একুশের বইমেলা
শেষ সময়ে বই বিক্রি বাড়বে, আশা প্রকাশকদের

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:১৭ এএম

অমর একুশে বইমেলা এখন একেবারেই শেষ সময়ে চলে এসেছে। আর মাত্র চার দিন পরই শেষ হবে মাসব্যাপী বইয়ের উৎসব। শেষ সময়ে মেলায় প্রতিদিনই অসংখ্য পাঠকের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে। প্রকাশকরা আশা করছেন বইয়ের বিক্রিও শেষ সময়ে বাড়বে।
ঐতিহ্য প্রকাশনীর ম্যানেজার আমজাদ হোসেন কাজল যুগান্তরকে বলেন, বইমেলায় এবার শুরু থেকেই অনেক পাঠকের সমাগম ছিল। সে ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে। ঐতিহ্য বইমেলা উপলক্ষ্যে অনেক নতুন বই প্রকাশ করেছে। বইয়ের বিক্রিও ভালো।
বইমেলায় এবার অনেক প্রকাশনা সংস্থা প্রথমবারের মতো অংশ নিয়েছে। এমন প্রকাশকরা জানিয়েছেন, বইমেলায় তারা প্রথমবার অংশ নিলেও আশানুরূপ বই বিক্রি করতে পারেননি।
বইমেলায় অনেক বছর ধরে নিয়মিত অংশ নিচ্ছে বলাকা প্রকাশন। এর প্রকাশক শরীফা বুলবুল বলেন, এবার দর্শনার্থীর অনেক বেশি কিন্তু বইয়ের ক্রেতা কম। গত শুক্র ও শনিবার মেলায় প্রচুর লোক সমাগম হলেও ক্রেতা কম ছিল। তার ওপর বৃষ্টিও বিক্রিতে বিঘ্ন ঘটিয়েছে। আমরা আশা করছি, যে কদিন আছে সে কদিন বইয়ের প্রকৃত পাঠকরা আসবেন। বই কিনবেন, প্রিয়জনকে উপহার দেবেন।
কথা প্রকাশের ব্যবস্থাপক বলেন, গত কয়েক দিন থেকে বিক্রি মোটামুটি ভালো বলা যায়। বিশেষ করে শনিবার থেকে পাঠকের সাড়া পাচ্ছি।
বিকালে বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘জন-আকাঙ্খার নাট্যকলা-যাত্রা : ঐতিহ্যের পরম্পরায় জাতীয়তাবাদী শিল্পরীতি এবং অমলেন্দু বিশ্বাস’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।
এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাইদুর রহমান লিপন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন শাহমান মৈশান। সভাপতিত্ব করেন মিলনকান্তি দে।
প্রাবন্ধিক বলেন, বাংলাদেশের স্থানীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত রীতি-পদ্ধতির সর্বাধিক জনসম্পৃক্ত একটি নাট্যধারা-যাত্রা। বিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে যাত্রা শিল্পের জগতে স্বদেশীয় রাজনীতি ও দ্রোহচেতনার বিস্তারে অগ্রদূতের ভূমিকা পালন করেন অমলেন্দু বিশ্বাস।
তার অভিনয় জীবনের প্রারম্ভে রয়েছে নগরকেন্দ্রিক শিক্ষিত মধ্যবিত্ত পরিমণ্ডলে দীর্ঘ এগারো বছরের আধুনিক থিয়েটার চর্চার অভিজ্ঞতা। আধুনিক নাট্যচর্চার জ্ঞানতাত্ত্বিক ও সাংগঠনিক পরিসরেও ছিল তার নিবিড় যোগাযোগ। তিনি বাংলাদেশের যাত্রাশিল্পে পশ্চিমবঙ্গের মুখাপেক্ষিতা থেকে বের হয়ে দেশীয় নাট্যকারদের দিয়ে নাটলিপি রচনার উদ্যোগ গ্রহণে যাত্রাদলের মালিক ও পরিচালকদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছিলেন। আজীবন তিনি দেশ ও সমাজসংস্কারে যাত্রাশিল্পকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে মিলনকান্তি দে বলেন, যাত্রাশিল্পের মানসপুত্র হিসাবে অভিহিত করা যায় অমলেন্দু বিশ্বাসকে। তার শিল্পচেতনায় ছিল লোকজ আঙ্গিকের সঙ্গে আধুনিক নাট্যরীতির সমন্বয় ঘটানোর প্রয়াস। তার অভিনয়, যাত্রা দর্শন ও চিন্তাচেতনা গভীরতর গবেষণার দাবি রাখে।
লেখক বলছি মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি শাহীন রেজা, কবি এজাজ ইউসুফী এবং কবি শোভা চৌধুরী। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি ফাতিমা তামান্না, টোকনঠাকুর এবং রশিদ কামাল। আবৃত্তি পরিবেশন করেন মাহবুব মুকুল এবং নূরুল হাসনাত জিলান।
সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী আহমেদ শাকিল হাসমী, মো. ইকবাল হোসেন, শাহ আল চৌধুরী মিন্টু, বিমল দাস, দিপা আফ্রিদি, রোমানা আক্তার, খালেদা বেগম, রাতুল শাহ, শেলী চন্দ, আঞ্জুমান আরা শিমুল, খালেদ মাহমুদ মুন্না, আজমা সুরাইয়া শিল্পী, নাফিসা ইসলাম ফাইজা।