আমাকে অনুরোধ করে রাখা হয়েছে: তাকসিম এ খান
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০২৩, ০৫:৫৪ পিএম
অনিয়ম-দুর্নীতি করে যুক্তরাষ্ট্রে ১৪টি বাড়ি কেনার অভিযোগ উঠার পর সংবাদ সম্মেলন করেছেন ঢাকা ওয়াসার বিতর্কিত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)। নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে নানা সময় অনিয়ম-দুর্নীতি ও বির্তক লেগেই আছে। তারপরও তিনি ১৪ বছর ধরে এমডি পদে বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে এসে তাকসিম এ খান বলেছেন, ‘ঢাকা ওয়াসার এমডি পদের চাকরি ছেড়ে দিতে চেয়েছি বহুবার। আমাকে অনুরোধ করে রাখা হয়েছে।’
রাজধানীর কারওয়ানবাজার ওয়াসা ভবনে সংবাদ সম্মেলন তাকসিম তার বিরুদ্ধে উঠা দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি সেখান (যুক্তরাষ্ট্র) থেকেই ওয়াসায় চাকরি করতে এসেছি। এমন নয় যে এখানে চাকরি করে আমার সম্পদ ওখানে গড়েছি। আমার স্ত্রী সেখানে সরকারি চাকরি করে। আমার সন্তানও সেখানে খুব ভালোমানের চাকরি করে। আমি যে ইনকাম করি, তা থেকে ওদের কিছুই দিতে হয় না। তারা ওখানে অনেক ভালো আছে; যে কারণে আমার স্ত্রীর নামে একটি অ্যাপার্টমেন্ট থাকা অস্বাভাবিক কিছু না। তবে রিপোর্টে যে ১৪টি বাড়ির কথা বলা হয়েছে তা পুরোপুরি অসত্য।’
২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার এমডি হিসাবে নিয়োগ পান প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। এরপর ধাপে ধাপে সময় বাড়িয়ে তিনি এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এর মধ্যে কেটে গেছে এক যুগেরও বেশি সময়।
ঢাকা ওয়াসার এমডি হিসেবে তাকসিম এ খান বিভিন্ন সময় আলোচিত এবং সমালোচিত হয়েছেন। ২০০৯ সাল থেকে ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে রয়েছেন তিনি। প্রথম নিয়োগের পর থেকে ছয়বার তার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। ঢাকায় অনেক এলাকায় ওয়াসার সরবরাহ করা পানি পানের অনুপযুক্ত হলেও তিনি দাবি করেন, ওয়াসার সরবরাহ করা পানি সুপেয় এবং তিনিও সেটি না ফুটিয়েই পান করেন। এরপর অনলাইন অ্যাকটিভিস্টরা তাকে জুরাইন এলাকায় সরবরাহ করা ওয়াসার পানির শরবত পান করাতে আসেন ওয়াসা ভবনে। কিন্তু তিনি সেদিন দেখা দেননি। পরে ওয়াসার এমডি পানির দাম বৃদ্ধি করার প্রস্তাব দেন সরকারের কাছে। ওই সময়ে তিনি বলেন, ওয়াসা এখনো ভিক্ষা করে বা সরকারের ভর্তুকিতে চলে। তাই পানির দাম বৃদ্ধি করে সে ভর্তুকি কমাতে চান। ওয়াসার কোনো আয় না থাকলেও নিজের এবং কর্মীদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর প্রস্তাবেও সমালোচিত হন তিনি।
এদিকে ২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার এমডি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ঢাকা ওয়াসা বোর্ড। সেখানে পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কাজের ২০ বছরের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলেও ঢাকা ওয়াসা বোর্ড প্রকৌশলী তাকসিম এ খানকে নিয়োগ দেয়। ওই সময়ে ঢাকা ওয়াসার বর্তমান এমডির এসব কাজের কোনো যোগ্যতা ছিল না। নিয়োগ প্রক্রিয়ার অস্বচ্ছতার অভিযোগ উঠায় সে সময় স্থানীয় সরকার বিভাগ ঢাকা ওয়াসা বোর্ডকে ভবিষ্যতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ কালে পরীক্ষা ও নম্বর প্রদানের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হওয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়। সে সময় ঢাকা ওয়াসা বোর্ড চেয়ারম্যান ছিলেন প্রকৌশলী ড. গোলাম মোস্তফা। বর্তমানেও তিনি ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।