Logo
Logo
×

অন্যান্য

দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জাহাজ ভিড়ল মাতারবাড়ীতে

Icon

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৪৮ পিএম

দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জাহাজ ভিড়ল মাতারবাড়ীতে

চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩৬তম বর্ষপূর্তির দিনে মাতারবাড়ীতে ভিড়েছে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জাহাজ। ২২৮ মিটার লম্বা ও সাড়ে ১৩ মিটার ড্রাফটের জাহাজটির ধারণ ক্ষমতা ৮০ হাজার টন। তবে এটি ৬৩ হাজার টন কয়লা নিয়ে এসেছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় একথা জানান। চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩৬তম দিবস উপলক্ষ্যে বন্দরের শহীদ মো. ফজলুর রহমান মুন্সী অডিটোরিয়ামে এ সভার আয়োজন করা হয়।

চট্টগ্রাম বন্দরের অংশ হিসাবে কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে। এখনও নির্মাণ কাজ শুরু না হলেও চ্যানেল দিয়ে জাহাজ ভেড়ানো হচ্ছে পাশে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য নির্মিত জেটিতে। ‘আউসো মারো’ নামের জাহাজটিতে করে ইন্দোনেশিয়ার সমুদ্রবন্দর থেকে আনা কয়লা মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহার করা হবে বলে জানা গেছে। এর আগে চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বোচ্চ ২০০ মিটার লম্বা ও ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভেড়ানো হয়েছিল।

গভীর সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রমের অগ্রগতি প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, মাতারবাড়ী পোর্ট ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের নির্মাণকাজ শেষ হলে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বেড়ে যাবে ৩-৪ গুণ। প্রকল্পের ২৮৩ দশমিক ২৩ একর জমি জেলা প্রশাসন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিয়েছে। নির্মাণ কাজের ঠিকাদার নিয়োগের লক্ষ্যে দরপত্রের কারিগরি মূল্যায়ন শেষ হয়েছে। বর্তমানে আর্থিক মূল্যায়ন চলছে। আশা করা যায়, চলতি বছর টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শুরু হবে। ইতোমধ্যে মাতারবাড়ী চ্যানেলে কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য নির্মিত জেটিতে ১২০টির বেশি জাহাজ ভেড়ানো হয়েছে। টার্মিনাল নির্মিত হলে এখানে ৩০০ মিটার লম্বা ও ১৬ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভেড়ানো যাবে। ১০ থেকে ১২ হাজার টিইইউএস ধারণক্ষমতার কনটেইনার জাহাজ হ্যান্ডলিং করা যাবে। যা দেশের অর্থনীতিতে মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।

তিনি বলেন, মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর থেকে ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন দেশে সরাসরি মাদার ভেসেল সার্ভিস চালু করা যাবে। তাই আমাদের আর ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দর ব্যবহার করে পণ্য আনা-নেওয়া করতে হবে না। এতে সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে। আরও ৪০-৫০ বিলিয়ন ইউএস ডলার আয় করা যাবে। এই বন্দরটিই হবে রিজিওনাল হাব ও ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দর; যা ভারত, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, শ্রীলংকাসহ প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশ ব্যবহার করতে পারবে। শুধু বাংলাদেশের তিনটি বন্দর চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা বন্দরের পণ্য হ্যান্ডলিং করলেই এটি ট্রান্সশিপমেন্ট হাব হয়ে যাবে। বর্তমানে শ্রীলংকা, পোর্ট কেলাং ও সিঙ্গাপুর ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দর যে সেবা দিচ্ছে মাতারবাড়ীতে তার চেয়েও ভালো সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।

চট্টগ্রাম বন্দরের বহুল প্রত্যাশিত বে-টার্মিনাল প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে জানিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, বে-টার্মিনালের ফিজিবিলিটি আপডেট, মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন, মাল্টি পারপাস টার্মিনালের ডিটেইল ড্রয়িং ডিজাইন প্রস্তুত করার জন্য আমরা দক্ষিণ কোরয়িার মেসার্স কুনহুয়া জেভিকে পরামর্শক হিসাবে নিয়োগ দিয়েছিলাম। তারা চ‚ড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করেছে। আমরা সেই রিপোর্ট মূল্যায়ন করে সন্তুষ্ট হয়েছি। ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট তৈরির কাজ শেষ পর্যয়ে। বে-টার্মিনালে তিনটি টার্মিনাল থাকবে। এর মধ্যে দুটি কনটেইনার টার্মিনাল পিপিপি জিটুজি ভিত্তিতে কনসেশনে প্রাইভেট অপারেটর দ্বারা পরিচালনা করা হবে। এর মধ্যে একটি সিঙ্গাপুরভিত্তিক পোর্ট অব সিঙ্গাপুর অথরিটি এবং অন্যটি দুবাইভিত্তিক ডিপি ওয়ার্ল্ড পরিচালনা করবে বলে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। অপর টার্মিনাল বন্দর কর্তৃপক্ষ নির্মাণ ও পরিচালনা করবে।

পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, এটি পরিচালনার জন্য প্রাথমিকভাবে সৌদি আরবভিত্তিক রেড সি গেটওয়েকে নির্বাচিত করা হয়েছে। এখানে ট্রানজেকশন অ্যাডভাইজার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শর্ত নির্ধারণে তারা কাজ করছে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে এখন জাহাজকে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় না। হ্যান্ডলিং সরঞ্জাম ও কনটেইনার ইয়ার্ড বৃদ্ধি, চ্যানেলের নাব্য বৃদ্ধিসহ নানা উদ্যোগের কারণে এখন ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই জাহাজ বার্থিং পেয়ে যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে আসার পরপরই বার্থিং দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। প্রতিবেশী দেশকে ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট দিতে চট্টগ্রাম বন্দর শতভাগ প্রস্তুত বলে জানান তিনি। 

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম