Logo
Logo
×

জাতীয়

দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদকের দায়িত্ব নিলেন কবি আবদুল হাই শিকদার

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৫৪ পিএম

দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদকের দায়িত্ব নিলেন কবি আবদুল হাই শিকদার

দেশের শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক হিসেবে যোগদান করেছেন কবি, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে যুগান্তর কার্যালয়ে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। 

এ সময় যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও যুগান্তরের প্রকাশক অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম, যমুনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম ইসলাম, গ্রুপ পরিচালক মনিকা নাজনীন ইসলাম, সুমাইয়া রোজালিন ইসলাম ও এস এম আবদুল ওয়াদুদ তাকে স্বাগত জানান।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন যমুনা টেলিভিশনের সিইও ফাহিম আহমেদ, দৈনিক যুগান্তরের উপসম্পাদক-আহমেদ দীপু, এহসানুল হক বাবু, বিএম জাহাঙ্গীর ও আসিফ রশীদ, প্রধান বার্তা-সম্পাদক আবদুর রহমান, নগর সম্পাদক মিজান মালিক, প্রধান প্রতিবেদক মাসুদ করিম প্রমুখ। এ সময় যুগান্তরের সব বিভাগীয় প্রধান ও সিনিয়র সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। 

এর আগে সকালে আবদুল হাই শিকদার বনানী কবরস্থানে যমুনা গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং মোনাজাতের মাধ্যমে মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। আবদুল হাই শিকদার পত্রিকাটির সদ্যবিদায়ী সম্পাদক সাইফুল আলমের স্থলাভিষিক্ত হলেন। 

কবি আবদুল হাই শিকদার বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও সংগঠক হিসেবে পরিচিত। জাতীয় প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির অন্যতম সদস্য। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) নির্বাচিত দুবারের সভাপতি। ৪৪ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে তিনি স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের প্রথম নিয়মিত সাহিত্য মাসিক ‘এখন’-এর প্রতিষ্ঠাতা ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, আমার দেশ পত্রিকার সিনিয়র সহকারী সম্পাদক, দেশের সরকারি বার্তা সংস্থা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ফিচার বিভাগ প্রধান, দৈনিক ইনকিলাবের ফিচার সম্পাদক ও সহকারী সম্পাদক, টাইমস বাংলা ট্রাস্টের ম্যাগাজিন ‘বিচিত্রা’ এর সিনিয়র সহকারী সম্পাদক, দৈনিক মিল্লাত পত্রিকার সহকারী সম্পাদক ও সাহিত্য সম্পাদক, সাপ্তাহিক সচিত্র স্বদেশ এর সহকারী সম্পাদক, সিনিয়র সহ-সম্পাদক এবং প্রতিবেদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এছাড়া তিনি প্রথিতযশা কলামিস্ট হিসেবেও পরিচিত। ক্ষমতাচ্যুৎ আওয়ামী লীগ সরকারের রোষানলে পড়ে বিগত ১৫ বছর সাংবাদিকতার বাইরে থাকতে বাধ্য হন আবদুল হাই শিকদার।

সাংবাদিকতার পাশাপাশি আবদুল হাই শিকদার দেশে-বিদেশে কবি, সাহিত্যিক ও নজরুল গবেষক হিসেবে পরিচিত। নজরুল ইন্সটিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ছিলেন তিনি। টিভি উপস্থাপক ও দেশের সমসাময়িক অনুষ্ঠানের জনপ্রিয় আলোচক। এছাড়া তিনি অধ্যাপক, শিশু-সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক সংগঠক ও গল্পকার। কবিতা, গবেষণা, শিশু-সাহিত্য, গল্প, রাজনীতি, সংস্কৃতি, চলচ্চিত্র, ভ্রমণ ইত্যাদি বিষয়ে তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা দেড় শতাধিক। 

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকায় ছিলেন আবদুল হাই শিকদার। স্বৈরশাসন ও ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামে সাংবাদিক নেতা হিসেবে গত ১৫ বছর ধরে রাজপথে সভা সমাবেশে প্রতিবাদমুখর ছিলেন তিনি। ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম তার সেই অনবদ্য সংগ্রামের সাক্ষী হয়ে আছে। অনিয়ম, দুর্নীতি, গুম, খুনের বিরুদ্ধে রাজপথে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ায় তাকে ও তার পরিবারকে সহ্য করতে হয়েছে নির্মম নির্যাতন। 

কবি আবদুল হাই শিকদারের প্রকাশিত গন্থগুলোর মধ্যে আশি লক্ষ ভোর, ইবাদতগুলি প্রার্থনাগুলি, রেলিং ধরা নদী, এই বধ্যভূমি একদিন স্বদেশ ছিলো, নির্বাচিত প্রেমের কবিতা, জাতীয় কবি ও শহীদ জিয়া, রবীন্দ্রনাথ এবং নজরুল, কে সিরাজদৌলা কে মীরজাফর, কিশোর মওলানা ভাসানী, আমরা মানুষ আমরা এসেছি, ফকিরনী জমিলা সমীপে প্রেম উস্থাপনের বয়ান, বাংলাদেশের পথ, জানা অজানা মওলানা ভাসানী, ঢাকার ভবিষ্যৎ- বাংলাদেশের শত্রুভাগ, হারিয়ে যাওয়া হায়দারাবাদ, যদি আল মাহমুদ নোবেল পুরস্কার পেয়ে যান, ইউনূসবধ কাব্য: বাই এ্যান এক্সপার্ট প্রাইম মিনিস্টার, হুমায়ুন তীর্থ: নুহাশপল্লী বাংলাদেশ ডটকম, পলাশী ট্রাজেডীর ২৩৪ বছর পর সিরাজদৌলা মুর্শিদাবাদ, সার্বজনীন নজরুল, খালেদা জিয়া তৃতীয় বিশ্বের কণ্ঠস্বর, তারেক রহমান: অপেক্ষায় বাংলাদেশ, যে নামে ডাকেননি কেউ, কবিতীর্থ চুরুলিয়া, তারেক ও বাংলাদেশ, শুকুর মামুদের চুয়াত্তর ঘাট, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসের এক অধ্যায় অন্যতম।

কবি আবদুল হাই শিকদার সাংবাদিকতা ও সাহিত্যের ওপর পঞ্চাশের বেশি সম্মাননা পদক লাভ করেন। এসবের মধ্যে গ্লাসগো বেঙ্গলি পারফরমিং আর্টস সম্মাননা, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, সেন্টার ফর ন্যাশনাল কালচার (সিএনসি) সম্মাননা, জাতীয় প্রেস ক্লাব ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) সম্মাননা, হিউম্যান রাইটস অ্যাওয়ার্ড, চুরুলিয়া নজরুল একাডেমী পুরস্কার (ভারত), জিরো পয়েন্ট সম্মাননা (ভারত), নতুন গতি সাহিত্য পুরস্কার (ভারত), শহীদ জিয়া স্মৃতি পুরস্কার, নজরুল সম্মাননা, নাঙ্গলকোট, কিশোরকণ্ঠ সাহিত্য পুরস্কার, জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম জন্মশত বার্ষিকী সংবর্ধনা পদক, ভাসানী সনদ, রংপুর নাগরিক সংবর্ধনা পদক, বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম সম্মাননা উল্লেখযোগ্য।

কবি আবদুল হাই শিকদারের জন্ম ১৯৫৭ সালের ১ জানুয়ারি। কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দক্ষিণ ছাট গোপালপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা কৃষিবিদ ওয়াজেদ আলী ও মাতা হালিমা খাতুন। তার সহধর্মিণীর নাম আবিদা শিকদার। পারিবারিক জীবনে আবদুল হাই শিকদার দুই সন্তানের জনক। পুত্র পরম ওয়াজেদ ও মেয়ে প্রকৃতি ওয়াজেদ শিকদার। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম