কিছু প্রবাসী বাংলাদেশি ও সাংবাদিক দেশ ধ্বংসে নেমেছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:২৮ পিএম
কিছু প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক এবং সাংবাদিক দেশ ধ্বংসের প্রয়াসে নেমেছেন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে প্রতিদিন যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্য করার পেছনে দেশটিতে অবস্থানরত এই প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক এবং কয়েকজন প্রবাসী সাংবাদিককে তিনি দায়ী করেন।
শুক্রবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ফরেন অফিস স্পাউসেস অ্যাসোসিয়েশনের (ফোসা) উদ্যোগে দিনব্যাপী ইন্টারন্যাশনাল চ্যারিটি বাজারের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে এ অভিযোগ করেন মন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে আমেরিকার প্রতিদিন একটি বক্তব্য থাকে। তার কারণ, আমাদের প্রবাসী বাঙালিরা। তারা তাদের ত্যক্ত করে। তারা তাদের জোর করে আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ইনভলভ করার প্রচেষ্টা করে। আমেরিকা বলেছে, তারা বাংলাদেশে কোনো দলকে সমর্থন করে না। সব দলই তাদের কাছে সমান। তারপরও এই বাঙালি সাংবাদিকরা জোর করে টেনে তাদের আমাদের এই ডমেস্টিক ইস্যুতে ইনভলভ করার চেষ্টা করে। এটা দুঃখজনক। খুবই দুঃখজনক যে আমাদের লোকেরাই আমাদের দেশকে ধ্বংস করার জন্য প্রচেষ্টা করছে।
তাদের অনেকে বাহবা পাওয়ার জন্যও এমনটা করছে মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশটা আপনার আমার সবার। আজকে আওয়ামী লীগ সরকার আছে কালকে নাও থাকতে পারে। কিন্তু দেশ তো আপনার। বঙ্গবন্ধু দেশটা তৈরি করে দিয়ে গেছেন। আর শেখ হাসিনা দেশকে সম্মানের আসনে নিয়ে গেছেন। সরকারের বিরোধিতা করে দেশটাকে ধ্বংস করার প্রয়াস থেকে দূর হন। তারা অনেকে বাহবা পাওয়ার জন্য এই ধরনের কর্মকাণ্ড করে।
বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিয়ত কথা বলছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র মুখোমুখি অবস্থানে যাবে কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নিশ্চয়ই যাবে না। পৃথিবীর ১৭৩টি দেশে নির্বাচন হয়। আমেরিকা অন্য কোনো দেশের নির্বাচন নিয়ে কথা বলে না, কিন্তু বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলে।
মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বন্ধু দেশ। তারা আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করতে চায়। সেজন্য তারা সময়-সময় অনেক উপদেশ দেয়। আমরা সেই উপদেশগুলো যাচাই-বাছাই করে যেটা ভালো মনে হয়, আমাদের দেশের মানুষের মঙ্গলের জন্য সেটা গ্রহণ করি।
সংলাপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, তাদের থেকে একটা প্রস্তাব এসেছে। আওয়ামী লীগ কখনও সংলাপে পিছপা হয় না। আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী দল। আওয়ামী লীগ কখনও পেছনের দরজা দিয়ে সরকারে আসেনি। সব সময় নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারে এসেছে।
ক্ষমতাসীন দল নির্বাচন চায় উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা নির্বাচন চাই। আমরা কাউকে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে দেব না। আর এ নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার জন্য যদি কোনো বন্ধু রাষ্ট্র সহায়তা করে, তাকে স্বাগতম। আমেরিকা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলছে।
নির্বাচনে সংঘাতের আশঙ্কা নিয়ে মোমেন বলেন, উপমহাদেশে নির্বাচনের সময় যথেষ্ট সংঘাতের আশঙ্কা থাকে। আমাদের পাশের গণতান্ত্রিক দেশেও হয়। আমাদের দেশেও হয়। তবে গত কয়েক বছরে এই পরিস্থিতির কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। একটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য সবার আন্তরিকতা প্রয়োজন।
বিএনপির সমালোচনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা ঔপনিবেশিক মানসিকতার মধ্যে আছে, তাদের পরিবর্তন হতে হবে। আশা করি, তারা নির্বাচনমুখী হবেন। আর আমরা শান্তিপূর্ণভাবে একটা মডেল নির্বাচন করতে চাই। সেখানে সবার সহযোগিতা লাগবে।