জাতীয় জনসম্মিলনে বক্তারা
এসডিজির অর্জনকে বাধাগ্রস্ত করছে ক্ষুধা দারিদ্র্য বৈষম্য
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৫২ পিএম
দারিদ্র্য, ক্ষুধা ও অসমতামুক্ত সমাজ তৈরি করাই এসডিজির প্রধান উদ্দেশ্য। জাতিসংঘের উন্নয়ন এজেন্ডা ২০৩০ অর্জনে বাংলাদেশ অঙ্গীকারাবদ্ধ। ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। কিন্তু, কোভিড-১৯ অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতি করেছে। এর ফলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী আরও দারিদ্র্য এবং বিপন্নতার মুখোমুখি হয়েছে। পাশাপাশি বাজার ব্যবস্থারও চরম অবনতি ঘটেছে। এর ফলে এক সংকটময় সন্ধিক্ষণ উপনীত হয়েছে। যেখানে ক্ষুধা, দারিদ্র্য, বৈষম্য ও জলবায়ু সংকট এসডিজির অর্জনকে বাধাগ্রস্ত করছে।
শনিবার রাজধানীর প্রেস ক্লাবে এসডিজি অ্যাকশন এলায়েন্স বাংলাদেশ ও গ্লোবাল অ্যাকশন এগেনইস্ট পভার্টি (জিক্যাপ) আয়োজিত স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-এসডিজি ও মধ্যবর্তী পর্যালোচনাবিষয়ক জাতীয় জনসম্মিলনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে সংঘটিত অর্থনৈতিক সংকোচন, বৈশ্বিক সংঘাত ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে অর্জিত অগ্রগতিকে ঝুঁকিতে ফেলছে। যার প্রভাবে গ্রাম পর্যায় থেকে শহর এলাকায় দারিদ্র্যের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট, বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা ও নয়া উদারবাদী অর্থনৈতিক নীতিতে বাংলাদেশে বৈষম্য না কমে, অনেকাংশে বেড়েছে।
তারা আরও বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ছিল ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন সঠিক কৌশল ও স্বাস্থ্য খাতে উপযুক্ত নেতৃত্ব। সব মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হলে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ১৫ শতাংশে উন্নীত করতে হবে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থনীতিবিদ ড. জামাল উদ্দিন বলেন, পাকিস্তান আমলে দেশের সব সম্পদ ধ্বংস করা হয়েছে। কিন্তু ওই সময়কার যে রাজনৈতিক দর্শন ছিল সেই দর্শন এখন আর নেই। সংবিধান, বিচারব্যবস্থা, ব্যাংক ও রাষ্ট্র যদি তার নিয়ম অনুযায়ী না চলে, তবে সেখানে বৈষম্য তৈরি হবে। সেখানে লুটপাটও হবে। বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে অর্থ প্রাচার হচ্ছে। কিন্তু সরকার যদি চায় তবে, এখনি অর্থ পাচার বন্ধ করতে পারে। তার জন্য প্রশাসক ও রাজনীতিবিদসহ সবাইকে ঈমানদার ও দেশপ্রেমিক হতে হবে।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসডিজি অ্যাকশন এলায়েন্সের জাতীয় সমন্বয়কারী আবদুল আউয়াল বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে উপকূলীয় অঞ্চলসহ ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে মানুষের দুর্গতি বেড়ে গেছে। বিভিন্ন জায়গায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে পানির লবণাক্ততা বাড়ছে। ফলে সুপেয় পানি পাওয়া যাচ্ছে না। বিআইডিএসের গবেষণায় উঠে এসেছে, ওইসব অঞ্চল থেকে মানুষ শহরে চলে আসছে। এর ফলে শহরেও দারিদ্র্যের হার বেড়ে গেছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের পরিচালক রাহা নবকুমার, দুস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ডা. দিবালোক সিংহ, সেভ দ্য চিলড্রেনের অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড ক্যাম্পেইন ম্যানেজার সামিয়া আহমেদ, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি বদরুল আলম, গার্মেন্টস ট্রেড ইউনিয়ন নেত্রী সালেহা ইসলাম শান্তনা, এনজিও প্রতিনিধি আফজাল হোসেন, রুহী দাস, আসমা আক্তার মুক্তা, বদরুল আলম, কে জি এম ফারুক, বিমল রবিদাস, নাগরিক প্রতিনিধি মাহতাব উদ্দীন, মো. সেলিম, মনোয়ারা আক্তার মিনু, কানন প্রমুখ।