Logo
Logo
×

অন্যান্য

মসলার বাজারে অভিযানে নামছে ভোক্তা অধিদপ্তর

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৩, ০৮:৪৭ পিএম

মসলার বাজারে অভিযানে নামছে ভোক্তা অধিদপ্তর

প্রতি কেজি আদার আমদানি মূল্য ১২৯-১৩০ টাকা। এছাড়া দেশি ও অন্যান্য আদার দামেও ভিন্নতা রয়েছে। কিন্তু রাজধানীর সর্ববৃহৎ আড়ৎ শ্যাম বাজারে সব ধরনের আদা ২৬০-২৮০ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে। এতে খুচরা বাজারে ৩০০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এই পণ্য। এছাড়াও জিরার মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো হয়েছে, যা অযৌক্তিক। 

তাই কুরবানির ঈদের আগে আদাসহ অন্যান্য মসলার দাম নিয়ন্ত্রণে সোমবার থেকে অভিযানে নেমে কঠোরভাবে তদারকি করা হবে। অনিয়ম পেলে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এএইচএম সফিকুজ্জামান।

রোববার মসলা পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের সভা কক্ষে সভা চলাকালীন মহাপরিচালক এসব কথা বলেন।

এ সময় অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন খুচরা-পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ী এবং সমিতির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

মহাপরিচালক বলেন, রোজার ঈদের পর থেকেই মসলা পণ্যের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে আদার দাম অনেক বেড়েছে। সেটা নিয়ে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা কাজ করছেন। চট্টগ্রাম খাতুনগঞ্জ থেকে শুরু করে রাজধানীর শ্যামবাজার, মৌলভীবাজার থেকে তথ্য নিয়েছি। গোয়েন্দা সংস্থারাও তথ্য নিয়েছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে বুঝা যাচ্ছে- সামনে কুরবানির ঈদ ঘিরে বাজারে অস্থিরতা তৈরি করা হচ্ছে। আমাদের কাছে যে তথ্য আছে- বিভিন্ন দেশের আদার মানের ওপরে নির্ভর করে প্রতি কেজি আমদানি মূল্য ১২৯-২৫০ টাকা। কিন্তু দেশের আড়তে বিক্রি হচ্ছে ২৬০-২৮০ টাকা। ২৫০ টাকার আদা ২৬০ বা ২৮০ টাকায় বিক্রি এটা মানা যায়। কিন্তু ১২৯ টাকার কেনা আদাও আছে। সেই আদা আড়ৎ থেকেই ২৬০-২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এটা কেন হবে?

তিনি জানান, চায়নার আদা বেশ কিছুদিন ধরে আমদানি হচ্ছে না। কিন্তু সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে চায়নার আদা প্রতি কেজি ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ভোক্তার ডিজি বলেন, বাজারে আমরা একটি শৃঙ্খলা আনতে চাই। বাজারে মূল্য তালিকা রাখতে হবে। ক্রয় রশিদ ও আমদানির মূল্যের তথ্য রাখতে হবে। কিন্তু আমরা সেটা দেখছি না। আমরা বারবার বলছি- ব্যবসায়ী সমিতির এসব দেখতে হবে। কিন্তু তার ব্যত্যয় দেখছি। আপনারা না পারলে বলেন আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি। ব্যবসায়ী সমিতি অনেক সময় অসাধু ব্যবসায়ীদের সেল্টার দিচ্ছে। এটা ঠিক না।

তিনি জানান, কুরবানির ঈদ ঘিরে সোমবার থেকে বাজারে কঠোরভাবে তদারকি করা হবে। এ সময় এক সপ্তাহ আমরা লক্ষ্য করে দেখব। এরপর সরকারের কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দেব। আমরা চাই ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করবে। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের আদা চায়না আদা বলে বেশি দামে বিক্রি করবে, এটা ঠিক না। এলসি কত টাকা দিয়ে করা হচ্ছে- তা প্রতিদিন পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। চায়না আদা আসে নাই, কিন্তু চায়না আদা বলে বাজারে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের উপ-পরিচালক মাহমুদ বলেন, জিরার আন্তর্জাতিক বাজার দরের চাইতেও কম দামে এলসি খোলা হয়েছে।  এতে দাম হয় ৩৩২-৩৩৫ টাকা কেজি। কিন্তু বাজারে ৮০০-৮৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এলসি থেকে খুচরা বাজারে দামের অনেক পার্থক্য। পাশাপাশি আদা আমদানি হয়েছে প্রতি কেজি ১৭০-১৮০ টাকা। পরিবহণে ১৫ শতাংশ নষ্ট হয়। সে লোকশান ধরেও দেশে আড়তে বিক্রয় মূল্য অনেক বেশি।

ব্যবসায়ীরা জানান, পণ্য আমদানির পর পোর্টে মালামাল আটকে যাচ্ছে। এ জন্য সেখানে ভাড়া দিতে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে যে টাকা বাড়তি গুনতে হচ্ছে তা পণ্যের সঙ্গে যোগ হচ্ছে। কারণ কোনো ব্যবসায়ী লস দিয়ে বিক্রি করবে না। তাই পণ্যের আমদানি মূল্যের সঙ্গে বিক্রয় মূল্য মিল থাকছে না।

ক্যাবের প্রতিনিধি ও ভোক্তা কণ্ঠের সম্পাদক আব্দুল হান্নান বলেন, সব চাইতে আমাদের জন্য হুমকির সময় হচ্ছে কুরবানির ঈদের আগের ১৫ দিন। গরম মসলা, পেঁয়াজ, আদাসহ অন্যান্য মসলা পণ্যের দাম বাড়ানো হয়। এ সময় বাজার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে ভোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ জন্য সার্বিক তদারকি বৃদ্ধি প্রয়োজন।

ভোক্তা অধিদপ্তরের পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, সারা বছর মসলার বাজার ঠিক ছিল। এখন কুরবানির ঈদ ঘিরে বাড়তে শুরু করেছে। ব্যবসায়ীরা বাড়াচ্ছে। মানুষের পকেটের টাকা হাতিয়ে নিতে সবাই মরিয়া। বাজার নিয়ে ঈদের আগে যে অপপ্রয়াস তা দেখা যাচ্ছে। কারা কারা করছে তা আমাদের অভিজ্ঞতা আছে। বাজারে কঠোর ব্যবস্থা নেব। যে প্রতিষ্ঠানে মূল্য তালিকা টাঙানো না হবে তাদের এক দিনের জন্য বন্ধ এবং ক্রয়-বিক্রয় রশিদ না রাখলে তিন দিনের জন্য বন্ধ রাখব তাদের প্রতিষ্ঠান।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম