
শুক্রবার ছুটির দিনে শেষ হচ্ছে এ বছরের অমর একুশে বইমেলা। আজ মেলায় থাকবে জনস্রোত। বেলা ১১টায় শুরু হয়ে চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। শেষ দিনের মেলায় বইয়ের বিক্রি নিয়ে খুব আশাবাদী সবাই। পরিবার-পরিজন নিয়েও সবাই আসবেন। সকালে মেলায় থাকবে শিশুপ্রহর। বেলা ১১টায় শুরু হয়ে শিশুপ্রহর চলবে দুপুর ১টা পর্যন্ত।
আজ বিকাল ৫টায় সমাপনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৫’-এর সদস্য সচিব ড. সরকার আমিন। প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সচিবের রুটিন দায়িত্ব) মো. মফিদুর রহমান।
অনুষ্ঠানে কবি জসীমউদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার ২০২৫, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪, চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার, রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার এবং শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক।
শেষ দিনের বইমেলার আমেজ শুরু হয়েছিল বৃহস্পতিবার থেকেই। বিকালের পর থেকেই অনেক পাঠক এসেছেন। তারা বই কিনেছেন। এদিন মূলত বই সংগ্রহ করতেই পাঠকরা এসেছিলেন। তারা নিজেদের পছন্দের নানা বই সংগ্রহ করেছেন।
বিকালে বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘একটি অভ্যুত্থানের জন্ম ও আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রেজাউল করিম রনি। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সৈয়দ নিজার। সভাপতিত্ব করেন কাজী মারুফ।
প্রাবন্ধিক বলেন, ইতিহাসে অনেক আন্দোলনকেই খুব গৌরবের সঙ্গে স্মরণ করা হয়। তেমনই আমাদের দেশের সাম্প্রতিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থান গোটা জাতির জন্য নতুন অভিজ্ঞতার জন্ম দিয়েছে। একটি প্রজন্মের ঐতিহাসিক কর্তাসত্তা হিসাবে আত্মপ্রকাশের অভ্যুত্থান ছিল এটি।
অত্যাচার, লুটপাট ও অনাচার সমাজের সব শ্রেণির মানুষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ তৈরি করে আসছিল। যার ফলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন পরিণত হয় রাজনৈতিক মুক্তির সংগ্রামে। নাগরিক অধিকারভিত্তিক একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া এই আন্দোলনের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের আর কোনো পথ আমাদের সামনে খোলা নেই।
সভাপতির বক্তব্যে কাজী মারুফ বলেন, চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের একটি বহুত্ববাদী রূপ রয়েছে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তাদের ভিন্ন আকাক্সক্ষা, ভিন্ন স্বপ্ন নিয়ে এই অভ্যুত্থানে শামিল হয়েছিলেন। ফলে মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে ছাপিয়ে চব্বিশের আন্দোলন নিজেই একটি আলাদা সত্তা হয়ে উঠেছে।
‘লেখক বলছি’ মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি সায়ীদ আবুবকর, কবি মিতা আলী এবং কবি, সম্পাদক ও শিশুসাহিত্যিক জামসেদ ওয়াজেদ।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি মনজুর রহমান, রফিক হাসান, জান্নাতুল ফেরদৌসী, শোয়াইব আহমদ, ফেরদৌস আরা রুমী, নাইমা হোসেন, ড. নাইমা খানম, এনামুল হক জুয়েল ও আমিরুল মুমিনিন মানিক। বৃহস্পতিবার ছিল মিজানুর রহমানের পরিচালনায় ‘লেমন নৃত্যকলা একাডেমির পরিবেশনা।
সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী ছন্দা চক্রবর্তী, ইমরান খন্দকার, নাসরিন বেগম, আফসানা রুনা, মো. আনিসুজ্জামান, সুস্মিতা সেন চৌধুরী, আফরিদা জাহিন জয়িতা, শাহীন আলম, ডলি মণ্ডল, শফি উদ্দিন ও দিতি সরকার।