
প্রিন্ট: ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০০ পিএম
রক্তে ভাসছে ফিলিস্তিন নির্বিকার ওআইসি
-67f584e06cedd.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন
গভীর সংকটে আজ ফিলিস্তিন। ফিলিস্তিনের সংকট নিরসনে ওআইসি গঠিত হলেও তাদের এই চরম দুর্দিনে সংস্থাটি চরমভাবে ব্যর্থ। সংকটের সমাধান দূরে থাকুক ফিলিস্তিনের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সক্ষমতাও দেখাতে পারছে না ওআইসি। নানাবিধ দুর্বলতায় সংস্থাটি প্রায় অকার্যকর। অথচ ১৯৬৯ সালে ৫৭টি মুসলিম দেশ নিয়ে গঠনকালে ফিলিস্তিনি সংকট নিরসনে তাদের ভূমিকা বেশ দৃশ্যমান ছিল। দিনে দিনে তা দুর্বল হয়েছে।
এই বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির মঙ্গলবার যুগান্তরকে বলেন, ফিলিস্তিন সংকট নিরসনে ওআইসির কোনো সক্ষমতা নেই। মুসলিম বিশ্বের দুই শক্তিশালী দেশ ইরান ও সৌদি আরব নিজেদের মধ্যে বিরোধে জড়িয়ে আছে। অনেক দেশ ট্রাম্পের রোষানলে পড়তে চাচ্ছে না। ওআইসির প্রভাবশালী দেশগুলো মনে করে, এই সংকট নিরসনে তাদের কর্মসূচি গ্রহণের কোনো সক্ষমতা নেই।
সাবেক রাষ্ট্রদূত এম শফিউল্লাহ বলেছেন, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রগঠন এবং জেরুজালেম পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে ওআইসি গঠিত হয়েছিল। প্রথম দিকে ভূমিকা পালন করলেও কালক্রমে সংস্থাটি এখন আরও ফিলিস্তিনের বিষয়ে কোনো ভূমিকা পালন করছে না। বিপদে-আপদেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে না। আজকে দুনিয়ায় ইসলামফোবিয়া দেখা দিয়েছে। ইসলাম ধর্ম মানেই খারাপ, ইসলাম মানেই সন্ত্রাসী-এই ইসলামফোবিয়া বন্ধেও ওআইসির কোনো ভূমিকা নেই।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিনে ৫০ হাজার নারী-শিশুকে হত্যা করেছে ইসরাইল। হাসপাতালে হামলা করছে। জাতিসংঘের শতাধিক কর্মী নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিনের এই চরম দুর্দিনেও ওআইসি নীরব। গাজাকে খালি করার জন্য নির্বিচারে হামলা করছে। এই সময়ে ওআইসির শীর্ষ সম্মেলন ডাকা উচিত ছিল। সেটা ডাকা হয়নি। কয়েকটি শক্তিশালী মুসলিম দেশ ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। এসবই খুব বেদনাদায়ক ঘটনা। মুসলিম বিশ্বের আজকে কোনো অভিভাবক নেই।
সাবেক রাষ্ট্রদূত নাসিমা হায়দার বলেছেন, আরব দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য নেই। ১৯৮১ সালে হেনরি কিসিঞ্জার এক লেখায় বলেছেন, ফিলিস্তিন স্বাধীন হোক সেটা আরব দেশগুলোই চায় না। কারণ আরব দেশগুলো মনে করে, ফিলিস্তিন স্বাধীন হলে দেশটি শিক্ষিত ও শক্তিশালী জাতিতে পরিণত হবে। আরব দেশগুলো তাদের পাশে এমন শক্তিশালী দেশ চায় না। তাই আরব দেশগুলো লিপ সার্ভিস দেয়। কার্যকর কিছু করে না। তাছাড়া, অনেক আরব দেশ যুক্তরাষ্ট্রের গভীর মিত্র হওয়ায় তারা মার্কিন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শক্তিশালীভাবে দাঁড়ায় না।
সাবেক রাষ্ট্রদূত আতিকুর রহমান বলেছেন, মুসলিম বিশ্বে ঐক্য নেই। তাছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে একচ্ছত্র অধিপতি। ফলে গোটা বিশ্ব বিরোধিতা করলেও ইসরাইল হামলা বন্ধ করছে না।
সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহফুজুর রহমান বলেছেন, ওআইসিসহ বহুপক্ষীয় সংস্থাগুলো ফিলিস্তিনের সংকট নিরসনে ব্যর্থ হয়েছে। ইয়াসির আরাফাতের মতো নেতা না থাকায় ফিলিস্তিনিরা খেলার ঘুঁটিতে পরিণত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কী করছে তাদের নিয়ে ফিলিস্তিনিরা নিজেরাই তা জানে না। ফিলিস্তিনিদের নিজেদের মধ্যেও বিভেদ আছে। হামাস একদিকে, ফাতাহ আন্দোলন আরেক দিকে। ইয়াসির আরাফাতের সময়ে সবাই এক ছাতার নিচে ছিলেন।