বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান বলেছেন, দেশের ১ কোটি বেশি মানুষ ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত। প্রতিনিয়তই এ রোগে আক্রান্ত হওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে এবং মৃত্যুও হচ্ছে। ফলে ডায়াবেটিস রোগ সাধারণ মানুষের নতুন বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে আশার কথা হলো এখন সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে। এই রোগের দেশি ওষুধ প্রস্তুত করা হচ্ছে।

বুধবার বারডেম হাসপাতাল মিলনায়তনে বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতির প্রতিষ্ঠাতা জাতীয় অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিমের ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম নিজ বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন। সমিতি এ দিনটিকে ‘ডায়াবেটিস সেবা দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকে। 

দিবসটি উপলক্ষ্যে বুধবার সকালে ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিমের বনানীর কবরস্থানে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে বারডেম জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এবং বিআইএইচএস জেনারেল হাসপাতাল ও এনএইচএন-এর বিভিন্ন কেন্দ্র সংলগ্ন স্থানে বিনামূল্যে ডায়াবেটিস নির্ণয় ও স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও বারডেম অডিটোরিয়ামে এক স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডায়াবেটিস সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক একে আজাদ খান।

স্মরণসভায় ড. আতিউর রহমান বলেন, ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিমের সেবাদানের মহান মন ছিল। এজন্য বারডেমের মতো হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।

বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন জাতীয় অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিমের স্মৃতিচারণ করে বলেন, এখন চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠলেও চিকিৎসক ইব্রাহিম ছিলেন বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী। তার কোনো রোগী হাসপাতালে না আসলে রোগীর বাড়িতে চিঠি পাঠাতেন ডা. ইব্রাহিম। এটা তার আলাদা গুণ ছিল। ৫০ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগী জানেন না তাদের ডায়াবেটিস আছে। শুধু বাংলাদেশে নয়, অন্য দেশের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। তার এই পদ্ধতি নতুন করে চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতি (বাডাস)। করা হয়েছে নতুন অ্যাপ।  

বাডাসের ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক এম শওকত হাসান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ডায়াবেটিস চিকিৎসার পাশাপাশি আগামী দিন ক্যানসার শনাক্ত ও চিকিৎসা ব্যবস্থা করবে বারডেম। এজন্য আমেরিকার একটি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে।

স্মরণসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বারডেমের মহাপরিচালক অধ্যাপক এমকেআই কাইয়ুম চৌধুরী ও ডায়াবেটিস সমিতির সহ-সভাপতি আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী প্রমুখ। 

ইব্রাহিম মেমোরিয়াল ওরেশন-এ স্মারক বক্তৃতা দেওয়ার জন্য অধ্যাপক কাজী দীন মোহাম্মদকে স্বর্ণপদকে ভূষিত করা হয়।