‘স্বার্থের জন্য মানবাধিকারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বিদেশিরা’
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ০৭:১৭ পিএম
বাংলাদেশের রাজনীতিতে সম্প্রতি বিদেশি কয়েকটি রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে উদ্বেগ প্রকাশ করে দেশের রাজনীতিতে বিদেশি হস্তক্ষেপ গ্ৰহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সম্মিলিত নাগরিক সমাজের সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমেদ।বিদেশিরা তাদের স্বার্থের জন্য মানবাধিকারকে একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বৈদেশিক হস্তক্ষেপ বন্ধসহ জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতির প্রতিবাদে’ নাগরিক সমাজের মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্মিলিত নাগরিক সমাজের সহ-সভাপতি ও আইডিইবির সভাপতি প্রকৌশলী একেএমএ হামিদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ, ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলেজের (ইউজিভি) সাবেক উপাচার্য প্রফেসর জাহাঙ্গীর আলম, বাংলাদেশ উন্নয়ন পরিষদের পরিচালক ড. নিলুফার বানু, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব নওজেশ আলী খান ও বিশিষ্ট সাংবাদিক কাশেম হুমায়ুন, প্রফেসর ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী, সাবেক অতিরিক্ত সচিব বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য, ড. উম্মে হাসান জলমল, নাট্যব্যক্তিত্ব ম হামিদ, আইডিইবির সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুর রহমান, কর্মজীবী নারী প্রতিনিধি রাবেয়া আক্তার, বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. খবির হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম আব্দুল মোতালেব, মির্জা এটিএম গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার এদেশের মানুষ সংরক্ষণ করে। এক্ষেত্রে বিদেশি হস্তক্ষেপ গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
তারা বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামে যেসব বহিঃশক্তি বিরোধিতা করেছিল, তারাই বাংলাদেশের অগ্রগতিতে নগ্ন হস্তক্ষেপ করছে, যা গ্রহণযোগ্য নয়। ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় বাংলাদেশ নিজের পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশ সমৃদ্ধ হচ্ছে বলে বৈশ্বিক মোড়লরা বাংলাদেশকে চাপ প্রয়োগ করছে। এই চাপ মোকাবিলায় মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এদেশে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে অব্যাহত রাখতে হবে।
সম্মিলিত নাগরিক সমাজের সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জমান বলেন, আমাদের নির্বাচন আমরা করব। বাইরের কোনো হস্তক্ষেপ এখানে গ্রহণযোগ্য নয়। বাইরের যারা এখানে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছেন তারা এটি বন্ধ করেন। বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। আমরা নিজেদের কাজগুলো নিজেরাই করতে পারি।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে অনেকের বিরোধিতা সত্ত্বেও এ দেশকে মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন করেছি। আবারও তাদেরকে তাড়াবার জন্য যা কিছু করার তা আমরা করব। আমাদের স্বাধীনতার জন্য আমরা খুবই গৌরবান্বিত।
ড. কাজী খলীকুজ্জমান বলেন, যারা একসময় বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, তারা আবার এদেশের এগিয়ে যাওয়ার মধ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন। আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা যুদ্ধ করে এদেশ স্বাধীন করেছি। আমাদের নীতিনির্ধারণ আমরা নিজেরা করব। বড় কয়েকটি দেশের সঙ্গে কিছু ছোট দেশ একত্রিত হয়ে আমাদের দেশে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে কিছু বিদেশিরা আমাদের দেশে অপতৎপরতা চালাচ্ছে। এটার একটাই কারণ, সেটা হলো আমরা অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের সামাজিক অগ্রগতি অনেক হচ্ছে, এগুলো কারও কারও সহ্য হচ্ছে না।
বিদেশিদের হস্তক্ষেপ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা কোনো খবরদারি চাই না। আমরা বন্ধুত্ব চাই। যারা বন্ধু হিসেবে আসবে আমরা তাদেরকে সহযোগিতা করব। কিন্তু হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করলে আমরা সেটির প্রতিবাদ করব। আপনারা আপনাদের স্বার্থের জন্য মানবাধিকারকে একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন। আমাদের দেশের সিদ্ধান্ত আমরা নেব। আমাদের সিদ্ধান্ত আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা নেবে। আমাদের জনগণ ম্যান্ডেট দেবে সে অনুযায়ী দেশ পরিচালিত হবে।