানিনির্ভর প্রকল্প খাতে পরিণত করা হয়েছে। আমাদের ইন্ডিপেন্ডেট খাতকে আমদানিনির্ভর করা হলো। আমাদের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য বছরে ১ কোটি টন কয়লা আমদানি করতে হবে বিদেশ থেকে। এতে খরচ হবে ৩০ হাজার কোটি টাকা। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) ক্ষেত্রেও ৩০ হাজার কোটি টাকা হবে। তার মানে বছরে আমাদের ৬০ হাজার কোটি টাকা জ্বালানি ক্রয়ে খরচ হবে। কৃষকের জমি অধিগ্রহণ করে, উর্বর জমি ও মৎস্য উৎপাদন ব্যাহত করে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সুফলের চেয়েও কুফল বেশি। 

সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি গোলাম রহমান। মূল বক্তব্য দেন জ্বালানিবিষয়ক সাংবাদিক আরিফুজ্জামান তুহিন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবীর ভূঁইয়া।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম