ট্রাম্পের ‘গাজা-পরিকল্পনা’ প্রত্যাখ্যান করে যা বলল হামাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ মার্চ ২০২৫, ০৭:০২ পিএম

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস গাজার জনগণকে বাস্তুচ্যুত করার যে কোনো প্রচেষ্টার বিরোধিতা করার এবং গাজা পুনর্গঠনে যে কোনো উদ্যোগের সঙ্গে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে বলে পুনরায় নিশ্চিত করেছে।
একইসঙ্গে সংগঠনটি আসন্ন আরব সম্মেলনে অংশ নিতে যাওয়া নেতাদের এ ধরনের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে।
হামাসের নেতৃত্ব পরিষদের প্রধান মোহাম্মদ দারবিশ কায়রোতে অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন সম্মেলনে পাঠানো এক বার্তায় এসব কথা বলেন।
তার ভাষায়, ‘আমরা যে কোনো উদ্যোগের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। যা আমাদের জনগণকে গাজা থেকে বাস্তুচ্যুতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করবে এবং গাজার পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখবে—ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার এবং বিশেষ করে দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের অবিচ্ছেদ্য অধিকারকে ক্ষুণ্ন না করে’।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে মোহাম্মদ দারবিশ বলেন, ‘হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তির বাকি ধাপগুলো সম্পন্ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা হবে একটি পূর্ণাঙ্গ ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, গাজা থেকে ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, গাজার পুনর্গঠন এবং অবরোধ প্রত্যাহারের দিকে এগিয়ে যাবে’।
হামাস নেতা জোর দিয়ে বলেন, ‘যুদ্ধ-পরবর্তী গাজার ভবিষ্যৎ অবশ্যই পুরোপুরি ফিলিস্তিনিদের হাতে থাকতে হবে। যা জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে হবে এবং আরব অংশীদারদের দ্বারা সমর্থিত হবে’।
দারবিশ আরও উল্লেখ করেন, হামাস এমন যে কোনো ফিলিস্তিনি ঐক্যমত্যভিত্তিক সমাধানে অংশ নিতে প্রস্তুত, যা হয় প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত একটি জাতীয় ঐক্য সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অথবা মিসরের প্রস্তাবিত ‘সামাজিক সহায়তা কমিটি’র মাধ্যমে গাজার প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার ভিত্তিতে হতে পারে।
হামাসের নেতৃত্ব পরিষদের প্রধান জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা গাজায় কোনো অ-ফিলিস্তিনি প্রশাসনিক ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার বা বিদেশি বাহিনীর উপস্থিতির যে কোনো প্রচেষ্টা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করি’।
এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, তিনি গাজা উপত্যকা ‘দখল’ করে একে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেইরা’ বা বিলাসবহুল নগরী বানাতে চান।
তার এই প্রস্তাবনাটি তার সমর্থকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ালেও, হামাস ও আরব বিশ্বের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে।
গাজা দখল নিয়ে ট্রাম্পের প্রস্তাবকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করে হামাস। সংগঠনটি এক বিবৃতিতে জানায়, গাজা এমন কোনো সম্পত্তি নয়, যা কেনা-বেচা করা যায় এবং এটি আমাদের ফিলিস্তিনি ভূমির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
হামাসের মুখপাত্র বলেন, একজন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীর মানসিকতা নিয়ে ফিলিস্তিনি সমস্যা মোকাবিলা করা ব্যর্থতার একটি রেসিপি। ফিলিস্তিনি জনগণ তাদের বাস্তুচ্যুতি ও নির্বাসন পরিকল্পনা ব্যর্থ করবে।
এদিকে হিজবুল্লাহ নেতা নাইম কাসেম বলেছেন, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় ১৫ মাসব্যাপী নৃশংস যুদ্ধ চালিয়েছে। এরপরও যুক্তরাষ্ট্র তাদের উদ্দেশ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। এখন নতুন করে ট্রাম্পের অবস্থান একটি ‘রাজনৈতিক গণহত্যা’ উপস্থাপন করে।সূত্র: মেহের নিউজ