ডায়াবেটিস রোগীরা রোজা রেখেও রক্তের সুগার পরিমাপ করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এক্ষেত্রে বিষয়টি চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুসারে প্রমাণিত এবং মুসলিম ধর্ম অনুসারে সেটা স্বীকৃতিও বলে জানিয়েছেন এন্ডোক্রাইনোলজিস্টরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ডিএমসি) মিলন অডিটোরিয়ামে ‘রমজানে ডায়বেটিস ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়।
হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের সার্বিক সহযোগিতায় ডিএমসির এন্ডোক্রাইন বিভাগ ও শিক্ষক সমিতির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত চিকিৎসকদের নির্দেশনামূলক এ সেমিনারে বক্তারা বলেন, এ বিষয়ে দেশের কেন্দ্রীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিব ও মিশরের কায়রোতে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ইসলামি চিন্তাবিদদের মতামত প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে তারা এর সপক্ষে ধর্মীয় যুক্তিগুলো উপস্থাপনের মাধ্যমে বলেছেন, রক্তে সুগারের পরিমাণ পরিমাপ করা যাবে। এক্ষেত্রে কোনো ধর্মীয় বাধা নেই। কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে এ বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করার আহ্বান জানিয়েছেন ডিএমসির এন্ডোক্রাইনোলজিস্টরা
ডিএমসির এন্ডোক্রাইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. ইন্দ্রজিৎ প্রসাদের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো শফিকুল আলম চৌধুরী, ডিএমসির এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এম সাইফউদ্দিন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. দেবেশ চন্দ্র তালুকদারসহ প্রায় সাতশ শিক্ষক, নার্স ও চিকিৎসক।
এ সময় বক্তারা বলেন, রোজা রাখতে ডায়বেটিস রোগীদের কোনো বাধা নেই। রোজা রাখার কারণে যে দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকা হয় কিংবা যে ফাস্টিং হয় তাতে ডায়াবেটিস রোগীদের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বিধায় এক্ষেত্রে নিয়মিত ডায়াবেটিস পরিমাপ করার বিষয়ে উৎসাহিত করেছেন এ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই জানে না যে তাদের ডায়াবেটিস রয়েছে। তথ্যমতে, এ দেশে প্রায় দেড় কোটি বা প্রতি ১৫ জনে একজন মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। তাই এ সময় নিশ্চিত চিকিৎসার সুযোগ পাওয়ার লক্ষ্যেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এন্ডোক্রাইন বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। তাছাড়া দেশের কেন্দ্রীয় এ হাসপাতালটির মেডিসিন ও শিশু বিভাগসহ সব বিভাগই বর্তমানে বিশেষ নজর দিয়ে ডায়বেটিস রোগের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। কেননা এখন সব বয়সের ডায়াবেটিস রোগী পাওয়া যাচ্ছে এবং রোগটি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েই চলছে।