প্রধানমন্ত্রী বেলজিয়াম যাচ্ছেন মঙ্গলবার
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৪১ পিএম
গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামের বৈঠকে যোগ দিতে ৩ দিনের সফরে মঙ্গলবার বেলজিয়াম যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার এই সফরে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ৩৫০ মিলিয়ন ইউরোর একটি ঋণ সহায়তা চুক্তি স্বাক্ষর হবে।
প্রধানমন্ত্রীর সফর নিয়ে রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হবেন।
ড. মোমেন জানান, প্রধানমন্ত্রী ২৫ অক্টোবর ইউরোপিয়ান কমিশনের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ইউরোপিয়ান ট্রেড কমিশনার এবং ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জানিয়ে তিনি বলেন, সফরকালে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ ও ইউরোপীয় ইনভেস্ট ব্যাংকের মধ্যে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ৩৫০ মিলিয়ন ইউরোর একটি ঋণ সহায়তা চুক্তি স্বাক্ষর হবে। বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে অনুদান হিসােব প্রদানের জন্য ইউরোপিয়ান কমিশন এবং ইউরোপীয় ইনভেস্ট ব্যাংকের মধ্যে ৪৫ মিলিয়ন ইউরোর একটি চুক্তিও সই হবে। এছাড়া বাংলাদেশ সরকার এবং ইউরোপিয়ান কমিশনের মধ্যে ১২ মিলিয়ন ইউরোর একটি অনুদান চুক্তি স্বাক্ষর হবে। বাংলাদেশের সামাজিক খাতে ৭০ মিলিয়ন ইউরোর পাঁচটি আলাদা অনুদান চুক্তিও স্বাক্ষর হবে।
ড. মোমেন বলেন, ‘কঠিন সময়ে এ সফরের গুরুত্ব অনেক বেশি।’ এখন কঠিন সময় কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এখন নির্বাচনের ঠিক আগমুহূর্ত। আমরা জনগণের কাছে যাচ্ছি, তাদের জন্য কী করতে পেরেছি আর কী করতে পারিনি তা বলার সময়। এ সময় বিদেশে যাওয়ার সময় কোথায়। সে কারণে বলেছি কঠিন সময়। মনে রাখবেন জনগণই আমাদের শক্তি। জনগণ ছাড়া আমাদের কোনো শক্তি নেই।’
তিনি বলেন, ‘গাজায় ইসরাইলের হামলার প্রতিবাদে অনেক দেশ প্রতিবাদ করতে দেয়নি। জনগণ মিছিল বের করলে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। আমাদের দেশে কি কাউকে গ্রেফতার করা হয়েছে? মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের মতপ্রকাশ করছেন। তারপরও গণতন্ত্র নেই, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই বলে প্রচারণা হয়।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে তো স্কুলে ঢুকে কিংবা রাস্তায় দাঁড়িয়ে গুলি করে মানুষ মারা হয় না। সে বিষয়টিতে আপনারা লেখেন না। ভারতে অনেকগুলো মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কেউ কি প্রতিবাদ করেছে বা করতে পেরেছে। এখানে তো মিডিয়া পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করছে। অথচ দেশে অপপ্রচার এখন তুঙ্গে। যা হয়নি তা বানিয়ে বলা হয়।’
ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার অনেক দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস নেই। ফলে সেখানে দূতাবাস খোলা হবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘দূতাবাস খোলা ব্যয়বহুল। তারপরও আমরা অন্যভাবে সেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। যেসব দেশ থেকে বেশি রেমিট্যান্স আসে, সেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মিশন খোলা হয়। এছাড়া অনেক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দেশ হলে রেমিট্যান্স না এলেও মিশন খোলা হয়।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল আসবে। তাদের খরচ সরকার বহন করবে না। তবে বাংলাদেশে অবস্থানকালে তাদের লজিস্টিক সাপোর্ট দেওয়া হবে। ইইউ বলেছে, তারা বড় দল পাঠাবে না, তাদের বাজেটে সমস্যা। সব দেশের জন্যই এখন বাজেটে সমস্যা। সে কারণে সাতজনের একটি প্রতিনিধি দল পাঠাবে।’
বিএনপির আগামী কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘২৮ অক্টোবর কিছুই হবে না। গুজবে কান দেবেন না।’