গণতন্ত্রের জন্য গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অপরিহার্য: টিআইবি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:৪৫ পিএম
গণমাধ্যম ও বাক্-স্বাধীনতা নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন পরস্পরের পরিপূরক। উন্নয়নকে অর্থবহ করতে হলে গণতন্ত্র অপরিহার্য। আর গণতন্ত্রের জন্য গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অপরিহার্য। কোনো বিরুদ্ধ মত দমনের মাধ্যমে কখনো কোনো উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী রাষ্ট্র গড়ে উঠতে পারে না।
তারা বলেন, মানুষের মৌলিক অধিকারের অন্যতম হাতিয়ার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা। সরকারকে জবাবদিহি করার জন্য যেসব অরাষ্ট্রীয় শক্তি আছে, তার মধ্যে শীর্ষে গণমাধ্যম।
আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষ্যে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে টিআইবির পক্ষ থেকে দুর্নীতিবিরোধী অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার, ২০২৩ তুলে দেওয়া হয়। এবার আঞ্চলিক সংবাদপত্র বিভাগে বিজয়ী হয়েছেন চট্টগ্রামের একুশে ডটকমের প্রধান প্রতিবেদক শরীফুল ইসলাম, জাতীয় সংবাদপত্র বিভাগে দৈনিক কালের কণ্ঠের সাভার প্রতিনিধি জাহিদ হাসান, টেলিভিশন বিভাগে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক হাসান মিসবাহ।
এ ছাড়া টেলিভিশনের প্রামাণ্য অনুষ্ঠান বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের প্রামাণ্য অনুষ্ঠান ‘তালাশ’।
এ বছর টিআইবির অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কারের জন্য সর্বমোট ৫৪টি প্রতিবেদন জমা হয়। যার মধ্যে আঞ্চলিক সংবাদপত্র বিভাগে ১১টি, জাতীয় সংবাদপত্র বিভাগে ৩০টি, টেলিভিশন বিভাগে ৯টি এবং প্রামাণ্য অনুষ্ঠান বিভাগে ৪টি প্রতিবেদন জমা হয়। এবার বিচারকদের মূল্যায়নে যে তিনজন বিজয়ী হয়েছেন তাদের প্রত্যেককে সম্মাননাপত্র, ক্রেস্ট ও এক লক্ষ ২৫ হাজার টাকা পুরস্কার প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, বাস্তবে উন্নয়নকে যদি জনগণের জন্য, জনস্বার্থে অর্থবহ করতে হয়, তাহলে গণতন্ত্র অপরিহার্য। আর গণতন্ত্র নিশ্চিত করে মানুষের বাক্-স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, এর মাধ্যমে বাস্তব উন্নয়ন অর্থবহ করা যায়। গণতন্ত্রের জন্য গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অপরিহার্য।
অনুষ্ঠানে সভাপতি ছিলেন টিআইবির চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল। তিনি বলেন, কেউ বলছেন জিরো টলারেন্স থেকে এখন সহনশীল হয়ে গেছে। আমি এর সঙ্গে যোগ করতে চাই, শুধু সহনশীল নয়, প্রশ্রয় দেওয়া হয়। শুধু যে সহ্য করা হচ্ছে দুর্নীতি, শুধু যে সহ্য করা হচ্ছে মানবাধিকারের লঙ্ঘন, শুধু যে সহ্য করা হচ্ছে অন্যায়-অবিচার-অনাচার, তা নয়, আশ্রয়ও দেওয়া হচ্ছে। সহ্যের থেকে সীমা আরেকটু অতিক্রান্ত হয়ে গেছে।
আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টিআইবির সহ-সমন্বয়ক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগ) জাফর সাদিক। তিনি বলেন, বাক্স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য আইন হচ্ছে না, আইন হচ্ছে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। বাক্, মত ও চিন্তার স্বাধীনতার বিকল্প শুধু এর পূর্ণ স্বাধীনতাই হতে পারে। কোনো বিরুদ্ধ মত দমনের মাধ্যমে কখনোই কোনো উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী রাষ্ট্র গড়ে উঠতে পারে না। বাক্, মত ও চিন্তার শর্তহীন স্বাধীনতা নিশ্চিতে সাংবাদিক, নাগরিক সমাজসহ সরকার, রাষ্ট্রসংশ্লিষ্ট সবার যা যা করণীয় দরকার, তাই করতে হবে।